দিনাজপুরের হিলিতে আড়তদাররা না কেনায় কমে গেছে চলতি মৌসুমের বোরো ধানের দাম। ঈদের আগে যে ধান প্রতি মণ ৯৪০-৯৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে সেই ধান ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আড়তদারদের কারসাজিতে দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
হিলির মালেপাড়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, আমরা ধান নিয়ে আড়তদারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। বিভিন্ন আড়ত ঘুরেও ধান বিক্রি করতে পারছি না। দু-একজন আড়তদার ধান কিনতে চাইলেও ধানের দাম মণপ্রতি ৭০-৮০ টাকা কম বলছেন।
তিনি বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হওয়ায় ভালো দাম পাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন কৃষকরা। প্রথম দিকে ধানের দাম ভালোই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করে দাম কমে গেছে। ফলে লাভ তো দূরে থাক উৎপাদন ব্যয় পুষিয়ে নিতে পারব কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
হিলির জালালপুর গ্রামের কৃষক সুজন হোসেন বলেন, এভাবে হঠাৎ করে ধানের দাম কমে যাওয়া আড়দারদের কারসাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। তারা সিন্ডিকেট করে ধান কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে দাম কমে গেছে।
হিলির চারমাথা মোড়ের আড়তদার শাহ মোহাম্মদ বলেন, ঈদের আগের দিন থেকে ধান কেনা বন্ধ রেখেছিলাম। গতকাল ধান কেনা শুরু করেছি। আমরা যেসব মোকামে বা মিলে ধান দিই সেসব মিলে ঈদের কারণে শ্রমিকদের ছুটি থাকায় মিলাররা আপাতত ধান কেনা বন্ধ রেখেছেন। তবে দু-একজন ধান কেনা অব্যাহত রেখেছেন। গতকাল থেকে মিল চালু হয়েছে। তবে ধান কেনা বন্ধ থাকায় ধানের দাম কিছুটা কমেছে। ঈদের আগে জিরা ধান মণপ্রতি ৯৪০-৯৫০ টাকা, কাটারি জাতের ধান ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হতো। বর্তমানে জিরা ধান মণপ্রতি ৯০০ ও কাটারি ধান ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাকিমপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে সরকার হাকিমপুর উপজেলায় ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছে। এ উপজেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্য ১ হাজার ১৫ টন নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৮ এপ্রিল কৃষকের কাছ থেকে চলতি মৌসুমের ধান সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। আড়তদাররা ধান কিনছেন না এবং সিন্ডিকেট করে দাম কমাচ্ছেন, কৃষকদের এমন অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে। প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।