নভেল করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় রয়েছে চীন।
শিল্প খাতের উৎপাদন, আমদানি ও রফতানি বাড়াতে মরিয়া দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির দেশটি।
কিন্তু করোনার ভয়াবহ প্রভাব থেকে যেন বেরই হতে পারছে না দেশটির শিল্প খাত।
কারখানাগুলোর উৎপাদনে স্থবিরতা বিরাজ করছে।
গতি আসছে না খুচরা বিক্রি ও বিনিয়োগেও।
খবর রয়টার্স।
কভিড-১৯-এর উত্পত্তিস্থল হিসেবে অর্থনীতির প্রথম ধাক্কাটা পড়ে চীনের ওপর।
গত বছরের শুরুর দিকে নাস্তানাবুদ হয় দেশটির অর্থনীতি।
কিন্তু ক্রমে পরিস্থিতি সামাল দিতে থাকে বেইজিং।
চলতি বছরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে শিল্প খাত।
দেশটির ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের তথ্য বলছে, গত মে মাসে চীনের শিল্প-কারখানাগুলোর উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
কিন্তু আগের মাস অর্থাৎ এপ্রিলের তুলনায় উৎপাদনের এ গতি বেশ ধীর।
ওই মাসে উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছিল।
অন্যদিকে খুচরা বিক্রি ও বিনিয়োগও প্রত্যাশা অনুযায়ী হচ্ছে না।
এ খাতে প্রবৃদ্ধি খুব শ্লথ।
আশা জাগাতে পারছে না রফতানি খাতও।
বিশেষ করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় গোয়াংডং প্রদেশের নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে থাকায় শিল্প খাতে তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।
রফতানি খাতের পাওয়ার হাউজ হিসেবে পরিচিত গোয়াংডং।
ফলে এখানকার সংক্রমণ পরিস্থিতির ওপর এখন দেশটির শিল্প খাতের দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানো নির্ভর করছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে শিল্প খাতের মধ্যে মে মাসে কেবল গাড়ির উৎপাদনই আগের বছরের তুলনায় কমেছে ৪ শতাংশ।
যেখানে এর আগের মাসে উৎপাদন বেড়েছিল ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
মূলত বৈশ্বিক চিপ সংকটের কারণে খাতটির মন্দা অবস্থা তৈরি হয়েছে।
তবে অধিকাংশ বিশ্লেষক মনে করছেন, ক্রয়াদেশ কমে যাওয়া, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর বিধিনিষেধ চীনের শিল্প খাতের নেতিবাচক প্রভাবের জন্য দায়ী।
এ অবস্থায় খাতসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সর্তক করে বলছেন, অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ চাহিদায় ধীরগতি, কাঁচামালের দাম বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়ায় শিল্প খাতের ওপর চাপ সহসাই কাটবে না।
এদিকে চীনের অর্থনীতিতে গতি না এলেও ঘুরে দাঁড়াচ্ছে এশিয়ার রফতানিনির্ভর দেশগুলো।
গত বছর দেশটির দ্রুত অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও চলতি বছরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক গতির প্রভাব পড়েছে এসব দেশের ওপর।
বিশেষ করে এ অঞ্চলের মধ্যে জাপানের অর্থনীতি দ্রুত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
সরকারি তথ্য বলছে, চার দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে গত মাসে রেকর্ড রফতানি করতে সক্ষম হয়েছে জাপান।
রফতানি বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
