বেনাপোলে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরি

কাস্টম হাউজের কর্মকর্তাসহ ৭ জনের নামে চার্জশিট

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

যশোরের বেনাপোল কাস্টম হাউজের ভল্ট থেকে ২০ কেজি স্বর্ণ চুরির মামলায় সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা, ভল্ট ইনচার্জসহ সাতজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে সিআইডি পুলিশ। গতকাল মামলার তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম।

অভিযুক্তরা হলেন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দীর বাঁধুলী খালপাড়া গ্রামের মৃত জালাল সরদারের ছেলে কাস্টম হাউজের সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার, খুলনার বটিয়াঘাটার জয়পুর গ্রামের রণজিৎ কুণ্ডুর ছেলে সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ভল্ট ইনচার্জ বিশ্বনাথ কুণ্ডু, বরিশালের আগৈলঝাড়ার চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ভল্ট ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম মৃধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার চারুয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ভল্ট ইনচার্জ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ, বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জের অম্বিকাপুর গ্রামের মৃত আজিজুল হকের ছেলে সাবেক সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ভল্ট ইনচার্জ আরশাদ হোসাইন, খুলনার তেরখাদার বারাসাত গ্রামের মৃত আতিয়ার রহমান মল্লিকের ছেলে বেনাপোল কাস্টমসের বেসরকারি কর্মী আজিবার রহমান মল্লিক বেনাপোলের ভবেরবেড় পশ্চিমপাড়া গ্রামের আব্দুল জলিল শেখের ছেলে শাকিল শেখ।

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের নভেম্বর রাত ৮টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যেকোনো সময়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার গুদামের তালা ভেঙে দুর্বৃত্তরা ভেতরে গিয়ে ভল্টের তালা খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক গ্রাম স্বর্ণ চুরি করে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ভল্টের চাবি তত্কালীন ভল্ট ইনচার্জ শাহিবুলের কাছে থাকত। এছাড়া গুদামের অন্যান্য লকারে স্বর্ণসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিল। সেগুলো অক্ষত ছিল। ঘটনার সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিল।

ভল্ট থেকে স্বর্ণ চুরির বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে বেনাপোল বন্দর থানায় চুরির মামলা করেন। একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষ গুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ভল্ট ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। সর্বশেষ সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম আটক আসামিদের দেয়া তথ্য সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই সাতজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন। চার্জশিটে সব আসামিকে আটক দেখানো হয়েছে।

সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সঙ্গে কাস্টমস কর্মকর্তারা সরাসরি জড়িত এবং ব্যাপারে জোরালো তথ্য-প্রমাণও আমাদের হাতে আছে। কারণেই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা হয়েছে।

জানা যায়, বেনাপোল বন্দরে চোরাচালানকারীদের কাছ থেকে জব্দ করা স্বর্ণসহ মূল্যবান সম্পদ জমা রাখা হয় কাস্টম হাউজের ভল্টে। সেখান থেকেই ২০১৯ সালের নভেম্বরে চুরি হয় প্রায় ২০ কেজি স্বর্ণ। বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসেন চৌধুরী ঘটনার পর বলেছিলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনা কাস্টমসের সব অর্জনকে যেন ম্লান করে দিয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন