বিদেশে যেতে পারবেন না খালেদা জিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপি চেয়ার পারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের আবেদন নাকচ করে দিয়েছে সরকার। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে সরকারের অবস্থানের কথা জানান। মে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করেন তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবিক কারণে ৪০১ ধারায় দণ্ড স্থগিত রেখে খালেদা জিয়াকে তার সুবিধামতো চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। তিনি বাসায় থেকে কিংবা সুবিধামতো চিকিৎসা নিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে করোনা আক্রান্ত হলে তিনি এভার কেয়ার হাসপাতালেও চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার বিদেশে নেয়ার জন্য আবেদন করেন। সেটার আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখার জন্য আমরা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিলাম। তারা মতামত দিয়েছেন, যে ধারায় তার দণ্ড স্থগিত রেখে চিকিৎসা সুবিধা দেয়া হয়েছে, সেটা পুনরায় বিবেচনা করে বিদেশে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। তাই আমরা তাদের আবেদনটি মঞ্জুর করতে পারছি না।

এর আগে গতকাল সকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের মতামত দিয়ে পাঠানো নথিটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতে বলা হয়, সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির দেশের সীমানার বাইরে যাওয়ার বা পাঠানোর কোনো সুযোগ আইনে নেই। এক্ষেত্রে খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত। তাকে বিদেশে পাঠাতে হলে আগে তার দণ্ড মওকুফ করতে হবে। আদালত যেহেতু তাকে সাজা দিয়েছেন, তাই তার দণ্ড মওকুফের একমাত্র ক্ষমতা আছে রাষ্ট্রের। এখন রাষ্ট্রই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা দণ্ডাদেশ স্থগিত করে যে শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়া হয়েছিল, তা শিথিল করে এখন তাকে বিদেশে যেতে দেয়ার সুযোগ নেই।

গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার গুঞ্জন ওঠে। পরদিন ১১ এপ্রিল জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকে খালেদা জিয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে বিএনপি। সে সময় খালেদা জিয়া ছাড়াও তার বাসভবন ফিরোজায় আরো আট জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। গত ২৪ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় খালেদা জিয়ার করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, খুব লো টাইপের সংক্রমণ ধরা পড়েছে তার (খালেদা জিয়া)

৭৫ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তিন বছর আগে দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাগারে যান। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ২৫ মার্চ মানবিক বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয় সরকার। তাকে মোট দুই দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে আমরা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত হতাশ ক্ষুব্ধ। কথা অত্যন্ত সত্য যে একটা মিথ্যা মামলা সাজিয়ে তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্যটা ছিল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া।

গতকাল রাতে এভার কেয়ার হাসপাতালে দলীয় নেত্রীর স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে যান বিএনপি মহাসচিব। সেখান থেকে ফিরে তিনি বলেন, যে ধারাতে দেশনেত্রীর সাজা স্থগিত করেছে, ওই ধারাতেই কিন্তু তাকে বিদেশে যাওয়া বা একেবারেই সাজা-দণ্ড মওকুফ করার যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ দেয়া আছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন