সিএসও-এনজিও ফোরামের ওয়েবিনার

রোহিঙ্গা অর্থসহায়তার পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিতের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বাস্তবায়িত কর্মসূচিগুলোকে টেকসই করতে কর্মসূচি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে স্থানীয়দের সক্রিয় অংশগ্রহণ অতি জরুরি। তাছাড়া প্রাপ্ত অর্থের সদ্ব্যবহারের জন্য মাঠ পর্যায়ে রোহিঙ্গা কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দিতে হবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে, এতে পরিচালন ব্যয় কমে এবং রোহিঙ্গারা অধিকতর প্রত্যক্ষ সহায়তা পেতে পারে।

রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) ২০২১ নিয়ে কক্সবাজার সিএসও-এনজিও ফোরাম আয়োজিত রোহিঙ্গা সাড়াদান পরিকল্পনা (জেআরপি) ২০২১: প্রকৃত কার্যকর? নাকি শুধু নামেই কেবল পরিকল্পনা: ভবিষ্যতের চিন্তা করার এটিই সময়: স্থানীয়করণ এবং গণতান্ত্রিক মালিকানা শীর্ষক ওয়েবিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন।

সংস্থাটির কো-চেয়ার রেজাউল করিম চৌধুরী এবং আবু মোর্শেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার- সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, বিশেষ অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং কক্সবাজার জেলায় কভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা অন্যান্য সরকারি কর্মসূচির সমন্বয়কারী মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ। ওয়েবিনারে অতিথি হিসেবে যোগদান করেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ। অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম, দুর্যোগ ফোরামের নঈম গওহর ওয়ারা, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যারিস্টার মনজুর মোরশেদসহ আরো অনেকে।

মূল প্রবন্ধে কোস্ট ট্রাস্টের মো. মজিবুল হক মনির উল্লেখ করেন, ২০১৭ থেকে ২০২০-এর অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিটি রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য গড়ে ৪২৮ ডলার অর্থ সহায়তা এসেছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, প্রতিটি পরিবার খাদ্য এবং খাদ্যবহির্ভূত ত্রাণ, আশ্রয়, বিভিন্ন উপকরণ ইত্যাদি সরাসরি সেবা ত্রাণ পেয়েছে ১৩০ ডলারের, অবশিষ্ট অর্থের কতটুকু অন্যান্য সেবাখাতে খরচ হয়েছে, কতটুকুইবা খরচ হয়েছে পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা খরচ হিসেবে-তার সুস্পষ্ট হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে প্রকাশ করা জরুরি। রোহিঙ্গা সংকটের প্রভাব দীর্ঘ, তাই স্বল্প সময়ের জন্য নয়, রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পরিকল্পনা গ্রহণ বাস্তবায়নে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ না হলে কোনো উদ্যোগই টেকসই হবে না।

সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, রোহিঙ্গা কর্মসূচির জন্য কোনটি প্রয়োজনীয় আর কোনটি বিলাসিতা সেটা চিহ্নিত করতে হবে, অপচয় রোধ করে অর্থের সদ্ব্যবহার করতে হবে। কক্সবাজারের উন্নয়নে সরকারের অনেক মেগা প্রকল্প আছে, কিন্তু রোহিঙ্গা সংকট সামগ্রিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য হুমকি তৈরি করছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এখন সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে রোহিঙ্গাদের নিজের দেশে ফেরত নেয়ার জন্য মিয়ানমারকে বাধ্য করার বিষয়ে।

সিনিয়র সচিব মো. হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংকটে পড়ে যাবে বলেই মনে হচ্ছে, কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের কষ্ট তাই দীর্ঘায়িত হচ্ছে। সংকট মোকাবেলায় কর্মসূচি গ্রহণে তাই স্থানীয়দের মতামত-অংশগ্রহণ প্রাধান্য দিতে হবে। জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, রোহিঙ্গা কর্মসূচিগুলোর কার্যকর বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সুসমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন