কুষ্টিয়ায় ট্রিপল মার্ডার

আদালতে দায় স্বীকার সৌমেনের, জেলে প্রেরণ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার ট্রিপল মার্ডারের জন্য অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই সৌমেন কুমার রায় আদালতে দোষ স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রচণ্ড রাগের মাথায় কাজ করেছেন। তবে সাত বছরের শিশুটিকে হত্যা করা তার অপরাধ ছিল। এজন্য তিনি অনুতপ্ত বলে জানিয়েছেন।

গতকাল বেলা ১টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) নিশিকান্ত সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, জবানবন্দি শেষে বিচারক সৌমেনকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফরহাদ হোসেন খান জানিয়েছেন, তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সৌমেনকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে দুটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।

আদালতে সৌমেন নিজেকে নিহত আসমার স্বামী বলে দাবি করে বলেছেন, তিনি আসমাকে দুই বছর আগে বিয়ে করেন। তবে বিয়ের সপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেখিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে ওই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, সৌমেন বলেছেন তিনি যথাসময়ে আদালতে প্রমাণাদি হাজির করবেন।

সৌমেন দাবি করেন, তিনি আসমাকে খুলনা নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে রাজি হয়নি। এতে তিনি রাগান্বিত ছিলেন। সৌমেন মনে করছিলেন, আসমা এটা করছে ঘটনায় নিহত শাকিল খানের কারণে। সৌমেনের সন্দেহ ছিল, শাকিল খানের সঙ্গে আসমার কোনো সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যার কারণে সে শাকিলের দেয়া পরামর্শ মোতাবেক চলাফেরা করছিল।

ঘটনার দিন তিনি আসমাকে বারবার জিজ্ঞাসা করেছিলেন, শাকিলের সঙ্গে তার কী সম্পর্ক। যখন আসমা এসব বিষয়ে নীরবতা পালন করছিল, তখন তিনি সবগুলোকেই শেষ করে দেব বলে পিস্তল বের করে গুলি করেন।

তিনি আদালতে জানান, ছোট বাচ্চাটিকে তিনি খুন করতে চাননি। কিন্তু একপর্যায়ে সেটি হয়ে গেছে।

তিনি বিনা অনুমতিতে তার কর্মস্থল ত্যাগ করেন বলেও আদালতে জানান। সার্ভিস পিস্তল বুলেট নিয়ে আসেন বলেও স্বীকার করে নিয়েছেন।

রোববার দুপুর পৌঁনে ১২টার দিকে শহরের কাস্টমস অফিসের সামনে সৌমেন প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেন আসমা খাতুন (২৫), তার সাত বছরের ছেলে রবিন শাকিল হোসেন (২৮) নামে আসমার এক বন্ধুকে। সৌমেন রায় খুলনার ফুলতলা থানায় কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি মাগুরা জেলায়। তিনি একসময় কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন।

ঘটনায় নিহত শাকিলের বাবা মেজবার রহমান বাদী হয়ে এএসআই সৌমেন রায়কে আসামি করে রোববার রাতে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। অন্যদিকে আরেকটি মামলা করেন আসমার মা হাসিনা খাতুন। দুটি মামলাতেই সৌমেন একক আসামি। নিহত আসমার বাড়ি কুমারখালীর নাটুরিয়া গ্রামে।

এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এএসআই সৌমেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন