২০৩০ সালের মধ্যে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা ১৪ কোটি ছাড়াবে

বণিক বার্তা ডেস্ক

নানা সুবিধার কারণে গোটা বিশ্বের মানুষেরই আগ্রহ বাড়ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি বা ইলেকট্রিক ভেহিকলের (ইভি) প্রতি। বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোয় আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। ফলে ভবিষ্যৎ গাড়ির বাজার ধরতে নিত্যনতুন সুবিধাসম্পন্ন ইভি তৈরিতে ঝুঁকছে গাড়ি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও। সব মিলিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের সড়কগুলোয় ঘুরে বেড়াবে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি বৈদ্যুতিক গাড়ি। এর মধ্যে থাকবে কার, ভ্যান, ট্রাক বাস। ফলে বিশ্বে প্রতিদিন যে মিলিয়ন ব্যারেল তেলের চাহিদা থাকে, সেটিও অনেক কমে যাবে। খবর ব্লুমবার্গ

ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সির (আইইএ) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সরকারগুলো যদি কার্বন নিঃসরণ কমাতে কম কার্বন উৎপাদন করেএমন যানবাহন তৈরির প্রতি উৎসাহ দেয়, তাহলে সংখ্যা আরো বাড়বে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক জলবায়ুর লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা হতে পারে ২৩ কোটি। আইইএ জানিয়েছে, মহামারীর মধ্যেও ২০২১ সালের প্রথম প্রান্তিকে গত বছরের তুলনায় বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে আড়াই গুণ।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে গত বছর বিশ্বের গাড়িবাজারে সংকোচনের হার ছিল ১৬ শতাংশ। তবে এর পরেও বিশ্বজুড়ে ৩০ লাখ নতুন ইলেকট্রিক ভেহিকলের নিবন্ধনের খবর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে এখন বিশ্বজুড়ে সড়কে চলছে এক কোটি বৈদ্যুতিক গাড়ি। এর মধ্যে অন্তত ১০ লাখ ভ্যান, ভারী ট্রাক বাস রয়েছে।

এদিকে বৈদ্যুতিক গাড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়াকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন জ্বালানি শিল্প খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা মনে করছেন, বৈদ্যুতিক গাড়ির এই বৃদ্ধি তেল খাতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। খাতটি পরিবহনের জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল, ফলে যানবাহনগুলোর তেলনির্ভরতা কমে গেলে তা খাতটির জন্য চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

এখন গোটা পৃথিবীতে প্রতিদিন ২০ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল, অর্থাৎ ডিজেল পেট্রল প্রয়োজন হয়। এখন বিশ্বে যে জলবায়ু নীতিমালা রয়েছে, সেটি মেনে চললে বৈদ্যুতিক গাড়ি এই বিপুল পরিমাণ তেলের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে দিতে পারে। আর এর মাধ্যমে ১২ কোটি টন সমপরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ বাঁচানো যেতে পারে।

যদি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার চায় যে তাদের দেশের সড়কে বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণ কমাবে তাহলে একদিনে ৩৫ লাখ ব্যারেল তেলের খরচ কমানো সম্ভব। ফলে কার্বণ নিঃসরণ কমবে দ্বিগুণেরও বেশি।

বৈদ্যুতিক গাড়ির কারণে বৈশ্বিক অটোমোটিভ শিল্পে লাখ কোটি ডলার বিনিয়োগ শুরু হয়েছে। আইইএ বলছে, ভোক্তারা গত বছর বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য ১২ হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছেন, যা এর আগের বছরের তুলনায় ৫০ শতাংশ বেশি। বাজারে এখন ৩৭০টি মডেলের বৈদ্যুতিক গাড়ি রয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় মডেলও বেড়েছে ৪০ শতাংশ।

সংস্থাটি আশা করছে, ইলেকট্রিক গাড়ির ব্যাটারি প্রযুক্তিতে উন্নয়ন ঘটিয়ে এবং প্রচুর পরিমাণে গাড়ি উৎপাদনের মাধ্যমে এর দাম কমানো সম্ভব হবে। সুতরাং এখন সরকারগুলো ইচ্ছা করলেই কার্বন নিঃসরণ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির ওপর জোর দিতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন