ভালো গল্প-বাজেট থাকলে ক্রিয়েটিভিটি দেখানো যায়

বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু, তারপর নাটকে সফল। শুধু টেলিফিল্মেই আটকে নেই, অভিনয় করেছেন ওয়েব কিংবা ওটিটি প্লাটফর্মে। এত সব কাজ যিনি স্বচ্ছন্দে করে যাচ্ছেন, তিনি সাফা কবির বর্তমান সময়ে তার ব্যস্ততা, আসন্ন ঈদকে ঘিরে কাজ নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। আলাপ করেছেন কুদরত উল্লাহ

লকডাউনে ঘরবন্দি জীবন কিংবা শুটিংকী খবর আপনার?

ঘরবন্দিই ছিলাম প্রায় ২১ দিন। ভয়টা কাটেনি এখনো। নতুন করে তেমন কোনো কাজই করিনি। তবে আগেই সময় দিয়ে রাখা কিছু কাজ বাকি ছিল। সেগুলোতে সময় দিতে হয়েছে। এর মধ্যে যদি বলতেই হয় তাহলে ওয়েব প্লাটফর্মের জন্য ভিকি জায়েদের চরের মাস্টারের শুটিং করেছি।

ঈদ উপলক্ষে নতুন কাজ করেছেন?

ইচ্ছে তো ছিলই। অভিনয় করি যেহেতু, কিন্তু পারিপার্শ্বিক যা অবস্থা তাতে মন খুব ভালো নেই। আবার খারাপ করে রাখব তাতেও মানসিক চাপ পড়ে। তাই মোটামুটি ভালোও নেই আবার খারাপও নেই। নতুন কাজ করছি না। কিন্তু ঈদের জন্য আগে যে ডেট দেয়া ছিল তার মধ্যে বাকি আছে কয়েকটা দৃশ্যের কাজ, ওগুলো শেষ করতে হবে। এজন্যই ঘর থেকে বের হব খুব সাবধানে। এছাড়া আর কোনো পরিকল্পনা নেই।

মিডিয়ার অনেক সিনিয়র শিল্পী প্রয়াত হচ্ছেন...

আসলে ব্যাপারে যে কীভাবে ব্যাখ্যা করি ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আপনি খুব খেয়াল করে দেখবেন, প্রথমবার যখন লকডাউন হয় তখন কিন্তু আমরা একটু মেনে চলেছিলাম। কিন্তু এবার দেখুন কী একটা অবস্থা। যেন কেউ কিছু মানতেই চাচ্ছে না। আমি তো এখন নিউজ দেখা, খবরের আপডেট রাখাএসব বন্ধ করে দিয়েছি। কারণ আগে প্রতিদিন শুনতাম অপরিচিত মানুষ মরে যাচ্ছে, কিন্তু এবার এমনভাবে হানা দিয়েছে যে পরিচিত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, কেউ কেউ মরে যাচ্ছে। আমার রোজ কান্না পায়, কিন্তু প্রকাশ করতে পারি না। স্বজন হারানোর বেদনা শুধু যার হারিয়েছে সে- জানে। চেয়ে বলার কিছু নেই আর।

মহামারীর বর্তমান পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছেন?

এবার সবাই সচেতন না হয়ে বাইরে বের হয়ে যাচ্ছে। কেউ কিছু মানতেই চাচ্ছে না। প্রকৃতি সবসময় সবকিছু সাপোর্ট করে না। জানি না সামনে কী হতে যাচ্ছে। আমাদের পাশের দেশের যা অবস্থা তাতে এখন একটা ঘোরের মধ্যে আছি। এভাবে কাজ করা যায় না। কি ঈদ আর কি বৈশাখ আর কি আনন্দসবই এখন মাটি।

ওটিটিতে তো আপনার অভিজ্ঞতা আগে থেকেই। নতুন করে কোনো কাজ করছেন?

এটা সত্য, এখন সবাই ওটিটি কিংবা ওয়েব নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু আমি অনেক আগে থেকেই তো কাজ করছি। জায়গা একটু ভিন্ন আমার মতে। কারণ বাজেট, সময়, চর্চা সবকিছুই থাকে ওটিটিতে। নতুন অনেক পরিকল্পনাই করে রেখেছেন নির্মাতারা। কিন্তু পরিস্থিতি বিবেচনা করে আসলে মূল পরিকল্পনা আর শেষ হচ্ছে না। কারণ আমরা চাই না কেউ আক্রান্ত হয়ে একটা বিপদের মধ্যে পড়ুুক। সবারই পরিবার আছে, প্রিয় মানুষ আছে। অবশ্যই নিয়মিত ওটিটিতে আছি এবং থাকব। তবে কবে নাগাদ আবার শুরু করতে পারব এটাই হচ্ছে প্রশ্ন।

নাটক কিংবা ওটিটি যা- হোক না কেন, যদি পার্থক্য করতে বলি তাহলে কীভাবে করবেন?

দেখুন, টেলিভিশন নাটক কিংবা ওটিটি যেটাই হোক, পার্থক্য তৈরি করা মুশকিল। কারণ আমাদের মূল কাজটা হচ্ছে অভিনয় করা। বাজেটকেন্দ্রিক কথা উঠলে বলব নাটকেও কিন্তু এখন ভালো বাজেট দেয়া হচ্ছে। আর ভালো নির্মাণের দিকেও কিন্তু নির্মাতারা এগিয়ে যাচ্ছেন। আর ওটিটির ব্যাপারটা যদি বলি তাহলে সেটা বাজেটের লিমিটেশন নেই। একটা চর্চার মধ্য দিয়ে মনে হয় আমরা ভালোর দিকেই যাচ্ছি।

চরের মাস্টার- আপনার চরিত্রটি নিয়ে কিছু বলা যায়?

ঢাকা শহরেই বড় হওয়া একটা মেয়ে একটা ছেলের প্রেমে পড়ে। কিন্তু প্রেমে পড়ার পর ছেলেটা একটা চরের মধ্যে চলে যায়। তাকে খুঁজতে গিয়ে এই মেয়েও সেখানে যায়। গিয়ে সংসার শুরু করে। এখন শহরে বড় হওয়া দুটি মানুষের চরের সংসারজীবন নিয়েই হচ্ছে মূল গল্প। সেখানে কীভাবে তারা জীবন যাপন করে বা করবে এসব নিয়েই নানা পরিকল্পনা করে।

শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

খুব ভালো। ফরিদপুরে একটা চরের মধ্যে গিয়ে আমরা শুটিং করেছি। নির্মাতা হচ্ছেন ভিকি জায়েদ। একটা খুব সুন্দর চর। যেটা শিখেছি সেটা হচ্ছে যদি নির্মাতাদের ভালো গল্প কিংবা বাজেট খুব ভালো করে দেয়া হয় তাহলে অনেক বেটার কিছু বের হয়ে আসে। কারণ তখন ক্রিয়েটিভিটি দেখানো যায়। কাজটা সত্যিই দারুণ হয়েছে। সব মিলিয়ে একেবারে প্রকৃতির সঙ্গে আমরা মিশে গিয়েছিলাম।

তাহলে এবারের ঈদে পরিবারের সঙ্গে ঘরেই আছেন?

হ্যাঁ, আপাতত এই কাজ। আর কোনো কাজ নেই। ঘরেই আছি এবং থাকব। সচেতন থাকব। পরিবারের সবার প্রতি খেয়াল রাখব। নো শুটিং। পরিস্থিতি যদি ভালোর দিকে যায় তাহলে হয়তো আবারো শুরু হবে শুটিং। কিন্তু এখন আর নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন