শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে যাচ্ছে যবিপ্রবি

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, যশোর

শিক্ষা গবেষণা খাতে এগিয়ে যাচ্ছে যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) মাত্র এক যুগে উচ্চশিক্ষায় অনন্য সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা অবকাঠামোগত উন্নয়নে নেয়া হয়েছে মেগা প্রকল্প।

যবিপ্রবি জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক হায়াতুজ্জামান মুকুল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৯ সালে। ২০১৯ সালের শুরুতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়।

আন্তর্জাতিকভাবে স্কোপাস ডেটা বেইস অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলাদেশে গবেষণা প্রবৃদ্ধির (৪২ শতাংশ) ক্ষেত্রে যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম স্থান অর্জন করে। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০২০ সালে প্রস্তুতকৃত তালিকায় বিশ্বের সর্বাধিক উদ্ধৃত গবেষকের মধ্যে যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন তরুণ শিক্ষক স্থান পেয়েছিলেন, যা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।

২০২০ সালে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জিনোম সেন্টার বাংলাদেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা শুরু করে। নিজস্ব ল্যাবে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এটা ছিল দেশে প্রথম।

যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দেশের বৃহত্তম হ্যাচারি-কাম-ওয়েটল্যাব। স্থাপন করা হয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেখ রাসেল জিমনেশিয়াম। সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে মীরপুরের শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামের পরেই এর অবস্থান। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত টিএসসি নির্মাণকাজও শেষ পর্যায়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডা. এমআর খান মেডিকেল সেন্টারে বিশ্বমানের প্যাথলজি সেন্টার খোলা হচ্ছে, যেখানে সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রতিপালনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের মানুষকে স্বল্পমূল্যে প্যাথলজিক্যাল সেবা দেয়া হবে।

এদিকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার জন্য অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিঠি ক্ষুদে বার্তা প্রেরণের পাশাপাশি উপযুক্ত প্রার্থীদের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের গবেষণাপত্র স্বচ্ছ রাখতে প্রত্যেক শিক্ষককে বিনা মূল্যে টার্নিটিন সফটওয়্যারের আইডি সরবরাহ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং বন্ধ করা হয়েছে। ফলে তৈরি হয়েছে শিক্ষার্থীবান্ধব সুস্থ পরিবেশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বিশ্বমানের অত্যাধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে জিনোম সেন্টার, ইউটিএম ল্যাব, অ্যানালিটিক্যাল ল্যাব উল্লেখযোগ্য।

যশোর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পূর্ণরূপে আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে বীর প্রতীক তারামান বিবি হল এবং মুনশি মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ হল নামে দুটি ১০তলা বিশিষ্ট হল নির্মাণকাজ প্রায় শেষ দিকে। ক্লাস, পরীক্ষা গবেষণা কাজকে আরো গতিশীল করার জন্য যথেষ্ট একাডেমিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত ১০তলা জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজও চলছে। করোনাকালে অনলাইনে ক্লাস পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব সার্ভারে অনলাইন লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হয়েছে। শিক্ষা গবেষণাকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ৩৫ একরের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আরো ৬৫ একর ভূমি অধিগ্রহণসহ মেগা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অণুজীববিজ্ঞানী অধ্যাপক . আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষা গবেষণা খাতে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সব ধরনের প্রচেষ্টা জারি রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন