সংসদের বাজেট আলোচনা

স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতির সমালোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

স্বাস্থ্য খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি জনবল সংকট নিয়ে বাজেট আলোচনায় কঠোর সমালোচনা করেছেন সরকারি দলসহ ক্ষমতাসীন জোটের সংসদ সদস্যরা। গতকাল প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা সমালোচনা করেন। এর আগে সকালে সংসদের বৈঠক শুরু হলে অন্যান্য কার্যক্রম শেষে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য মুহম্মদ ফারুক খান বাজেটের ওপর আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। ফারুক খান বলেন, বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে কভিড-১৯-এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ কভিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হয়েছে। কভিড মোকাবেলায় টিকাদান কর্মসূচির বিকল্প নেই। লক্ষ্যে বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। টিকাদান কর্মসূচি এগিয়ে নিতে স্বল্প, মধ্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিদেশ থেকে টিকা সংগ্রহ, বিদেশী টিকা বাংলাদেশে উৎপাদন এবং দেশেই টিকা উদ্ভাবন তৈরি করতে হবে।

প্রকল্প পরিচালকদের অবহেলার কারণে প্রকল্প যথাসময়ে বাস্তবায়ন হয় না অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে চলমান প্রকল্প সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। প্রকল্প পরিচালকদের জবাবদিহির আওতায় আনা সম্ভব হলে প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, টিকা নিয়ে বিপর্যয় ঘটে গেছে। যারা সেকেন্ড ডোজ পাচ্ছেন না তাদের কী হবে? সরকারকে তাদের ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। টিকা নিয়ে সংসদে কোনো আলোচনা হয়নি। একক সিদ্ধান্তে কেনার কারণে বাংলাদেশ আজ ফাঁদে পড়ে গেছে।

সরকারি দলের এমপি শাজাহান খান স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি তুলে বলেন, স্বাস্থ্য খাতে জনবল বৃদ্ধি জরুরি হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য খাতে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হচ্ছে না। ২৫০ বেডের হাসপাতাল হয়েছে কিন্তু জনবল নেই, যার কারণে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না।

ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন স্বাস্থ্য খাতের সমালোচনা করে বলেন, মানুষের জীবনরক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা স্বাস্থ্য খাতের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, আমলাতান্ত্রিক খবরদারিত্বে বাস্তবে রূপ নিতে পারেনি। করোনা রোধে স্বাস্থ্য খাত বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে আমলাতান্ত্রিক নির্দেশে পরিচালিত হওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। চোখের সামনে দেখেছি মাস্ক, পিপিই, করোনা টেস্ট নিয়ে জাল-জালিয়াতি। একজন শাহেদ, একজন সাবরিনা গ্রেফতার হয়েছে, কিন্তু যারা সচিত্র চুক্তি স্বাক্ষর করল, কাজ দিল তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রথমেই টিকা সংগ্রহ করে সফলভাবে গণটিকা কার্যক্রম শুরু করেছিল।

কিন্তু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিয়ে টিকা সরবরাহের পরিণতি আমরা দেখছি। টিকা নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছি। আগামী মাসগুলোতে টিকা আসবে তার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না। দেশের ১২ কোটি মানুষের জন্য টিকার ব্যবস্থা করতে না পারলে করোনা সংক্রমণ রোধ হবে না।

সরকারি দলের উম্মে কুলসুম বলেন, স্বাস্থ্য খাতের বিষয় আমরা অনেক কথা শুনছি। আগামীতে যেন স্বাস্থ্য খাতে দুর্বৃত্তায়ন আসতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন