জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদযাত্রা না করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে নিজ নিজ অবস্থানে থেকেই আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভ্রমণ করোনাভাইরাসের বিস্তার আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রটোকলগুলো বজায় রাখতে এবং অত্যন্ত জরুরি না হলে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকতে আপনাদের সবার কাছে আমার অনুরোধ রইল।

গতকাল নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার নবসৃষ্ট অবকাঠামো জলযান উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে এসব উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, জীবন সবার আগে। বেঁচে থাকলে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ উপলক্ষে সবাই ছোটাছুটি না করে যে যেখানে আছেন সেভাবেই ঈদটা উদযাপন করেন। আর যারা বিত্তশালী আছেন যদি দুস্থদের একটু সহযোগিতা করেন, সেটা আরো বেশি সওয়াবের কাজ হবে বলে আমি মনে করি।

অনুষ্ঠানে নৌযানে যাতায়াতকারী পরিচালনাকারী সবাইকেই সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যেসব নৌযান চলাচল করে, প্রত্যেকটিরই রেজিস্ট্রেশন থাকা উচিত। তাছাড়া নৌযান চালাতে গেলে কতগুলো নিয়ম মেনে চলতে হবে। হয়তো একটা ঘটনা ঘটল, সবাই একদিকে ছুটে গেলেন সেটা দেখতে। সেখানে কিন্তু নৌকাডুবি ঘটে যায় বা লঞ্চডুবি হয়ে যায়। কাজেই নিয়মগুলো মেনে চলা একান্তভাবে অপরিহার্য।

সরকারপ্রধান বলেন, যারা আমাদের নৌযানগুলো চালান বা পরিচালনা করেন কিংবা যারা ব্যবসা করেন তাদের যাত্রীদের সুরক্ষার দিকটি যেমন দেখতে হবে, যাত্রীদেরও নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। ঠেলাঠেলি করে একসঙ্গে বেশি উঠতে গিয়ে তারপর একটা দুর্ঘটনা হবে এবং নিজেদের জীবন চলে যাবে। ব্যাপারে সবাইকে একটু সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ থাকতে হবে।

আনরেজিস্টার্ড ফিটনেস বিহীন নৌযান যেন চলাচল করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে যদি আমরা জলযানগুলো পরিচালনা করতে পারি তাহলে কিন্তু দুর্ঘটনা কমবে। সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগ জেলায় মেরিন একাডেমি গড়ে তোলায় সরকারের পদক্ষেপের উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

করোনা সংক্রমণ এড়াতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাটা যাতে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য সবার কাছে আমার অনুরোধ, স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলুন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করা থেকে বিরত থাকুন। কে যে সংক্রমিত সেটা আপনি জানেন না। কাজেই যাতায়াতটা করতে গেলেই সে যখন অন্য জায়গায় যাবে তখন আরো অনেক লোককে করোনা সংক্রমিত করবে এবং তাদের জীবন নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি করবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব . আহমদ কায়কাউস অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

অবকাঠামো জলযানের মধ্যে রয়েছে বিআইডব্লিউটিএর ২০টি কাটার সাকশন ড্রেজার, ৮৩টি ড্রেজার সহায়ক জলযান, প্রশিক্ষণ জাহাজ টিএস ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী (দাদা ভাই), বিশেষ পরিদর্শন জাহাজ পরিদর্শী, নবনির্মিত নারায়ণগঞ্জ ড্রেজার বেজ, বিআইডব্লিউটিসির দুটি উপকূলীয় যাত্রীবাহী জাহাজ এমভি তাজউদ্দীন আহমদ এমভি আইভি রহমান, পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের পায়রা আবাসন পুনর্বাসন কেন্দ্র এলাকায় ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ৫০০ পাকা বাড়ি বিতরণ এবং পাবনা, বরিশাল, রংপুর সিলেট মেরিন একাডেমি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন