শক্তিশালী গৃহস্থালি ব্যয়

৭০ বছরের মধ্যে দ্রুত বাড়ছে ব্রিটিশ অর্থনীতি

বণিক বার্তা ডেস্ক

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কভিড-১৯ মহামারীজনিত বিধিনিষেধের মধ্যে ছিল যুক্তরাজ্য। এরপর মার্চ থেকে বিধিনিষেধ শিথিল করতে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সরকার। এপ্রিলের শুরুর দিকে খুলে দেয়া হয় খুচরা পণ্যের দোকান রেস্তোরাঁগুলো। এর মধ্যেই কয়েক দশকের মাঝে শক্তিশালী গৃহস্থালি ব্যয়ের দেখা পেয়েছে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক চলতি বছর অর্থনীতি দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পূর্বাভাস দিয়েছে। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড জানিয়েছে, বিধিনিষেধ প্রত্যাহার হওয়ায় ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হবে ৭০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। খবর বিবিসি।

চলতি বছর যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়বে বলে আশা করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ১৯৪৯ সালে সরকারি রেকর্ড শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ। এর আগের বছর অর্থনীতিটি মহামারীজনিত বিধিনিষেধের কারণে দশমিক শতাংশ সংকোচনের মুখোমুখি হয়েছিল, যা দেশটির ৩০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি পুনরুদ্ধারকে শক্তিশালী হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি এটাকে বিশাল বৃদ্ধির চেয়ে বরং দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধির উত্থান অবশ্যই সুসংবাদ। আর কারণে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি ২০১৯ সালের স্তরে ফিরে আসবে। আমরা বছর ধারাবাহিক পুনরুদ্ধারও দেখতে যাচ্ছি। তবে আমরা যদি একটু পেছনে ফিরে তাকাই তাহলে দেখতে পাব, অর্থনীতির কোনো প্রবৃদ্ধি ছাড়ায় দুই বছর অতিবাহিত হয়েছে।

ব্যাংকের নীতিনির্ধারকরা সুদহারকে রেকর্ড সর্বনিম্ন শূন্য দশমিক শতাংশ বজায় রাখার ঘোষণার পর তিনি বক্তব্য দেন। যুক্তরাজ্যে টিকাদান কার্যক্রম ভোক্তাদের আস্থা বাড়িয়ে তুলবে বলেও আশা করা হচ্ছে। খুচরা পণ্যের দোকান রেস্তোরাঁগুলো খুলে যাওয়ায় শক্তিশালী গৃহস্থালি ব্যয় ফিরে এসেছে।

ব্যাংকটির মতে, বেশির ভাগ মানুষ ঘর থেকে কাজ করায় গত এক বছরে বিশেষত উচ্চ উপার্জনকারী ব্যক্তিরা ১৫ হাজার কোটি পাউন্ডেরও বেশি সঞ্চয় করেছেন। অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসায় তারা এই অতিরিক্ত নগদের ১০ শতাংশ ব্যয় করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। হার আগের পূর্বাভাসের তুলনায় দ্বিগুণ। চলতি বছর গৃহস্থালি ব্যয়ের প্রবৃদ্ধি মার্গারেট থ্যাচার প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ১৯৮৮ সালের পর সর্বোচ্চ হবে। আর কারণে ২০২২ সালের প্রথম দিকের পরিবর্তে চলতি বছরের শেষ দিকেই অর্থনৈতিক উৎপাদন মহামারীপূর্ব সময়ের স্তরে ফিরে আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

যুক্তরাজ্যজুড়ে পর্যায়ক্রমে বিধিনিষেধ শিথিলের অংশ হিসেবে গত মাসে অতিপ্রয়োজনীয় নয় এমন দোকান, বার রেস্তোরাঁগুলো খুলে দেয়া হয়। ব্যাংকের সমীক্ষায় দেখা গেছে, ব্যবসার প্রথম কয়েক দিনের দোকানে যাওয়া ক্রেতাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। এমনকি প্রচুর লোক বিদেশের পরিবর্তে দেশকেই ছুটি কাটানোর বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছিল এবং সেটা করোনাপূর্ব সময়ের চেয়ে বেশি ছিল।

অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক গত মার্চে দেয়া বাজেটে কর্মীদের মজুরিতে ভর্তুকি দেয়ার ফোরলগ স্কিমটি সেপ্টেম্বরের শেষ অবধি বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন। অর্থনীতি পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত চলমান সহায়তা বেকারত্ব বৃদ্ধিকে উল্লেখযোগ্যভাবে সীমাবদ্ধ করবে। ব্যাংকটি আশা করছে, বছরের শেষ নাগাদ বেকারত্বের হার দশমিক শতাংশে নামবে। এটা গত ফেব্রুয়ারিতে পূর্বাভাস দেয়া দশমিক ৭৫ শতাংশের চেয়ে অনেক কম।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন