এক বছর আগে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে রোগীদের জন্য ছয় হাজার লিটার ধারণক্ষমতার অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার পর বছর পার হলেও কাজের অগ্রগতি নেই। কর্তৃপক্ষ ২০ ভাগ কাজ শেষ হওয়ার কথা বললেও বাস্তবে তেমন অগ্রগতি দৃশ্যমান নয়। এ নিয়ে রোগী এবং অভিভাবকদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা। তাদের অভিযোগ, সময়মতো গুরুত্ব না দেয়ায় করোনার এ খারাপ সময়ে কাঙ্ক্ষিত অক্সিজেন সরবরাহ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
জেলা স্বাস্ব্য বিভাগ সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুসারে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুরোধে ইউনিসেফের অর্থায়নে সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত বছর উদ্যোগ নেয়া হলেও কাজ এগোয়নি খুব বেশি। হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের অধিকাংশেরই অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে। কিন্তু লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট না থাকায় নিরবচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবরাহে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। বর্তমানে সিলিন্ডার দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে ঝুঁকিতে পড়ছেন করোনায় আক্রান্ত রোগীরা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. পার্থ সারথী দত্ত কাননগো জানান, কাজ চলছে দুই মাসে শেষ হবে। বর্তমানে রোগীদের তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না, ৫০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে চিকিৎসা চলছে।
করোনার দ্বিতীয় প্রবাহে দেশে সংক্রমণের শীর্ষে থাকা ২৯টি জেলার মধ্যে মৌলভীবাজার ছিল প্রথম। বর্তমানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমলেও চিকিৎসার মান সেবা নিয়ে রয়েছে নানা অভিযোগ। মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় শয্যা এবং চিকিৎসার সরঞ্জাম আছে জানালেও রোগীরা হাসপাতালে চিকিৎসায় ভরসা পাচ্ছেন না। জেলার অধিকাংশ করোনা রোগী ছুটে যান সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি ডা. শাব্বির হোসেন খান জানান, সদর হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য তিনটি হাই ফ্লো নেজাল ক্যানুলা রয়েছে, যা মৌলভীবাজারের চিকিৎসক এবং কিছু দানশীল স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রবাসীদের অনুদানে কেনা। সেই সঙ্গে এ অনুদানের টাকায় ১২টি মেগা-সিলিন্ডার দিয়ে একটি অক্সিজেন প্লান্টও স্থাপন করা হয়েছে। তবে এতে যে অক্সিজেন ব্যবহার হয় তার জন্য রোগীকে টাকা পরিশোধ করতে হয়। কারণ এ অক্সিজেন স্থানীয় ডিলারের কাছ থেকে কিনতে হয়। সরকারি উদ্যোগে অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি হয়ে গেলে রোগীরা অক্সিজেনের ভালো সরবরাহ পাবেন এবং বর্তমানে যে মূল্য দিতে হয় তা কমে আসবে।
ইউনিসেফ সিলেট বিভাগীয় কর্মকর্তা ডা. মির্জা ফজলে এলাহী জানান, ছয় হাজার লিটারের এ প্লান্ট নির্মাণে অগ্রাধিকার দিয়ে দ্রুত কাজ শেষের চেষ্টা হচ্ছে।