দোহারে অবৈধ নৌঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার, লোকসানে ইজারাদার

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, নবাবগঞ্জ

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে ঢাকার দোহার উপজেলার বিলাশপুরে পদ্মা তীরে অবৈধভাবে নৌঘাট স্থাপন করে টোল আদায় করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ ফরিদপুর চরভদ্রাসনের শাহীন আনোয়ার ওরফে বাবুল সিকদার তার ছেলে আরাফাত হোসেনের বিরুদ্ধে। তাদের কর্মকাণ্ডে কতিপয় প্রভাবশালী চক্র জড়িত রয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। নিয়ে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন-ঢাকার দোহারের মৈনট আন্তঃজেলা ফেরিঘাটের ইজারাদার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

দোহারের মৈনট ঘাট-ফরিদপুরের চরভদ্রাসন আন্তঃজেলা লঞ্চ ফেরিঘাটের ইজারাদার আব্দুল আলী মৃধার দাবি, দোহারের বিলাশপুর এলাকায় ফরিদপুর চরভদ্রাসনের বাবুল সিকদার তার ছেলে আরাফাতের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট রয়েছে। মধ্যে সরকারি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে বিলাশপুর-সদরপুরের আকোটচরে স্পিডবোটসহ বিভিন্ন নৌযানের মাধ্যমে লোকজন পারাপার করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। ফলে কোটি ২৮ লাখ টাকায় নেয়া মৈনট ঘাট-চরভদ্রাসন আন্তঃজেলা লঞ্চ ফেরিঘাটের ইজারাদারসহ ঘাটসংশ্লিষ্ট সবাই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ আছে। বিষয়ে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) বরাবর তিনি একটি অভিযোগ করেছেন বলেও জানান। কমিশনার কার্যালয়ের রাজস্ব শাখা বিলাশপুরের অবৈধ ঘাটের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দোহার এবং ফরিদপুরের চরভদ্রাসন সদরপুরকে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নিতে বলেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফরিদপুর জেলার সদরপুর চরভদ্রাসন উপজেলা সীমান্তবর্তী আব্দুল সিকদারের ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম সদরপুরের আকটেরচর-দোহারের জোয়ার নারিশা ঘাট এলাকা ইজারা নেন। কিন্তু পিয়াজখালী-নারিশা জোয়ার মাদ্রাসাঘাট জনৈক আরাফাতের নামে ইজারা নেয়া হলেও জোরপূর্বক আন্তঃজেলা ঘাটের এলাকা বিলাশপুর ঘাট থেকে যাত্রী পারাপার করছেন। এখানে আরাফাতের পক্ষে বাবুল সিকদারের মাধ্যমে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে থাকেন নুরুল ইসলাম বিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে নুরুল ইসলাম ফোন কেটে দেন। পরে তার নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।

খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, নুরুল ইসলাম পাটনির পক্ষে বাবুল সিকদার তাদের নিজ ইজারাকৃত এলাকায় ঘাট স্থাপন না করে, স্থানীয় প্রভাবশালী লোকের মাধ্যমে দোহার উপজেলার বিলাশপুরে পদ্মার তীরে অবৈধ ঘাট স্থাপন করে স্পিডবোটসহ বিভিন্ন নৌযানের মাধ্যমে লোকজন পারাপার করছেন।

অভিযুক্তহ বাবুল সিকদার বলেন, আমি বিলাশপুর ঘাট ইজারা নিয়েছি। তবে তার কথার সত্যতা মেলেনি। সরকারি কাগজপত্রে তাদের ইজারাকৃত এলাকা হচ্ছে পিয়াজখালী- চরবলাশিয়া, মাদ্রাসাঘাট, কৃষ্ণদেবপুর, বাঁশতলা, নারিশা জোয়ার আন্তঃজেলা ঘাট। কিন্ত তিনি এসব এলাকা ব্যবহার না করে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন আন্তঃজেলা ঘাটসংলগ্ন এলাকা দোহার উপজেলার বিলাশপুরে অবৈধ ঘাট বসিয়ে ছেলে আরাফাত হোসেনসহ তার নিয়োজিত কর্মচারীদের মাধ্যমে টোল আদায় করছেন।

বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএফএম ফিরোজ মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিলাশপুর ঘাটটি অবৈধ। আমরা কমিশনার অফিসের একটি লিখিত নির্দেশ পেয়ে এর আগে বেশ কয়েকবার পুলিশ পাঠিয়ে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া সদরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কথা বলেছি।

বিষয়ে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূরবী গোলদার বলেন, শুনেছি বিভাগীয় কমিশনারের অফিস থেকে তারা বিলাসপুর ঘাট ইজারা নিয়েছে। বিলাসপুর ঘাট তো কাগজপত্রে নেই, তাহলে কীভাবে নিলেন তারা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়ে আমি কিছু জানি না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন