গ্রন্থ পর্যালোচনা

জন-উদ্যোক্তা উন্নয়নশীল বিশ্বকে বদলে দিতে পারে

ড. এম এ মোমেন

উদ্যোক্তা কাহিনীটি অনেকেই জানেন তবুও পুনরাবৃত্তি করছি। একজন সফল উদ্যোক্তা তার ব্যবসায়ে আসার কাহিনীটি অন্য একজনকে শোনাচ্ছেন: চাকরিতে থাকাকালীন একদিন আমার বস আমার রুমে এসে রেগেমেগে বললেন, ইউ আর ফায়ার্ড

ইউ আর ফায়ার্ড-এর পরিণতি যা- হোক এটাকে উৎসাহব্যঞ্জক, প্রেরণামূলক বাক্য হিসেবে গ্রহণ করে তিনি উদ্যোক্তা হয়ে গেলেন।

দ্বিতীয় গল্পটিও অপ্রাসঙ্গিক হবে না। এমনই একজন উদ্যোক্তা হিসেবে জম্পেশ এক অফিস খুলে বললেন, চমত্কার ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন, দেয়ালে দামি পেইন্টিং। তার রুমে একজন লোককে ঢুকতে দেখেই নিজের ব্যস্ততা গুরুত্ব বাড়াতে টেলিফোন হাতে নিয়ে বড় অংকের টাকার আলোচনা শুরু করে দিলেন এবং একটি বড় প্রতিশ্রুতিও দিলেন। লোকটি সামনে আসতেই রিসিভারে হাত চেপে তিনি বললেন, আপনাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি?

তিনি পকেট থেকে স্ক্রু ড্রাইভার বের করতে করতে বললেন, আপনার ফোনের লাইনটা এখনো চালু করা হয়নি, চালু করে দিয়ে যাই।

দ্বিতীয় গল্পটিতে উদ্যোক্তার পরিণতি স্পষ্ট, তার আচরণে আমলা মাহাত্ম্য আঁচ করা যায়, যদিও তিনি বেসরকারি খাতের বলেই প্রতীয়মান। বেশ বড় বড় সমীক্ষায় এই পরামর্শই দেয়া হয়েছে, ব্যবসাটা সরকারের কাজ নয়, এতে সরকারের এগিয়ে আসা ঠিক হবে না। সরকারের লোকজন তাদের মর্যাদা সম্পর্কে এত সচেতন এবং প্রাপ্তিযোগ নিয়ে এতটাই উন্মুক্ত থাকবে যে শেষ পর্যন্ত যা ঘটবে তা কেবল লাভের গুড় পিঁপড়েতে খাওয়া নয়, আম ছালা দুই- যাবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জাতীয়করণ এবং আমলাদের হেফাজতে তা সমর্পণের ফলাফল আমাদের অজানা নয়। নিয়ে ভালো গবেষণার সুযোগ রয়েছে।

আমলাকে দিয়ে ব্যবসা অসম্ভব, তা- নয়কয়েকজন সফল উদ্যোক্তার নাম জোর দিয়ে বলা যাবে যারা চাকরি শুরুর দিকে ফায়ার্ড হয়েছিলেন। কিংবা আমলাতন্ত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। যখন ব্যাপারটা পাবলিক এন্টারপ্রাইজ, সরকারি উদ্যোক্তা কিন্তু হাত-পা বাঁধা আমলা নন। সুতরাং দক্ষ নির্বাহীর পক্ষে সরকারি অর্থে বেসরকারি প্রকৃতির দক্ষ প্রতিষ্ঠান গড়া সম্ভব।

উইন: হাউ পাবলিক অন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ ক্যান ট্রান্সফার দ্য ডেভেলপিং ওয়ার্ল্ড নামের একটি ব্যতিক্রমধর্মী বইকে পরিচিত করাতে উদ্যোক্তার গল্প দুটো সামনে নিয়ে এসেছি। গ্রন্থকার ফাওজুল কবির খান প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সম্পূর্ণভাবে সরকারি খাতে সরকারি অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডইডকলের প্রথম সার্বক্ষণিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেছেনএমন অনেকেই অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হন, তাতে কী আসে যায় কথা উঠতে পারে নির্বাহীর ক্ষেত্রে বেশ জোর দিয়েই বলা যায় স্ক্র্যাপ থেকে একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন। তিনি বইয়ে প্রতিষ্ঠানটি হয়ে ওঠার কাহিনী বলেছেন, নিজের কৃতিত্ব যতটা সম্ভব কম জাহির করেছেন, প্রতিষ্ঠানের মাঁড়ি ফুঁড়ে দাঁত বেরোনোর যন্ত্রণার কথা বলেছেন এবং প্রতিষ্ঠানের টিকে থাকার চ্যালেঞ্জগুলো যতটা সম্ভব সিইওর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করেছেন।

ইডকল সরকারি মালিকানাধীন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সরকারের অর্থে বিশেষ অবকাঠামো নির্মাণের জন্য অর্থায়নের দায়িত্ব নিয়েছে ইডকল। দেশের অবকাঠামো নির্মাণ অর্থায়নে একটি অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। নবায়নযোগ্য শক্তির প্রশ্নে বৈশ্বিক খেলোয়াড় হতে পেরেছে; মূলধন বিকাশ এবং লভ্যাংশ বিতরণে ইডকল অনেক বেসরকারি কিংবা ব্যক্তিগত উদ্যোক্তাকে ছাড়িয়ে গেছে; এর সবচেয়ে বড় সাফল্য শক্তি-ক্ষুধার্ত কোটি ৮০ লাখ বাংলাদেশীর ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার বড় দায়িত্বটি পালন করতে পেরেছে। ভাষা ব্যবহারে কিছু হেরফের ঘটালেও অনুচ্ছেদের তথ্য বক্তব্য সরাসরি গ্রন্থ থেকে নেয়া।

ইডকল বিভিন্ন খাতে অর্থায়ন করলেও গ্রন্থে সাফল্যের আলোকসম্পাত ঘটেছে বিদ্যুৎ খাতের ওপর, বিশেষ করে সোলার হোম সিস্টেমসের ওপর। অংশগ্রহণমূলক, বাস্তবায়নযোগ্য পরিবীক্ষণ মূল্যায়ন একটি ডিজাইন সোলার হোম সিস্টেমকে সাফল্য এনে দিয়েছে এবং অন্ধকার গ্রামীণ গৃহ আলোকিত করা ছাড়াও সেচপাম্প চালানোর কাজে লাগানো হয়েছে।

আমার আলোচনা যদি কেবল বইটি নিয়ে হয় তাহলে মানতেই হবে সুপাঠ্য এই বইটি স্মৃতিকথা দাপ্তরিক কথার কিছু মিশেল, মুগ্ধ হয়ে পড়া যায়। ১২টি অধ্যায়ে সম্পন্ন বইটিতে আমার পছন্দের একটি দিক হচ্ছে প্রতিকূলতার মধ্যে (রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ তো রুটিন প্রতিকূলতা) প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজটি লেখক নিষ্ঠার সঙ্গে করেছেন, নিজের বাড়ি থেকে চেয়ার এনেছেন, বাতিল করে দেয়া কম্পিউটার আর ডটমেট্রিক্স প্রিন্টার দিয়ে যাত্রা করেন এমন এক সময় যখন ইডকল ধরনের একটি পাকিস্তানি প্রতিষ্ঠানের সিইও কারাগারে। পরের কাজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণটিম বিল্ডিং এবং টিমে যোগ্য সদস্যকে আকৃষ্ট করা এবং ধরে রাখা এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রণোদিত করা। প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক নিয়োগে স্বার্থের সংঘাত এড়ানো, প্রকল্প অর্থায়নের চড়াই-উতরাই অতিক্রম করা, প্রযুক্তির দখল থেকে সঠিক লাগসই প্রযুক্তি বের করে আনা, আবার একই ইডকল বোর্ডকে সমান তালে এগোনোর জন্য প্রস্তুত করা, ইডকলের নিজস্ব সম্পদ সৃষ্টি করা এবং দিন শেষে নিজেদের জন্য একটি জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠানের সম্মান লাভ করাপ্রতি স্তরে স্তরে বাধাবিপত্তির মধ্য দিয়ে অগ্রগতির একটি সুন্দর দলিলীকরণের ঘটনা ঘটেছে বইটিতে। আমলার ঝুঁকি নেয়ার কথা নয়, তার পরও মরিয়া হয়ে যারা ঝুঁকি নেন তাদের অনেকেই উদ্দেশ্যপ্রবণ ঝুঁকি নিয়ে থাকেন। ইডকল ধরনের প্রতিষ্ঠানে লাগামটা শেষ পর্যন্ত সরকারের হাতে থাকে বলেই মরিয়া হয়ে বড় ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করা সম্ভব নয়।

যেহেতু সরাসরি সরকার প্রতিষ্ঠানের মালিকমন্ত্রী, সচিব, বোর্ড মালিকানার প্রতিভূ। স্পিকিং ট্রুথ টু দ্য পাওয়ার’—ক্ষমতাকে সত্য কথাটি শুনিয়ে দেয়া মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদপ্তর বা দপ্তরের চেয়ে ইডকল ধরনের প্রতিষ্ঠানের জন্য সহজ। অপ্রিয় দুষ্প্রাপ্র্য সত্য রাজনৈতিক সরকার নিতে চাইবে না, এমকি কোনো কায়েমি স্বার্থ থাকলে বোর্ডও তা গ্রহণ করতে চাইবে না। ধরনের পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানও টিকিয়ে রাখতে হবে আবার মালিক অর্থাৎ সরকারকে ক্ষুব্ধ করা যাবে নাগ্রন্থকার ধরনের বেশকিছু বর্ণনা দিয়েছেন এতে।

গ্রন্থটির বিনীত সূচনার একটি আলোকোজ্জ্বল বিবরণ রয়েছে। ইডকল প্রকল্পেও সফল বাস্তবায়নে সৌরবিদ্যুৎ সাতক্ষীরার একটি কুটির আলোকিত করেছে, আলো থাকায় কাজের সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। দরিদ্র নারীর সন্তানদের পড়াশোনার সুবিধা হয়েছে এবং এমনকি তারা টেলিভিশন দেখারও সুযোগ পাচ্ছে। সম্ভবত গ্রন্থকারের পর্যবেক্ষণের কয়েক বছর পর একই প্রকল্পের একটি কথিত আলোকিত বাড়ি আমারও দেখার সুযোগ হয়েছে, বাল্ব থেকে যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটছে তাতে অলৌকিক ক্ষমতাসম্পন্ন না হলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, টেলিভিশন দেখা আর বৈদ্যুতিক পাখার ঘূর্ণন অবান্তর।

একটি বা দুটি নমুনা দেখে আমি গৃহে গৃহে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে তা বলতে চাইনি। সোলার হোম সিস্টেমস যাদের কাছে মৌসুমের বাণিজ্যের চেয়ে বেশি কিছু নয়, তারা নিম্নমানের সামগ্রী সরবরাহ করেছে, (হয়তো ঘটনাচক্রে আমার দেখা বাড়ির বেলাতেই তা সত্য মনে করছি। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন, এটিই পরবর্তীকালের সাধারণ চিত্র) ইডকল আলোকবঞ্চিত মানুষকে কিঞ্চিত আলো দেখিয়ে আলোর তৃষ্ণা জাগাতে পেরেছে, আমি এটা বড় করেই দেখাতে চাই।

শহরে আয়েশি মানুষ এয়ারকন্ডিশন চালানো বিদ্যুতের দাম কত দিয়েছে আর সৌরলোকের কারবারিরা প্রান্তজনের কাছ থেকে কত আদায় করেছে, সে হিসাবটাই ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হবে না, প্রতিকূলে যাবে।

গ্রন্থকারের সাধুবাদ একাদশ অধ্যায়ে সোলার হোম সিস্টেমসের বাজার পতনের চিত্রটি তুলে ধরেছেন এবং পতনের দায় যে তার নয় তা জানাতে বন্ধনীতি উল্লেখ করেছেন। ২০১২ সালের পর থেকে তিনি আর ইডকলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। দায় যারই হোক এটা স্পষ্ট সরকারের বিদ্যুত্নীতি এবং সম্প্রসারণ কর্মসূচির সঙ্গে ইডকল সৌরবিদ্যুতের সম্পর্ক ছিল সামান্যই। সরকারের পক্ষে যারা বোর্ড চালিয়েছেন কোটি ৮০ লাখ মানুষকে উদ্ভাসিত করা প্রকল্পটি যে ডুবে যাচ্ছে সম্ভবত তা তারা গায়ে লাগাননি।

অতঃপর একটি মৌলিক প্রশ্ন: ইডকল তো একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। বিদ্যুৎ উৎপাদন বিতরণ ইত্যাদিও কোনো ম্যান্ডেটাই এর থাকার কথা নয়। আর গৃহে গৃহে সৌরবিদ্যুৎ দিয়ে তা টিকিয়ে রাখার সক্ষমতা যে প্রতিষ্ঠানটির ছিল না এটা বলার জন্য বর্তমান অবস্থা জানাই যথেষ্ট। আর মোটা দাগে বলতে গেলে প্রকল্পের প্রযুক্তি বহু আগেই পরিত্যক্ত। দুর্ভাগ্যবশত ইডকলের পরামর্শকরা তা বলেননি। ধরনের স্বল্পায়ু প্রযুক্তি কেনার জন্য আফ্রিকা এশিয়ার কিছু দেশ যে হাত তুলে দাঁড়িয়ে থাকবে এটা অস্বাভাবিক নয়। তার একটি অন্যতম কারণ আমাদের শিক্ষা যথেষ্ট অসম্পূর্ণ, প্রযুক্তি অভিজ্ঞতার অসম্পূর্ণতা আরো বেশি।

কেবল সূর্যরশ্মি সঞ্চালিত গৃহালোকের মলিন দশা দেখে ইডকলকে বিচার করা মোটেও ঠিক হবে না। এর অবশ্যই অনেক সফল টেকসই প্রকল্প থাকবে।

ধরেই নিতে হবে গ্রন্থের ফ্ল্যাপের লেখা প্রকাশকের। সূত্র না জেনে বলা আরো কারো কারো মতো প্রকাশক বলেছেন, হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে বাস্কেট কেস বলেছেন। কিন্তু তা কবে কোথায় বলেছেন? কেউ কেউ আবার একে বটমলেস বাস্কেট বলে চালিয়ে থাকেন। অভিধানে ধরনের উপমা নেই। বাস্কেট কেস বলেছেন তখনকার অ্যাম্বাসাডর এটলার্জ আলেক্সিস জনসন। কিসিঞ্জার আরো খারাপ কিছু বলেছেন। ওয়াশিংটন সোস্যাল গ্রুপের ডিসেম্বর ১৯৭১-এর বৈঠকে জনসন কথাটি বলেছেন, কিসিঞ্জার বলেননি, স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাগজে তা রয়েছে।

ফাওজুল কবির খান আমার কাছে একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক। সহলেখক রবার্ট জে. পারাকে নিয়ে লিখিত তার বইফাইন্যান্সিং লার্জ প্রজেক্টস: ইউজিং প্রজেক্ট ফাইন্যান্স টেকনিকস অ্যান্ড প্র্যাকটিসেসআন্তর্জাতিকভাবে সমাদৃত বই। তার স্বাক্ষরসংবলিত বইটি ঝকঝকে অবস্থায় ১৫-১৬ বছর আগে নীলক্ষেতের পুরনো বইয়ের দোকান থেকে কিনেছি। তিনি বইটি বাংলাদেশ সরকারের একজন সচিবকে উপহার দিয়েছিলেন, সচিব হয়তো বইটির প্রতি তেমন যত্নবান ছিলেন না, সুতরাং বই নিজের পথ করে নিয়েছে। সচিবদের পড়ার দরকারইবা কী, সময়ইবা কোথায়। আলোচনাধীন বইটি আমাকে উৎসাহিত করেছেসোলার হোম সিস্টেমস নিয়ে কি একটি পৃথক বই হতে পারে না!

আমার স্নাতকোত্তর ক্লাসে পাঠ্য ছিল ডেভেলপমেন্ট ইন প্র্যাকটিস: পেভড উইথ গুড ইনটেনশনস নামের একটি বই। ডোগ পোর্টার, এলেন ব্রায়ান্ট গাই থম্পসন বইটির লেখক। থম্পসন অস্ট্রেলীয় অর্থসহায়তায় কেনিয়ায় ম্যাগারিনি সেটলমেন্ট প্রজেক্টে সাফল্য দেখতে যাবে এমন সময় কীভাবে মুখ থুবড়ে পড়ল সেই বর্ণনা রয়েছে এতে। আমার শিক্ষক অধ্যাপক অ্যালাক্স রু বললেন, প্রকল্পের কোনো গুরুত্বপূর্ণ খুঁটি নড়বড়ে হলে এটাই হবে পরিণতি। প্রকল্পে উপকারভোগী গিরিয়ামা আদিবাসীদের সাংস্কৃতিক বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছিল। আর ঘরে ঘরে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পটি তাত্ক্ষণিকভাবে যৌক্তিক মনে হলেও দীর্ঘমেয়াদে যৌক্তিক হবে কিনা, সে বিবেচনা করা যে হয়নি তা অনুমেয়। দাতা সংস্থার অ্যাডহক কাজের মতো এটিও একটি। প্রান্তজন এত মূর্খ নয় যে টাকা আর ৬০ টাকার তফাত বুঝবে না। তাদের বিদ্যুৎ চাই ন্যাশনাল গ্রিড থেকে। সরকারও সে পথে হাঁটছে, এটা কি ইডকল বোর্ডের অজানা ছিল?

কেবল প্রকল্প একটি বস্তুনিষ্ঠ বই রচিত হোক, তা ডেভেলপমেন্ট ইন প্র্যাকটিসের চেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ হবে না।

দীর্ঘমেয়াদে প্রকল্পের ব্যর্থতা মানতে যদি কষ্ট হয় তাহলে ডেনিস রনডিনেলির ওষুধটি ব্যবহার করা যায়: অল প্রজেক্টস আর পলিসি এক্সপেরিমেন্ট তাতে ব্যর্থতার যাতনা কমবে।

এম ফাওজুল কবির খানের বইটি আমাদের উন্নয়ন সাহিত্যচর্চার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। বইটির প্রকাশক কিস্টেন পাবলিকেশন। প্রকাশকাল ২০২১।

 

. এম মোমেন: সাবেক সরকারি কর্মকর্তা

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন