ডেভিড
হিউমের
জন্ম
৩০০
বছর
আগে,
১৭১১
সালে।
তার
সময়ের
তুলনায়
আজকের
পৃথিবী
অনেক
বদলে
গেছে
ঠিকই,
কিন্তু
তার
চিন্তা
ও
অনুজ্ঞাগুলো
(আইডিয়াস অ্যান্ড
অ্যাডমোনিশনস)
এখনো
খুবই
প্রাসঙ্গিক।
অথচ
বর্তমান
পৃথিবীতে
তার
ভাবনাগুলোকে
যেন
গুরুত্ব
দেয়ার
বদলে
খানিকটা
অবহেলাই
করা
হয়েছে।
হিউমের
অন্তর্দৃষ্টিগুলোর
মধ্যে
একটা
হচ্ছে,
নৈতিক
বিষয়গুলোকে
ভালোভাবে
পরীক্ষা-নিরীক্ষা
করার
ক্ষেত্রে
তথ্য
ও
জ্ঞানের
গুরুত্বকে
স্বীকার
করা।
অন্য
একটি
ব্যাপার
হচ্ছে,
মানবসংবেদনের
(সেন্টিমেন্টস) জোরালো
ভূমিকাটাকে
অগ্রাহ্য
না
করেও
যুক্তির
গুরুত্বকে
মেনে
নেয়া।
তাছাড়া
তার
অন্তর্দৃষ্টি
আমাদের
শেখায়,
যারা
এ
পৃথিবীর
অন্যত্র,
আমাদের
থেকে
বহু
দূরে
বাস
করেন,
এমনকি
যারা
এখনো
জন্মাননি,
ভবিষ্যতে
এ
পৃথিবীর
বাসিন্দা
হবেন,
তাদের
কথা
ভাবাও
আমাদের
দায়িত্ব।
আধুনিক চিন্তার
প্রকৃতি
ও
বিস্তৃতির
ওপর
ডেভিড
হিউমের
প্রভাব
বিপুল।
তার
চিন্তার
আলো
মননচর্চার
ক্ষেত্রটিকে
ব্যাপকভাবে
প্রভাবিত
করেছে:
আধুনিক
জ্ঞানতত্ত্ব
থেকে
ব্যবহারিক
যুক্তিবিদ্যা,
নন্দনতত্ত্ব
থেকে
ধর্মতত্ত্ব,
রাজনৈতিক
অর্থশাস্ত্র
থেকে
দর্শন,
সমাজবিদ্যা
ও
সংস্কৃতিতত্ত্ব
থেকে
ইতিহাস
ও
ইতিহাসবিদ্যার
মতো
বুদ্ধিচর্চার
হেন
ক্ষেত্র
নেই,
যেখানে
হিউমের
চিন্তার
ছাপ
পড়েনি।
তার
জীবদ্দশাতেই
তার
চিন্তাগুলো
সনাতনী
চিন্তকদের
কড়া
বিরোধিতার
মুখে
পড়েছে।
এর
একটি
ফল
হয়েছিল
এই
যে,
তাকে
এডিনবরা
বিশ্ববিদ্যালয়ে
দর্শন
বিভাগের
প্রধানের
পদটা
দেয়া
হয়নি,
পরে
গ্লাসগো
বিশ্ববিদ্যালয়েও
একই
জিনিস
ঘটে।
এসব
সত্ত্বেও
হিউমের
চিন্তাভাবনাগুলোর
প্রভাব
উত্তরোত্তর
জোরালোভাবে
বৃদ্ধি
পেয়েছে।
বস্তুত,
নিকোলাস
ফিলিপসন
তার
লেখা
ডেভিভ হিউম:
দ্য ফিলোসফার অ্যাজ হিস্টোরিয়ান শীর্ষক
অন্তর্দৃষ্টিসমৃদ্ধ
জীবনীতে
লিখছেন,
‘ডেভিড
হিউমের
খ্যাতি
আগে
কখনই
(আজকের মতো)
এতটা
বিস্তৃত
হয়নি।’
তা সত্ত্বেও
হিউমের
অনেক
নতুন
ও
পথপ্রবর্তক
চিন্তা
সমসাময়িক
আলাপ-আলোচনায়
যথাযথ
গুরুত্ব
পায়নি।
তাকে
আলোকায়ন
(এনলাইটেনমেন্ট) যুগের
অগ্রণী
‘মহাদার্শনিক’
শিরোপায়
ভূষিত
করা
হলেও
তার
চিন্তা
বিষয়ে
অবহেলাগুলো
চলেই
এসেছে।
হিউমের
কিছু
উদ্ধৃতি
খুবই
ব্যাপকভাবে
ব্যবহূত
হয়।
এগুলোকে
খানিকটা
‘সংক্ষেপে
ডেভিড
হিউম’
গোছের
একটা
সারসংকলন
হিসেবে
দেখা
হয়ে
থাকে।
ডেরেক
পারফিট
তার
সুদূরপ্রসারী
দার্শনিক
কৃতি
অন হোয়াট
ম্যাটারসে
যেমন
ধরিয়ে
দিয়েছেন
যে
কখনো
কখনো
তিনি
এমনসব
মন্তব্য
করে
গেছেন,
যা
থেকে
মনে
হতে
পারে
যে
তিনি
তার
‘আদর্শগত
বিশ্বাসটা
বিস্মৃত
হচ্ছেন
বা
সেটাকে
ভুলভাবে
তুলে
ধরছেন।’
বিষয়টি
গুরুত্বপূর্ণ,
কারণ
বিভিন্ন
সময়ে
হিউমের
কোনো
কোনো
কথায়
যে
জিনিসগুলো
উপেক্ষিত
হয়েছে,
তার
নিজের
অন্যান্য
লেখায়ই
কিন্তু
তাকে
সেগুলোর
পক্ষে
জোরালো
সওয়াল
করতে
দেখা
যাচ্ছে।
শুরুতেই আমি
হিউমের
একটি
স্পষ্ট
ও
তীক্ষ
মন্তব্য
তুলে
ধরব।
এ
কথাটি
তিনি
বলেন
তার
১৭৫১
সালে
প্রকাশিত
‘অব
জাস্টিস’
প্রবন্ধে।
প্রবন্ধটি
পরে
তার
অ্যান ইনকোয়ারি কনসার্নিং দ্য
প্রিন্সিপালস অব
মরালস
গ্রন্থে
অন্তর্ভুক্ত
হয়।
হিউমের
সময়টা
ছিল
বিশ্বায়নের
শুরুর
সময়,
তখনকার
পৃথিবীতে
আবিষ্কৃত
হয়ে
চলেছিল
নতুন
নতুন
বাণিজ্যপথ,
বিশ্বের
বিভিন্ন
প্রান্ত
আর্থিক
সম্পর্কে
যুক্ত
হয়ে
চলেছিল।
আমরা
ভিন্ন
ভিন্ন
প্রান্তের
মানুষ
সম্পর্কে
বেশি
বেশি
করে
জানতে
পারছিলাম
এবং
তাদের
সঙ্গে
সম্পর্ক
স্থাপন
করছিলাম।
ঠিক
এ
কারণে
হিউম
ন্যায্যতার
ধারণাটিকে
নতুন
আলোকে
দেখার
ক্রমবর্ধমান
প্রয়োজনটার
কথা
তুলে
ধরেন।
তার
ভাষায়:
আবার ধরা
যাক, আলাদা
আলাদা সমাজ
পারস্পরিক সুবিধা
ও সুযোগের ভিত্তিতে নিজেদের মধ্যে বিশেষ
ধরনের আদান
প্রদানে লিপ্ত
হচ্ছে। এই
সূত্র ধরে
মানুষের দৃষ্টির ব্যাপকতা এবং
তাদের পারস্পরিক সংযোগের জোর
যেমন যেমন
বেড়ে চলেছে,
ন্যায্যতার পরিধিটাও তেমন তেমন
প্রসারিত হচ্ছে।
ইতিহাস, অভিজ্ঞতা ও যুক্তি
আমাদের নানা
বিষয়ে ভালোমতো আলোকিত করে:
আমরা শিখি
যে মানবসংবেদনগুলোর [সেন্টিমেন্টস] স্বাভাবিক ক্রমঃপ্রসারণ ঘটে
এবং ন্যায্যতার শুভ ফলগুলো
সম্পর্কে আমরা
যতই জানতে
থাকি ততই
ন্যায্যতার প্রতি
আমাদের শ্রদ্ধা বাড়তে থাকে।
হিউমের উদ্ধৃতিটি
এমনিতেই
খুব
মূল্যবান।
পাশাপাশি
এটি
আমাদের
ন্যায্যতার
সর্বজনীন
ধারণাকে
বুঝতে
সাহায্য
করে,
বুঝতে
সাহায্য
করে
বিশ্বন্যায্যতা
প্রতিষ্ঠায়
এর
বিশেষ
প্রয়োগকেও।
এটিকে
হিউমীয়
বিশ্লেষণেরই
অংশ
হিসেবে
দেখা
যায়।
আবার
নীতিশাস্ত্র
ও
জ্ঞানতত্ত্ব
এবং
নৈতিক
যুক্তি
ও
মানবসংবেদনের
আন্তঃসম্পর্কের
ব্যাপারে
হিউম
যে
সাধারণ
সওয়ালটি
করছেন,
এ
উদ্ধৃতি
থেকে
তার
তাত্পর্যও
আমাদের
কাছে
পরিষ্কার
হয়।
ন্যায্যতা বিষয়ে
হিউমের
যে
দৃষ্টিভঙ্গিটি
এ
উদ্ধৃতিতে
নিহিত
আছে,
সেটি
প্রভাবশালী
ব্রিটিশ
দার্শনিক
টমাস
হবসের
(১৫৮৮-১৬৭৯)
দৃষ্টিভঙ্গির
বিপরীত।
হবসের
মতে,
ন্যায্যতা
বিষয়ে
কোনো
সামঞ্জস্যপূর্ণ
ধারণার
জন্য
একটি
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
প্রয়োজন।
(সম্ভবত হবসের
চিন্তায়
ন্যায্যতা
প্রতিষ্ঠার
সঙ্গে
বলপ্রয়োগের
ধারণাটি
ওতপ্রোতভাবে
জড়িত।
অর্থাৎ
জনসাধারণ
খুবই
বিশৃঙ্খল
ও
অন্যায্যতাপ্রিয়
এবং
এর
উৎস
তার
ব্যক্তিস্বার্থ।
ফলে
প্রাতিষ্ঠানিক
বলপ্রয়োগের
মাধ্যমে
তাদের
শৃঙ্খলায়
আনতে
হবে।
আর
এ
বলপ্রয়োগের
বৈধতার
জন্য
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
প্রয়োজন।
তিনি
আশা
করেছিলেন
প্রতিষ্ঠানগুলো
নিষ্পক্ষ
ও
বিশুদ্ধভাবে
ন্যায্য
হলে
তার
পক্ষে
একটি
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
ভেতর
ন্যায্যতা
প্রতিষ্ঠিত
করা
সম্ভব
হবে।)
তিনি
মনে
করতেন
যে
ন্যায্যতার
প্রাতিষ্ঠানিক
দাবিগুলো
কেবল
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
সীমার
মধ্যেই
মিটতে
পারে,
অর্থাৎ
ন্যায্যতার
জন্য
কিছু
প্রতিষ্ঠান
প্রয়োজন
এবং
সেগুলোকে
গড়ে
তোলা
ও
সচল
রাখার
জন্য
আবশ্যক
সার্বভৌম
রাষ্ট্র।
প্রতিষ্ঠানের
প্রয়োজনীয়তাটা
হিউমের
চিন্তায়ও
খুবই
গুরুত্ব
পেয়েছে
এবং
এ
বিষয়ে
তার
গভীর
ও
তীক্ষ
দৃষ্টিসম্পন্ন
আলোচনা
আছে।
কিন্তু
তা
সত্ত্বেও
ন্যায্যতার
বিষয়ে
তিনি
তার
চিন্তাকে
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
সংকীর্ণ
ধারণার
মধ্যে
আটকে
রাখেননি।
রাষ্ট্রীয়
সীমানার
বাইরে
বৈশ্বিক
ন্যায্যতা
বলে
কিছু
হতে
পারে
না—এমন
কোনো
ধারণা
তার
চিন্তায়
স্থান
পায়নি।
ন্যায্যতার ধারণায়
যে
বিষয়টির
ওপর
খুব
বড়
রকমের
গুরুত্ব
দেয়া
হয়
তা
হলো,
অন্যদের
সঙ্গে
ন্যায্যতাপূর্ণ
সম্পর্ক
স্থাপনের
এবং
অন্যদের
সম্পর্কে
যথাযথ
সংবেদন
পোষণ
করার
প্রয়োজনীয়তা।
বিদ্যমান
ব্যবস্থাপনাগুলোর
মধ্যে
কী
কী
অন্যায্যতা
আছে,
সেগুলোকে
চিহ্নিত
করার
কাজটিও
এক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ।
কিছুু
ক্ষেত্রে
এটা
করতে
গিয়ে
আমাদের
সার্বভৌমত্বের
প্রচলিত
সীমানাটাকে
বদলে
ফেলতে
হবে—এ
চিন্তা
থেকেই
ঔপনিবেশিকতাবাদের
বিরুদ্ধে
হিউমের
দৃঢ়
অবস্থানটা
গড়ে
উঠেছিল
(তিনি তো
একবার
এমনও
বলেছিলেন,
‘আমি
সেই
দিনটার
জন্য
উদগ্রীব
হয়ে
আছি,
যেদিন
আমেরিকা
ও
ইস্ট
ইন্ডিজ
সম্পূর্ণ
ও
চূড়ান্ত
বিদ্রোহে
নেমে
পড়বে’)
কিংবা
এটা
হয়তো
হিউমের
বিশ্বন্যায্যতার
চিন্তার
সঙ্গে
সম্পর্কিত:
বিদেশের
সঙ্গে
যেভাবে
আমাদের
বাণিজ্য
বিস্তার
ঘটে
চলেছে,
তার
সঙ্গে
সঙ্গে
আমাদের
সংবেদন
ও
যুক্তি
প্রয়োগকেও
এ
কথাটা
হিসাবের
মধ্যে
রাখতে
হবে
যে
‘ন্যায্যতার
পরিধিটা
ক্রমে
বিস্তৃত
হয়ে
চলেছে।’
ন্যায্যতা
কেবল
একটি
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
লোকদের
জন্যই
প্রতিষ্ঠিত
হতে
পারে,
এমন
কোনো
চিন্তায়
আটকে
থাকা
চলে
না।
বাস্তবে সমসাময়িক
ন্যায্যতা-বিষয়ক
তত্ত্বগুলো
অবশ্য
হিউমের
রাস্তায়
না
গিয়ে
প্রধানত
হবসীয়
পথটাই
নিয়েছে।
এসব
তত্ত্ব
ন্যায্যতা-বিষয়ক
ভাবনাকে
বিবেচনা
করেছে
একটি
নির্দিষ্ট
রাষ্ট্রের
সীমানার
মধ্যেই।
দার্শনিক
টমাস
নেগেল
তার
২০০৫
সালে
প্রকাশিত
‘দ্য
প্রবলেম
অব
গ্লোবাল
জাস্টিস’
শীর্ষক
গুরুত্বপূর্ণ
প্রবন্ধে
বিষয়টিকে
এভাবে
বলছেন,
‘হবসের
কথা
যদি
ঠিক
হয়
তাহলে
সারা
পৃথিবীতে
একটিমাত্র
সরকার
ব্যতিরেকে
বৈশ্বিক
ন্যায্যতার
ধারণাটা
অলীক
কল্পনামাত্র।’
আধুনিক
ন্যায্যতা
তত্ত্বের
ভুবনে
সবচেয়ে
প্রভাবশালী
হলো
জন
রলসের
পথপ্রবর্তক
গ্রন্থ
আ থিয়োরি
অব জাস্টিসে উপস্থাপিত
‘সমদর্শিতাই
ন্যায্যতা’
(জাস্টিস অ্যাজ
ফেয়ারনেস)
তত্ত্ব।
এখানে
তিনি
জোর
দিচ্ছেন
কোনো
একটি
সমাজের
‘মৌলিক
প্রাতিষ্ঠানিক
কাঠামো’টা
ঠিক
করার
জন্য
‘ন্যায্যতার
মূলনীতি’গুলো
নির্ধারণ
করার
ওপর।
এ
কাঠামো
কী?
রলস
এটিকে
দেখছেন
কোনো
একটি
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
একগুচ্ছ
আদর্শ
প্রতিষ্ঠান
হিসেবে।
অর্থাৎ
ন্যায্যতা
প্রতিষ্ঠা
করতে
গেলে
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
সীমানার
মধ্যে
একগুচ্ছ
আদর্শ
প্রতিষ্ঠান
তৈরি
করতে
হবে।
ন্যায্যতা
প্রতিষ্ঠার
জন্য
যা
যা
করণীয়,
তার
একটি
‘সম্পূরক’
ধারণা
পাওয়া
যাচ্ছে
রলসের
পরবর্তী
গ্রন্থ
দ্য ল’ অব
পিপলসে।
কিন্তু
বিশেষ
কোনো
সার্বভৌম
রাষ্ট্রের
বাইরে
বসবাসকারী
মানুষদের
নিয়ে
যখন
রলস
কথা
বলছেন,
তাতে
তার
আলোচনা
ন্যায্যতার
ওপর
নিবদ্ধ
হচ্ছে
না,
সেখানে
তার
মনোযোগ
কেন্দ্রীভূত
হচ্ছে
বিভিন্ন
দেশের
নাগরিকদের
সভ্য
ও
মানবিক
আচরণের
জন্য
মৌলিক
প্রয়োজনগুলোর
ওপর।
(এমনটি ভাবার
কারণ
কী?
এটি
কি
‘নিজ’
এবং
‘অপর’
দৃষ্টিভঙ্গির
প্রকাশ?
এ
কথার
মধ্যে
কি
কোনো
বর্ণবাদী
দৃষ্টিভঙ্গি
রয়েছে?
তবে
অমর্ত্য
সেন
তার
দি আইডিয়া
অব জাস্টিস গ্রন্থ,
সহস্রাব্দে পৃথিবী শীর্ষক
বক্তৃতা
ও
অন্যান্য
প্রবন্ধে
দেখাচ্ছেন
যে
ন্যায্যতা,
যুক্তিশীলতা
ও
ধর্মনিরপেক্ষতার
মতো
মৌলিক
বিষয়ে
পশ্চিমা
ও
অ-পশ্চিমা
এমন
বিভাজন
বিপজ্জনক
হতে
পারে।
কোনো
ধারণা
বা
চিন্তার
উত্পত্তিস্থল
কোথায়,
এটি
গুরুত্বপূর্ণ
নয়;
বরং
‘সেই
ধারণা
বা
বস্তু
বা
চর্চার
অবদান
কী,
তা
অনুসন্ধান
করা
এবং
এর
প্রভাবে
অন্যদের
দমিত
হওয়ার
সম্ভাবনা
কতখানি।
এজন্য
আদর্শগত
(নরমেটিভ) পরীক্ষানিরীক্ষা
দরকার—উৎসভূমিটা
কোনো
ব্যাপার
নয়।’)
নেগেলও বিশ্ব
ঔচিত্য
(propriety)
বিষয়ে
তার
বিশ্লেষণকে
‘ন্যূনতম
মানবিক
নৈতিকতা’র
গণ্ডিতেই
আবদ্ধ
রেখেছেন,
ন্যায্যতার
দাবি
সেখানে
স্থান
পায়নি।
এর
কারণ,
তার
দৃষ্টিতে
‘ন্যায্যতা
ও
সার্বভৌমতার
সম্পর্ক
বিষয়ে
হবসের
দাবিটাকে
পাশ
কাটিয়ে
যাওয়া
কঠিন।’
হিউম
এ
ব্যাপারটিতে
জোর
দিচ্ছেন
যে
অধিকতর
বিশ্বায়িত
পৃথিবীতে
‘ন্যায্যতার
পরিধি’-কে
অবশ্যই
‘প্রশস্ততর’
হতে
হবে।
তার
চিন্তা
হবসের
চিন্তাধারার
ঠিক
বিপরীত,
তাই
হিউমের
পথটা
ন্যায্যতা
তত্ত্বের
সমকালীন
তাত্ত্বিকদের
অধিকাংশের
থেকেই
আলাদা।
ন্যায্যতার
ধারণাটিকে
আমরা
কীভাবে
দেখব,
সে
ব্যাপারে
হিউমের
দৃষ্টিকোণটির
নানা
রকম
প্রভাব
আছে,
(আমি আমার
দি আইডিয়া
অব জাস্টিস, কলকাতা
থেকে
প্রকাশিত
বাংলা
তর্জমায়,
নীতি ও
ন্যায্যতা)
বইতে
এ
প্রশ্ন
নিয়ে
আলোচনার
চেষ্টা
করেছি।
বইটিতে
হিউম
ছাড়াও
অ্যাডাম
স্মিথ,
মারকি
দ্য
কন্দরচে,
মেরি
উলস্টোনক্রাফটসহ
আলোকায়ন
যুগের
অন্যান্য
চিন্তাবিদের
কাজ
থেকে
অনেক
কিছু
গ্রহণ
করা
হয়েছে)।
আমি ওপরে
হিউমের
যে
উদ্ধৃতি
দিয়েছি,
সেটি
তার
উপস্থাপিত
অন্যান্য
দিক,
যেমন
নীতিশাস্ত্র,
জ্ঞানতত্ত্ব
ও
ব্যবহারিক
যুক্তি
প্রয়োগের
মতো
বিষয়েও
আলোকপাত
করে।
প্রথমত,
হিউমের
সাধারণ
যুক্তিটা
ছিল
এই
যে,
আমরা
কী
জানি
তার
ওপর
ন্যায্যতার
অনুধাবন
নির্ভর
করে—অর্থাৎ
নৈতিকতার
ধারণা
জ্ঞানতত্ত্ব-নিরপেক্ষ
হতে
পারে
না,
তাকে
জ্ঞানতত্ত্বের
ওপর
নির্ভরশীল
থাকতে
হয়।
আমাদের
ব্যবহূত
উদ্ধৃতিটি
হিউমের
এই
সাধারণ
যুক্তিটার
সঙ্গে
ভালোভাবে
খাপ
খায়।
যখন
বৈশ্বিক
যোগাযোগ
বৃদ্ধির
সঙ্গে
সঙ্গে
‘ন্যায্যতার
প্রতি
উত্তরোত্তর
আমাদের
শ্রদ্ধা
বেড়ে
চলে’,
তখন
এ
দিকটিকে
আমরা
হিউমের
দৃষ্টির
সঙ্গে
যুক্তভাবে
দেখতে
পাই:
পরস্পর
সম্পর্কে
এবং
বিশ্ব
সম্পর্কে
আমাদের
যে
জানা,
নৈতিকতাকে
তার
থেকে
আলাদা,
স্বাধীন
একটি
ক্ষেত্র
হিসেবে
দেখা
চলে
না।
যদি
আমরা
কোনো
একটি
জনগোষ্ঠী
সম্পর্কে
কিছুই
বা
প্রায়
কিছুই
না
জানি,
তবে
তাদের
প্রয়োজন,
স্বত্বাধিকার
ও
স্বক্ষমতা
নিয়ে
কোনো
কিছুই
বলতে
পারব
না।
অন্যদিকে
তাদের
সঙ্গে
সংযোগ
বাড়ার
সঙ্গে
সঙ্গে
তাদের
জীবন
সম্পর্কে
আমাদের
বোধও
বাড়বে।
সেই
কারণে
অন্যদের
জীবনের
ব্যাপারে
মনোযোগ
দেয়ার
কারণ
আছে।
হিউমের যুক্তিতে,
এ
বোধটি
কেবল
বিদ্যাচর্চার
একটি
শাখা
হিসেবে
নীতিশাস্ত্রের
পক্ষে
গুরুত্বপূর্ণ
নয়,
আমাদের
থেকে
যারা
অনেকটা
দূরে
বসবাস
করেন,
তাদের
সম্পর্কে
ক্রমে
বেশি
বেশি
করে
জানার
সঙ্গে
সঙ্গে
আমরা
তাদের
জীবন
নিয়ে
আরো
বেশি
ভাবিত
হব
কিনা,
সেই
ধারণার
ওপরেও
এ
বোধের
প্রভাব
পড়ে।
হিউম
স্পষ্টত
মনে
করতেন
যে
মানুষের
সংবেদনে
অন্যদের
জীবন
সম্পর্কে
চিন্তার
প্রতিফলন
ঘটবে,
এটা
বাস্তবিকই
একটি
যুক্তিসম্মত:
দূরদেশের
বাসিন্দাদের
সম্পর্কে
বেশি
বেশি
করে
জানতে
পারাটা
মানুষের
সংবেদনের
ওপর
স্বভাবতই
প্রভাব
ফেলবে।
বস্তুত
হিউমের
মতে,
আমাদের
চিন্তাভাবনার
পরিসর
বাড়ানোর
ব্যাপারটা
কেবল
যুক্তির
দাবি
মেনেই
ঘটে
এমন
নয়,
আমাদের
সংবেদনগুলো
কিসের
দ্বারা
প্রভাবিত
হচ্ছে,
সেটাও
এক্ষেত্রে
গুরুত্বপূর্ণ।
তার
এ
দাবিটাকে
উড়িয়ে
দেয়া
যে
সম্ভব
নয়,
সেটা
তার
অন্য
এক
প্রসঙ্গে
করা
একটি
মন্তব্য
থেকে
পরিষ্কার:
যেসব জিনিস
আমাদের প্রভাবিত করে সেগুলোকে আমরা অলীক
কল্পনা বলে
মেনে নিতে
পারি না।
এবং যেহেতু
আমাদের সংবেদনগুলো কোনো না
কোনো একটা
দিকে কাজ
করে, তাই
স্বাভাবিকভাবেই আমরা
মনে করি
যে প্রশ্নটা আমাদের বোঝার
আওতার মধ্যেই
আছে; এ
ধরনের অন্য
ব্যাপারগুলোয় আবার
আমাদের নানা
সংশয়ও থাকতে
পারে।
এক্ষেত্রে যুক্তি
ও
ভাবাবেগের
যে
সংগতি
দেখতে
পাওয়া
যাচ্ছে,
তা
হিউমের
একটি
সাধারণ
দাবির
সঙ্গে
সাযুজ্যপূর্ণ,
যে
দাবি
তিনি
অন্য
জায়গায়
করেছেন।
তিনি
বলছেন,
‘যাবতীয়
নীতিগত
মীমাংসায়
ও
সিদ্ধান্তে
যুক্তি
এবং
আবেগ
একই
জায়গায়
পৌঁছে।’
তার
দাবির
ধরনটার
মধ্যে
খানিকটা
বাড়াবাড়ি
আছে
বটে
(এবং হিউম
এ
ধরনটাকে
কখনই
ত্যাগ
করতে
চাননি)
কিন্তু
যুক্তি
ও
সংবেদনের
এমন
যুগল
বন্ধন
যে
সহজেই
ঘটতে
পারে,
এ
কথাটা
দুটো
কারণে
আমাদের
মাথায়
রাখা
দরকার।
প্রথমত,
হিউমের
অনেক
আলোচনায়
এ
যুগল
বন্ধনের
ব্যাপারটি
আসেইনি
(অন্তত স্বতঃস্ফূর্তভাবে
আসেনি)।
দ্বিতীয়ত,
‘সংক্ষেপে
ডেভিড
হিউম’-এর
নামে
যেসব
ব্যাখ্যা
চালু
আছে
সেগুলোয়
প্রধানত
হিউমের
সেই
মন্তব্যগুলোকেই
তুলে
ধরা
হয়ে
থাকে,
যেগুলোয়
তিনি
নৈতিকতার
ক্ষেত্রে
যুক্তির
ভূমিকাকে
অবজ্ঞা
করে
সংবেদনের
ভূমিকাকেই
প্রধান
বলে
তুলে
ধরছেন;
কিন্তু
হিউম
যে
এ
দুটোকে
পরস্পর-সম্পর্কিত
হিসেবে
দেখছেন,
সেই
দিকটা
অনুল্লিখিত
থেকে
যায়।
‘সংক্ষেপে হিউম’-এর নামে প্রায়ই যেটা প্রচার করা হয়, সেখানে বেছে বেছে তার সেই উদ্ধৃতিগুলো ব্যবহার করা হয়, যেগুলোতে হিউম যুক্তিভিত্তিক নৈতিকতার সম্ভাব্যতার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করছেন। এ রকম বেছে নেয়া উদ্ধৃতির একটা উদাহরণ হলো, হিউমের এ ধারণা যে ‘যুক্তি হলো আবেগের দাস’ কিংবা তার এই মত যে ‘নৈতিকতার নিয়মগুলো...যুক্তিনির্ভর বিশ্লেষণ থেকে পাওয়া সিদ্ধান্ত হিসেবে উঠে আসে না।’ যুক্তি ও নৈতিকতার সম্পর্ক নিয়ে হিউম এত ভিন্ন ভিন্ন মত দিয়েছেন যে এ নিয়ে তার সামগ্রিক অবস্থান সম্পর্কে কোনো নিশ্চিত ব্যাখ্যা দেয়া আমার পক্ষে বেয়াদবির শামিল হবে। তা সত্ত্বেও আমাদের এটা মাথায় রাখা দরকার যে এইমাত্র তার যুক্তি ও নৈতিকতার সম্পর্ক নিয়ে যে উদ্ধৃতিটি তুলে ধরা হলো, তার ঠিক আগেই হিউম স্পষ্টভাবে বলছেন: ‘নৈতিকতাই আবেগকে (প্যাশনস) উদ্দীপ্ত করে এবং এটিই কর্মকে সচল কিংবা নিষ্ক্রিয় করে। এই সুনির্দিষ্ট সম্পর্কের ক্ষেত্রে যুক্তি একান্ত নিজের জোরে কিছু করে উঠতে পারে না।’ (বাঁকা হরফ আমার) আমি হিউম ‘একান্ত নিজের জোরে’ বলে যে শর্তটি রাখছেন, তার দিকে নজর দিতে বলব। হিউম এখানে এমন দাবি করছেন না যে নৈতিকতা কিংবা কর্মে উদ্দীপনার জন্য যুক্তি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তার বক্তব্যটা হলো এই যে, যুক্তি কেবল নিজের জোরেই এটা অর্জন করতে পারে না।
[চলবে]
অমর্ত্য সেন: অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী, বর্তমানে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যামন্ট ইউনিভার্সিটি প্রফেসর
দ্য
নিউ
রিপাবলিক
থেকে
ভাষান্তর: আহমেদ
জাভেদ
সভাপতি, বাঙলার পাঠশালা ফাউন্ডেশন