বান্দরবানে এলজিএসপি প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, বান্দরবান

লোকাল গভর্নমেন্ট সাপোর্ট প্রকল্পের (এলজিএসপি-) আওতায় জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের দুর্গম এলাকায় একটি রাস্তার উন্নয়নকাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলজিএসপির প্রকল্পটির কাজ নিয়ম মেনে শেষ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউনিয়নটির চেয়ারম্যান। অন্যদিকে পাড়াবাসী সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড মেম্বারের বক্তব্যে অমিল থাকলেও উভয়পক্ষ জানিয়েছে প্রকল্পটি দেড় বছরেও সম্পন্ন হয়নি।

জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট রোয়াংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ব্লক গ্রান্ট কো-অর্ডিনেশন কমিটির (বিজিসিসি) এক সভায় ২০১৭-১৮ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রাপ্ত অর্থ থেকে উপজেলার চার ইউনিয়নের জন্য ২৮টি স্কিম অনুমোদন পায়। এর মধ্যে আলেক্ষ্যং ইউনিয়নের ছয়টি স্কিম রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো ইউনিয়নটির নং ওয়ার্ডের তারাছাপাড়া থেকে স্বর্গ সিঁড়ি পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন। স্কিমের বরাদ্দের পরিমাণ লাখ টাকা।

জানা গেছে, তারাছাপাড়া থেকে স্বর্গ সিঁড়ি পর্যন্ত ব্যবধান রয়েছে আনুমানিক দেড় কিলোমিটার। স্কিম অনুযায়ী জঙ্গলাকীর্ণ কাঁচা রাস্তা মানুষের চলাচল সহনশীল করতে উন্নয়ন করার কথা। কিন্তু সে অনুযায়ী কাজ হয়নি।

খোঁজ নিলে পাড়াবাসী জানায়, গত বছরের এপ্রিল মাসে ওয়ার্ড মেম্বার মুজিরা তঞ্চঙ্গ্যা পাড়ার ১৮টি পরিবারের প্রতি পরিবার থেকে একজন করে পুরুষ নিয়ে দৈনিক ৩০০ টাকা হারে শুধু একদিন রাস্তা উন্নয়নের কাজ করিয়েছেন, যা আনুমানিক দেড় কিলোমিটার রাস্তার ১০ ভাগের এক ভাগ কাজ হয়েছে। এরপর রাস্তায় আর কোনো কাজ হয়নি।

পাড়ার ১৮ জনকে নিয়ে একদিন রাস্তার কাজ করানোর কথা স্বীকার করেছেন ইউপি মেম্বার মুজিরা তঞ্চঙ্গ্যা। তিনি দাবি করেন, কোনোদিন ১৮ জন আবার কোনোদিন ১৯ জন মানুষ নিয়ে জনপ্রতি দৈনিক ৩৫০ টাকা মজুরিতে ছয়দিন রাস্তা উন্নয়নের কাজ করেছি বলে দাবি তার। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা রাস্তা উন্নয়নের জন্য প্রথমে ১১ হাজার টাকা দেন। এর ২৫ দিন পর আরো ৩০ হাজার টাকা মিলে দুই কিস্তিতে মোট ৪১ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। তবে রাস্তা উন্নয়নের কাজ শেষ হয়নি। তাছাড়া প্রকল্পে কত টাকা বরাদ্দ, তা জানা নেই বলে জানান তিনি।

মেম্বারকে টাকা দেয়ার বিষয় এড়িয়ে যান আলেক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিশ্বনাথ তঞ্চঙ্গ্যা। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, রাস্তা উন্নয়নের কাজটি কত টাকার তা খেয়াল নেই। রাস্তা উন্নয়নের কাজ মেম্বার করেছেন। হয়তো কন্ট্রাক্টে কাউকে না কাউকে দিয়ে করিয়েছে। স্কিমে যে রকম আছে, সে রকম করেছি। কাজ শেষ হয়েছে বলে দাবি তার।

এলজিএসপির জেলা ফ্যাসিলেটর (ডিএফ) রিতেন তালুকদার বণিক বার্তাকে বলেন, এলজিএসপি প্রকল্প কাজে কোনো ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই। শিগগির তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন