কর্তৃপক্ষের
কাছে বারবার
অনুরোধ করে
কোনো সাড়া
না পাওয়ায়, স্ত্রীর জন্য ৩০ মিনিটের মধ্যে নিজেই রাস্তার পাশে বেঞ্চ স্থাপন করে তাক
লাগিয়ে দিয়েছেন স্পেনের ৮২ বছরের এক বৃদ্ধ। স্পেনের উত্তর-পশ্চিমের
শহর ‘অ্যা এস্ট্রাডা’য় এ ঘটনা ঘটেছে। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
স্ত্রীর জন্য সকালে হাঁটাহাঁটির মধ্যে বিশ্রাম নেয়ার মতো একটি স্থান
খুঁজছিলেন ৮২ বছর বয়সী ম্যানুয়েল সওতো। তার ৭৯ বছর বয়সী স্ত্রী মারিয়া
সাওতো
দীর্ঘদিন ধরে অস্টিওআর্থারাইটিসে
(গেঁটে বাত বা হাড়ের বিশেষ এক ধরনের রোগ)
ভুগছিলেন।
দৈনন্দিন
ব্যায়ামের অংশ হিসেবে লাঠিতে ভর দিয়ে তাঁকে হাঁটতে হয়। তবে হাঁটার মাঝে ক্লান্তি ধরে গেলে বিশ্রাম
নেয়ার মতো বসার কোনো জায়গা ছিলো না। এ কারণে তার সকালবেলার ব্যায়ামে কষ্ট দিন দিন
বেড়ে চলছিলো।
স্ত্রীর কষ্ট দেখে ওয়াকওয়ের পাশে বেঞ্চ স্থাপনের জন্য স্থানীয়
কর্তৃপক্ষের কাছে দফায় দফায় চেষ্টা তদবির করেন
সওতো, কিন্তু,
কোনো ফল পাননি তিনি। এজন্য নিজেই স্থানীয় দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্র কিনে এনে কাজে লেগে পড়েন।
স্পেনের
একটি
গণমাধ্যমকে দেয়া
সাক্ষাতকারে সওতো
বলেন, বেঞ্চটি তৈরি করতে আমার আধা
ঘণ্টা সময় লেগেছে। কাঠ কেটে পেরেক দিয়ে জোড়া লাগিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়াই আমি কাজটি
শেষ করেছি।
তিনি বলেন, কাজটি শেষ করতে কিছু বার্নিশিংয়ের কাজও করতে হয়েছে।
এটি যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হওয়া সত্ত্বেও তিনি করেছেন। স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী তার দোকানের বাইরে বেঞ্চটি তৈরি করতে
সওতোকে অনুমতি দেন। তিনি জানান, স্ত্রী মারিয়াকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য
গত সপ্তাহে রাতারাতি বেঞ্চটি বানিয়ে ফেলেন।
অনলাইন নিউজপোর্টাল ‘নিউস’কে দেয়া বক্তব্যে সওতো বলেন, ‘মারিয়া যখন এটা দেখলো, তখন সে খুব খুশি হয়েছিল। সে আমাকে জড়িয়ে ধরে একটা চুমো দিলো।”
এদিকে, নির্মাণের পর থেকেই অ্যা এস্ট্রাডা
নগরের মানুষের কাছে সওতোর বেঞ্চটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু তিনি চান বিশ্রামের একান্ত
প্রয়োজন রয়েছে কেবল এমন ব্যক্তিরা এটা ব্যবহার করুক। তাই ‘মার্কার পেন’ দিয়ে বেঞ্চের পিছনের অংশে এ সংক্রান্ত বার্তা দিয়ে রেখেছেন। সেখানে
লিখেছেন, “রেসপেটেন। প্যারা ম্যালোরিস” (অর্থ: ‘মনে রাখবেন। এটি বয়স্কদের জন্য’)।
ম্যানুয়েল সওতো বলেন, কিছু প্রতিবেশী আমাকে আরও বেঞ্চ বানানোর জন্য বলেছেন, তবে তাদেরকে আমি ‘না’ করে দিয়েছি। আমি এটা কেবল আমার স্ত্রীর জন্যই তৈরী
করেছি।