সম্প্রসারিত হচ্ছে সুন্দরবন, বেড়েছে বাঘের সংখ্যাও —প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সুন্দরবন সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাঘের সংখ্যাও বেড়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদের টেবিলে উত্থাপিত এক প্রশ্নোত্তরে প্রধানমন্ত্রী তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতেই প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।

সংরক্ষিত আসনের সুলতানা নাদিরার প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে ২০১৫ সালে বাঘশুমারি অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬। ২০১৮ সালের শুমারিতে এর সংখ্যা ১১৪ পাওয়া গেছে। সুন্দরবনের কার্বন মজুদের পরিমাণ ২০০৯ সালের ১০ কোটি ৬০ লাখ থেকে বেড়ে ২০১৯ সালে ১৩ কোটি ৯০ লাখ টন হয়েছে।

সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান সরকার সুন্দরবন এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার বিষয়ে সবসময় আন্তরিক বদ্ধপরিকর। দেশের উন্নয়নে যে পদক্ষেপই নেয়া হোক না কেন, এটির জীববৈচিত্র্য যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেটি গুরুত্ব পায়। সুন্দরবনের আয়তন বাড়ানোর জন্য সরকার কৃত্রিম ম্যানগ্রোভ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে। সমগ্র উপকূলীয় অঞ্চলে এর বিস্তৃতি ঘটানোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সুন্দরবনের বৃক্ষ বন্যপ্রাণী রক্ষাসহ বন অপরাধ দমনের জন্য স্মার্ট প্যাট্রোলিংসহ নানা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বর্তমানে সুন্দরবনের প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকা অভয়ারণ্যের অন্তর্ভুক্ত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, জীববৈচিত্র্যের আধার সুন্দরবনে এখন ৩৩৪ প্রজাতির উদ্ভিদ, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল, ১৩ প্রজাতির অর্কিড ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণী পাওয়া যায়। বন্যপ্রাণীর মধ্যে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, আট প্রজাতির উভচর, ৩১৫ প্রজাতির পাখি, ২১০ প্রজাতির মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে। সুন্দরবনের গাছপালা বন্যপ্রাণিকুলকে রক্ষার জন্য বনকর্মীদের যুগোপযোগী করে তোলার পাশাপাশি তাদের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার কথাও জানান সরকারপ্রধান।

লক্ষ্মীপুর- আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজধানী ঢাকাসহ দেশের যেসব স্থানে অবস্থান করে স্বাধীনতা সংগ্রাম বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সেসব স্থান বিশেষভাবে সংরক্ষণের জন্য বর্তমান সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঐতিহাসিক মার্চের ভাষণের স্মরণে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হবে। এরই মধ্যে ১৫০ ফুট উঁচু গ্লাস টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে। যশোরের রাজগঞ্জ বাজারে ফরিদপুরের অম্বিকা ময়দানে বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। ঢাকার মিন্টো রোড আব্দুল গণি রোডের যে ভবনগুলোতে বঙ্গবন্ধুর অবস্থান ছিল, সেগুলো সংরক্ষণের আইনানুগ কার্যক্রম চলছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের গণমাধ্যমকে সব ধরনের সহায়তা দেয়ার মাধ্যমে সমাজে মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রেখেছে। প্রিন্ট ইলেকট্রনিকদুধরনের গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা তাদের নিজেদের কর্মস্থলে চাকরির অনিশ্চয়তায় ভোগেন। এটা স্বাধীন গণমাধ্যমের জন্য হুমকি। তাদের চাকরির অনিশ্চয়তা দূর করতে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয় গণমাধ্যমকর্মী (চাকরির শর্তাবলি) আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে, যা বর্তমানে অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন