দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে গতকাল সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। নতুন শনাক্ত হয়েছে তিন হাজারেরও বেশি। এর আগে গত ৯ মে সর্বোচ্চ ৫৬ জনের মৃত্যু হয়। পরীক্ষার বিপরীতে গতকাল শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এর আগের দিন রোববার এ হার ছিল ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ। মৃত্যু হয় ৪৭ জনের। সে হিসাবে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশে শনাক্তের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা দুটিই বেড়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গতকাল বিকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। যেখানে বলা হয়, রোববার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত অ্যান্টিজেন ও আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে ২০ হাজার ৬০২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। যার বিপরীতে ৩ হাজার ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছে ৮ লাখ ২৯ হাজার ৯৭২ জন। এর আগে রোববার ২ হাজার ৪৩৬ জন ও আগের দিন ১ হাজার ৬৩৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫৪ জনের মধ্যে ৩৯ জন পুরুষ ও ১৫ জন নারী। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে তাদের মধ্যে একজনের বয়স ১১-২০ বছরের মধ্যে, একজন ২১-৩০ বছরের মধ্যে, পাঁচজন ৩১-৪০ বছরের মধ্যে, ১৪ জন ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ও ষাটোর্ধ্ব ২৭ জন। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ৫৬৪ জন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩০ জন। মোট শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯২ দশমিক ৬৩ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আর সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৬১ লাখ ৯৫ হাজার ৭১৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
এদিকে গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি একজনের ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৪৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি প্রথমে করোনা থেকে সেরে ওঠেন। পরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে এক সপ্তাহ আগে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হন। তিনি এক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে তার কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। মাথাব্যথা, ডান চোখে সমস্যা, সাইনোসাইটিস, মুখের এক পাশে ফুলে যাওয়া এবং নাক দিয়ে ঠিকমতো বাতাস নিতে পারছিলেন না। এসব উপসর্গ দেখে চিকিৎসকরা ফাঙ্গাল ইনফেকশন সন্দেহ করেন।
পরে তার চিকিৎসায় মেডিসিন ও নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির শরীর থেকে ফাঙ্গাস অপসারণ করা হয়। এরপর নমুনার হিস্ট্রোপ্যাথলজি, মাইক্রোস্কপি ও কালচার পরীক্ষা করে তিনটাতেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বণিক বার্তাকে বলেন, এমন একজন রোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস দেশে আগেও ছিল। এটা নতুন কিছু নয়। কারো আতঙ্কিত হওয়ার প্রয়োজন নেই।
