পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক এক বা একাধিক কমিশনার বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের ইন্ধনে বিগত সময়ে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করেছিল বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিয়াজ ইসলাম। তিনি গতকাল রাজধানীর প্রগতি সরণিতে আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন অ্যামচেমের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ এরশাদ আহমেদ। রিয়াজ ইসলাম বলেন, আমরা ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আমরা ভালোই ছিলাম। এ সময় আমাদের বেশ প্রবৃদ্ধিও হয়েছিল। কিন্তু এর পরই বিভিন্ন মহলের স্বার্থ রক্ষার জন্য ২০১৫ সাল থেকে আমাদের ওপর হয়রানি করা শুরু হয়। যা গত বছরের শেষ অবধি বজায় ছিল। তার ভাষায়, ‘বিএসইসির সাবেক দুজন কমিশনার আমাদের জীবন হেল করে দিয়েছিল। সে সময় বিএসইসিতে নেতৃত্বের অভাব ছিল। তবে এখন আমরা সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসেছি। বর্তমান কমিশনের কাছ থেকে আমরা সহযোগিতা পাচ্ছি।’
এ সময় সাবেক দুই কমিশনারের নাম জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, তারা কারা এটা আপনারা সবাই জানেন। যেহেতু তারা আর এখন কমিশনে নেই, সাবেক হয়ে গেছেন সেহেতু আমি এখানে তাদের নাম বলতে চাইছি না। তবে সে সময় আমাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছিল তার ৯৯ ভাগই বানোয়াট। কমিশনের হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিকার পেতে আমরা আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছি। বর্তমান কমিশনের সঙ্গে আমাদের একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। তারা পুঁজিবাজারের উন্নয়নে বেশ আগ্রহী। ফলে কমিশনের সহযোগিতায় সামনের দিনগুলোতে মিউচুয়াল ফান্ড আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছি।
বাংলাদেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাত প্রত্যাশা অনুসারে গড়ে উঠতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফান্ডের সম্পদমূল্যের (এনএভি) তুলনায় স্টক এক্সচেঞ্জে এগুলোর ইউনিট দর বেশ কম। অথচ ইউনিট দর এনএভির কাছাকাছি থাকাটাই উচিত ছিল। অনেকেই ফান্ডের পোর্টফোলিওতে কী সম্পদ রয়েছে সেগুলো ভালো করে দেখে না। বিনিয়োগের আগে ফান্ডের পোর্টফোলিও ভালো করে পর্যালোচনা করে এনএভির যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে বিনিয়োগ করা উচিত।
মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডগুলোর মেয়াদ আরো ১০ বছর বাড়ানোর বিষয়টি সঠিক ছিল না বলে মনে করেন রিয়াজ ইসলাম। এ বিষয়ে তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ডের ওপর থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাওয়ার এটি অন্যতম কারণ। যদিও আমি নিজেও মেয়াদ বাড়ানোর সুবিধা নিয়েছি। তবে আইনানুসারে এটি বৈধ বলেই আমি সেটি নিয়েছি। তবে আবারো বলছি মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়টি আমি নিজেও সমর্থন করি না।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে বিনিয়োগের যে পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা কাজে লাগাতে এলআর গ্লোবাল অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে চায়। কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সংস্কারসহ সামগ্রিকভাবে স্বচ্ছ ও বিনিয়োগবান্ধব একটি পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান কমিশন। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তথ্য আর বিনিয়োগ-সম্পর্কিত জ্ঞানের ঘাটতি রয়েছে। এলআর গ্লোবাল এ ঘাটতি পূরণে সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে চায়।