করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

ভারতীয় ধরন প্রতিরোধে করণীয়

ড. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন

করোনাভাইরাস রূপ পাল্টাচ্ছে একের পর এক। বিজ্ঞানীরা যখন ভাইরাসের মোকাবেলায় হরেক রকমের ওষুধ টিকা তৈরিতে অহর্নিশ পরিশ্রম করে চলেছেন, ভাইরাসটিও নিত্যনতুনরূপে আবির্ভূত হয়ে তাদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে।

ভাইরাসজগতে রূপ পাল্টানো নতুন কোনো বিষয় নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলে মিউটেশন। করোনাভাইরাসের আবির্ভাবের পর বছর দেড়েকের মধ্যে ভাইরাসের শুধু স্পাইক প্রোটিনেই চার হাজারের অধিক মিউটেশন ঘটেছে। কিন্তু মিউটেশনে সৃষ্ট এসব ভ্যারিয়েন্টের বেশির ভাগই সংক্রমণের বিভিন্ন আঙ্গিকের নিরিখে বিশেষ কোনো গুরুত্ব বহন করে না।

একটি ভ্যারিয়েন্ট কেবল তখনই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, যখন দেখা যায় যে এটি মূল ভাইরাসের চেয়ে অধিকতর সংক্রামক, অপেক্ষাকৃত গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করে, দ্রুততর গতিতে ছড়ায় কিংবা এর আগের ইনফেকশন বা টিকা গ্রহণের মধ্য দিয়ে অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়। করোনাভাইরাসের রকম কিছু ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে সংক্রমণ বৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। -যাবৎ বিজ্ঞানীরা ধরনের চারটি ভ্যারিয়েন্ট চিহ্নিত করেছেন, যথা ইউকে ভ্যারিয়েন্ট (বি...), ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (পি.), সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট (বি..৩৫১) এবং ক্যালিফোর্নিয়ান ভ্যারিয়েন্ট (বি..৪২৯) ভ্যারিয়েন্টগুলোকে ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন হতে পারে সাম্প্রতিককালে ভারতে আবির্ভূত নতুন ভ্যারিয়েন্টইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট, বি..৬১৭। তবে ভ্যারিয়েন্ট আপাতদৃষ্টিতে উদ্বেগজনক বিবেচিত হলেও যেহেতু সংক্রমণের বিভিন্ন আঙ্গিকে এর অবস্থান এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি, এটাকে এখনো ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের মতো রেগুলেটরি বডি এটাকে একটি মাঝামাঝি অবস্থানে রেখে ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার ইনভেস্টিগেশন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

সম্প্রতি পাশের দেশ ভারতে করোনা অতিমারী ভয়াবহ আকার ধারণ করে। গত বছর দৈনিক করোনা সংক্রমণের সংখ্যা সর্বোচ্চ প্রায় এক লাখ এবং মৃতের সংখ্যা প্রায় এক হাজারে ওঠার পর সেপ্টেম্বর থেকে কমতে শুরু করে এবং বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ তা যথাক্রমে প্রায় ১০ হাজার ১০০-তে নেমে আসে। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে হঠাৎ সংক্রমণ তীব্রগতিতে ঊর্ধ্বমুখী হয় এবং সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা চার লাখ এবং মৃতের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

যেন বিনা মেঘে বজ পাতের মতো। ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ যখন সংক্রমণ -যাবত্কালের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে, অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন হয়তোবা অতিমারীর সবচেয়ে খারাপ সময়টা কেটে গেছে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি সময়কালে চেন্নাইয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এপিডেমিওলজি পরিচালিত একটি অ্যান্টিবডি সমীক্ষা প্রাক্কলন করে, ভারতের বড় বড় শহরে কিছু এলাকায় ৫০ শতাংশেরও বেশি লোক এবং জাতীয়ভাবে ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এরই মধ্যে সংক্রমিত হয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, জনসাধারণের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ সংক্রমণের মাধ্যমে কিছুটা ইমিউনিটি অর্জন করেছে। পরিপ্রেক্ষিতে কিছু গবেষক এমনটাই প্রত্যাশা করছিলেন যে অতিমারীর পরবর্তী ধাপটির তীব্রতা অপেক্ষাকৃত কম হবে।

কিন্তু বাস্তবে ঘটল ঠিক উল্টোটা। প্রশ্ন হলো, কেন হঠাৎ সংক্রমণ ফের এরূপ উল্কাবেগে ঊর্ধ্বমুখী হলো? কী হতে পারে এর অন্তর্নিহিত কারণ? সংক্রমণ কমে আসা টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আত্মতুষ্টি বশে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে লোকজনের অবাধে মেলামেশা ঘোরাফেরা? নাকি অধিকতর সংক্রামক নতুন কোনো ভ্যারিয়েন্টের আগমন/আবির্ভাব? ঠিক কোন ফ্যাক্টরটি এখানে প্রধান ভূমিকা রেখেছে তা বিজ্ঞানীদের কাছে এখনো পরিষ্কার নয়। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের কাছে সম্প্রতি ভারতে দেখা দেয়া নতুন ভ্যারিয়েন্ট বি..৬১৭, যা এরই মধ্যে ডাবল মিউট্যান্ট হিসেবে পরিচিতি অর্জন করেছে, তা বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ভ্যারিয়েন্টটির বিশেষত্ব হলো, এর স্পাইক প্রোটিনে এমন দুটি গুরুত্বপূর্ণ মিউটেশনের সমন্বয়ে ঘটেছে, যেগুলো আগে আবিষ্কৃত মারাত্মক ভ্যারিয়েন্টগুলোয় কোনো না কোনোটিতে স্বতন্ত্রভাবে দেখা গেলেও কোনো ভ্যারিয়েন্টেই একসঙ্গে দেখা যায়নি। এটিই এর ডাবল মিউট্যান্ট নামের ভিত্তি। এর মানে নিশ্চয়ই এই নয় যে এতে কেবল দুটো মিউটেশন ঘটেছে, বরং প্রকৃতপক্ষে মোট মিউটেশনের সংখ্যা এক ডজনেরও বেশি। যাই হোক, দুটো মিউটেশনের একটি হচ্ছে E484Q, যার অনুরূপ মিউটেশন এর আগে সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট, ব্রাজিলিয়ান ভ্যারিয়েন্ট ইউকে ভ্যারিয়েন্টের কিছু স্ট্রেইনেও পরিলক্ষিত হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধরনের মিউটেশন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে আগের সংক্রমণ বা টিকা গ্রহণের ফলে তৈরি অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। দ্বিতীয় মিউটেশনটি হলো L452R, যা এর আগে ক্যালিফোর্নিয়ান ভ্যারিয়েন্টে দেখা গেছে। ভারতের সিএসআইআর-আইজিআইবির পরিচালক . অনুরাগ আগারওয়ালের মতে, এটি করোনাভাইরাসের সংক্রমণতা প্রায় ২০ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়; বিপরীতে অ্যান্টিবডির কার্যকারিতা ৫০ শতাংশেরও অধিক কমিয়ে দেয় সুতরাং এটি স্পষ্ট যে দুটি মিউটেশনের যুগপৎ উপস্থিতি ভাইরাসটিকে অধিকতর সংক্রামক করে তুলে এবং এটি টিকা বা পূর্ববর্তী সংক্রমণের ফলে তৈরি অ্যান্টিভাইরাল অ্যান্টিবডির আক্রমণ পাশ কাটিয়ে যেতে সক্ষম হতে পারে। কাজেই তাত্ত্বিক বিচারে ভ্যারিয়েন্টকে একটি ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন হিসেবে বিবেচনা করার যথেষ্ট যৌক্তিক ভিত্তি রয়েছে। 

এখন প্রশ্ন হলো, বাস্তব সাক্ষ্যপ্রমাণ ভারতে সংক্রমণের সাম্প্রতিক উল্লম্ফনের জন্য ভ্যারিয়েন্টই যে দায়ী, তেমনটি বলে কিনা। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমে জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের যেসব তথ্য-উপাত্ত এসেছে, তাতে ভ্যারিয়েন্টটিকে দায়ী মনে করার সংগত কারণ রয়েছে। কভিড-১৯ বিষয়ক ওয়েবসাইট ট্র্যাকার আউটব্রেক.ইনফো-তে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ে যেখানে ভারতে জানুয়ারিতে ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি ছিল প্রায় শূন্যের কোটায়, এপ্রিলে এসে তা গড়ে ৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে অন্যদিকে ভারতে পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি (এনআইভি) জানিয়েছে, সাম্প্রতিক উল্লম্ফনের কেন্দ্রভূমি মহারাষ্ট্রে জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে সংগৃহীত ৩৬১টি নমুনার ২২০টি অর্থাৎ ৬১ শতাংশে ডাবল মিউটেশন দেখা গেছে। জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলাফল ছাড়াও এখানে আরো একটি বিষয় প্রণিধানযোগ্য। ভারতের মুম্বাইয়ের পি.ডি. হিন্দুজা হসপিটাল অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের ডা. জরির উদওয়াদিয়া তার ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে কাজের ফাঁকে বিজ্ঞান সাময়িকী ন্যাচারের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, প্রথম প্রবাহ চলাকালে যেখানে একেকজন ব্যক্তি আক্রান্ত হতে দেখা গিয়েছিল, সেখানে এখন একটি পরিবারের সবাই একসঙ্গে আক্রান্ত হচ্ছে। তিনি মনে করেন, বিষয়টি এখানে একটি অধিকতর সংক্রামক ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়।

তবে বিশেষজ্ঞরা এক্ষুনি ভ্যারিয়েন্টকে এই উল্লম্ফনের জন্য দায়ী বলে নিশ্চিত উপসংহার টানতে রাজি নন। একটি কারণ, পর্যন্ত যে জেনোম সিকোয়েন্সিং হয়েছে, তা নিতান্তই স্বল্পসংখ্যক নমুনার ওপর। মহারাষ্ট্র যেখানে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ টেস্ট করছে, সেখানে এটি (অর্থাৎ ৩৬১টি নমুনা) সিদ্ধান্তে আসার জন্য একেবারেই অপ্রতুল’—পিটিআইকে একজন সিনিয়র জেনোম সিকোয়েন্সিং বিশেষজ্ঞ বলেন। একই সুরে ভেলোর ক্রিশ্চিয়ান মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়োলজির প্রফেসর  ডা. গঙ্গাদীপ কাং বলেন, ৬০ দশমিক শতাংশ নমুনায় ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি খুব সম্ভবত মিউটেশন সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে একটি যোগসূত্র নির্দেশ করে, তবে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হলে প্রতি সপ্তাহে অন্তত শতাংশ কভিড-১৯ নমুনার সিকোয়েন্সিং করা চাই। অনুপাতে বর্তমানে ভারতে যখন প্রতিদিন লাখের ওপরে শনাক্ত হচ্ছে, দৈনিক জেনোম সিকোয়েন্সিংয়ের তুল্য  সংখ্যা  দাঁড়ায় এক হাজারের মতো) অন্যদিকে আপাতদৃষ্টিতে অধিকতর সংক্রামক বলে প্রতীয়মান হলেও স্বস্তির বিষয় হলো, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতা বলছে, ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম। বেশির ভাগ রোগীর হোম আইসোলেশনেই চলে, হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। মহারাষ্ট্র কভিড টাস্কফোর্সের একজন বিশেষজ্ঞ ডা. শশাঙ্ক জোশি বলেন, বেশির ভাগ রোগীই উপসর্গহীন। এটা একটা ভালো লক্ষণ। তবে মোট রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ওপর চাপ পড়ছে। আরো একটি ভালো খবর হলো, ভারতে উৎপাদিত কোভ্যাক্সিন টিকা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে বলে গবেষণায় প্রমাণ মিলছে এটি সঠিক হলে ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে টিকাজনিত উদ্বেগের কিছুটা অবসান হতে পারে।

ভারতে প্রথমবারের মতো ডাবল মিউট্যান্ট বা ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট নামে খ্যাত বি..৬১৭ ভ্যারিয়েন্টটি ধরা পড়ে গত অক্টোবরে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্য অনুসারে, ভ্যারিয়েন্ট এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্তত ১৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ভারতেই এর বিস্তার হয়েছে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশে এখনো ভাইরাস ধরা পড়েনি। তবে আমাদের বিবেচনায় নেয়া দরকার, বাংলাদেশের বেশির ভাগ সীমানা ভারতের সঙ্গেই। অবিরাম লোকজন এপার-ওপার যাচ্ছে। সুতরাং এরই মধ্যে বাংলাদেশে ভ্যারিয়েন্ট ঢুকে না পড়াটা কিছুটা অস্বাভাবিক।

কাজেই এক্ষুনি বাংলাদেশের বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে কাজে নেমে পড়া দরকার। ভারতে কভিডের বর্তমান ভয়াবহ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের আরো অনেক দেশের মতো বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে গমনাগমনে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। কিন্তু ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ, প্রত্যাগতদের কোয়ারেন্টিনে রাখা কিংবা তাদের নমুনা নিয়ে জেনোম সিকোয়েন্সিং করা যথেষ্ট নয়। দরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ব্যাপকভিত্তিক সিকোয়েন্সিংয়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা, যাতে কোথাও ভ্যারিয়েন্ট এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে থাকলে তা দ্রুত চিহ্নিত হয় এবং অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়। আর একটা বিষয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অধিকসংখ্যক লোককে টিকার আওতায় নিয়ে আসা প্রয়োজন, যাতে সংক্রমণ ছড়াতে না পারে। কারণ ভাইরাস যত বেশি ছড়ায়, এর মিউটেশনের সম্ভাবনা ততই বেড়ে যায়। ফলে নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হতে পারে, যাদের বিরুদ্ধে বর্তমান টিকাগুলো ভালোভাবে কাজ না- করতে পারে।

আরো একটি বিষয়ে বিশেষ মনোযোগ  দেয়া দরকার। বাংলাদেশ ভারতে আপাতদৃষ্টিতে নিয়ন্ত্রণে চলে আসার পর সম্প্রতি সংক্রমণে ফের যে ব্যাপক উল্লম্ফন দেখা দেয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, কভিড অতিমারীর এই মারণজীব ভীষণ রহস্যময়। কিছু সময়ের জন্য ব্যাকফুটে যাওয়ার পর রূপ পাল্টে ফের দ্বিগুণ বিক্রমে আঘাত হানতে সক্ষম। কাজেই পরিসংখ্যানের দিকে তাকিয়ে কিংবা টিকা নিয়েছি ভেবে মুহূর্তের জন্যও গা ছাড়া দেয়ার সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে ক্ষণিকের অসতর্কতার সুযোগেই মারণজীব আপনার ওপর হামলে পড়তে পারে। কাজেই যতক্ষণ না মারণজীব পুরোপুরি নির্মূল হয়েছে বলে নিশ্চিত বার্তা পাচ্ছেন, হাত ধোয়া/স্যানিটাইজেশন, মাস্ক পরিধান, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা গণসমাগম এড়িয়ে চলার মতো প্রতিরক্ষা বর্মগুলো আপনাকে সদা সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। এখানে ন্যূনতম শৈথিল্যের সুযোগ নেই।

 

. মুহম্মদ দিদারে আলম মুহসিন: অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন