জানুয়ারি-মার্চ

ভালো ব্যবসা করেছে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট কোম্পানিগুলো

মেহেদী হাসান রাহাত

বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের কোম্পানিগুলো ভালো ব্যবসা করেছে। মূলত কভিডের সময়েও সরকারি-বেসরকারি খাত থেকে সিমেন্টের ভালো চাহিদা থাকায় কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সময়ে তালিকাভুক্ত সাতটি সিমেন্ট কোম্পানির মধ্যে পাঁচটিরই ব্যবসা বেড়েছে। কমেছে একটির আর এখনো একটি কোম্পানির আর্থিক ফলাফল প্রকাশিত হয়নি।

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই তিন মাসে আরামিট সিমেন্টের রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় শতাংশ কমে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অবশ্য সময়ে কোম্পানিটি আগের বছরের লোকসান কাটিয়ে কোটি ৪৩ লাখ টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। এদিকে গত বছরের জুলাই থেকে বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দশমিক ৬১ শতাংশ কমে ১৫৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

চলতি বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে হাইডেলবার্গ সিমেন্টের বিক্রি হয়েছে ৫৫০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ৩৮২ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৪৬ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ১০ গুণের বেশি।

লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশের রাজস্ব আয় বছরের জানুয়ায়ি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেড়ে ৬৩১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ১০৩ কোটি টাকা। যেখানে আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা হয়েছিল ৫২ কোটি টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে ৯৮ শতাংশ। মূলত বাজারে নতুন সিমেন্ট আনার পাশাপাশি চুনাপাথর চিপের ব্যবসা থেকে আয় যোগ হওয়ার কারণে কোম্পানিটির বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া প্রচলিত সিমেন্টের ব্যবসায়ও প্রবৃদ্ধি হয়েছে কোম্পানিটির।

বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে মেঘনা সিমেন্ট মিলসের রাজস্ব আয় হয়েছে ২৮২ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ২২৫ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৬৬ শতাংশ। আর গত বছরের জুলাই থেকে বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেড়ে ৭৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ে আগের বছরের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ।

বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে এমআই সিমেন্ট ফ্যাক্টরির রাজস্ব আয় হয়েছে ৫১১ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় ছিল ৪৪৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা বেড়েছে গুণেরও বেশি। গত বছরের জুলাই থেকে বছরের মার্চ পর্যন্ত সময়ে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় শতাংশ বেড়ে হাজার ২২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। আর সময়ে কোম্পানিটি গত বছরের লোকসান কাটিয়ে ৭০ কোটি টাকা নিট মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলসের রাজস্ব আয় বছরের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেড়ে ৩৬৩ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে আট গুণেরও বেশি। গত বছরের জুলাই থেকে বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেড়ে ৯৫৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির নিট মুনাফা বেড়েছে তিন গুণ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের প্রথম তিন মাসে বাজারে সিমেন্টের চাহিদা বেশ ভালো ছিল। পাশাপাশি ব্যাংকের সুদের হার কমে যাওয়ার কারণে কোম্পানিগুলোর আর্থিক ব্যয় আগের তুলনায় বেশ কমে গেছে। ফলে ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি ব্যয় কমে যাওয়ার কারণে সময়ে কোম্পানিগুলোর মুনাফায় উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

জানতে চাইলে প্রিমিয়ার সিমেন্ট মিলসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মো. শফিকুল ইসলাম তালুকদার বণিক বার্তাকে বলেন, কভিড সত্ত্বেও বছরের প্রথম তিন মাসে সিমেন্টের চাহিদা ভালো ছিল। মূলত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সিমেন্টের বিক্রি বেশি হয়। গত কয়েক মাসে আমাদের চাহিদা এমন ছিল যে নিজেদের যতটুকু সক্ষমতা ছিল সেটি দিয়ে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। অন্য কারখানা থেকে সিমেন্ট উৎপাদন করে চাহিদা মেটাতে হয়েছে। আশা করছি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের অত্যাধুনিক ভিআরএম কারখানার উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে। তখন আমাদের বিদ্যমান দৈনিক আট হাজার টন সক্ষমতার সঙ্গে আরো ১১ হাজার টন যোগ হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন