ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পরীমনি ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনেছেন ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিনের বিরুদ্ধে।
১৩ জুন সন্ধ্যায় ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি জানান এ নায়িকা।
এরপর রাত ১০টায় বনানীর বাসায় সংবাদ সম্মেলনে পরীমনি সে রাতের ঘটনা বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন।
তিনি জানান, বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে ১০ জুন এক ক্লাবে যান।
সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে অমি তাকে পরিচয় করিয়ে দেন।
তখন একজন পরীমনির মুখে গ্লাস চেপে ধরেন এবং তাকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন বলে জানান তিনি।
শুধু তা-ই নয়, তার সঙ্গে থাকা জিমিকেও মারধর করা হয়।
এ ঘটনায় পরী নাসিরউদ্দিন নামের একজন ব্যবসায়ীর নাম উল্লেখ করেছেন।
পরী অভিযোগ করে জানান, এ ঘটনার পর পরী বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু সেখানে তিনি কোনো সহযোগিতা পাননি।
দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কেউ অভিযোগ রেকর্ড করেননি।
এরপর পুলিশের সাহায্যে পরীমনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও ভয়ের কারণে চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান।
এমন অবস্থায় বেশ ভেঙে পড়েছেন বলে জানান পরীমনি।
তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তিনি বলেন, ‘আমি শিল্পী সমিতিকে এ ঘটনা জানাই।
তারা আমাকে সাহায্য করার কথা বললেও কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি তাদের।’
এর আগে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি স্ট্যাটাস দিয়ে জানান, তাকে হত্যা ও ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমি পরীমনি।
এ দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক।
আমার পেশা চলচ্চিত্র।
আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমি এর বিচার চাই।’
পরীমনি আরো লেখেন, ‘আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ।
আমি চুপ করে থাকতে পারি না।
আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুনি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।
আফসোস ছাড়া কারোর কী করার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কী করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!’
‘আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর।
এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা।
আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার।
আমার আপনাকে দরকার মা।
আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা।
মা আমি বাচঁতে চাই।
আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী নাসিরউদ্দিন আহমেদসহ ছয়জনকে আসামি করে গতকাল সাভার থানায় মামলা করেন পরীমনি। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বেলা ৩টায় উত্তরার একটি বাসা থেকে নাসিরউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার বাকি পাঁচ আসামিকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
