আরো ৯৮ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৪ হাজার ১৪ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯-এর ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে গতকাল দেশে আরো ৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৬২ জন পুরুষ ৩৬ জন নারী ছিলেন। সময় নতুন করে হাজার ১৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। দেশে কভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

গত বছরের মার্চে দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্তের কথা জানানো হয়। এরপর মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। পরে সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও নভেম্বর-ডিসেম্বরে কিছুটা বৃদ্ধি পায়। সর্বশেষ চলতি বছরের মার্চে সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। তবে প্রথমবারের চেয়ে দ্বিতীয়বারের সংক্রমণের তীব্রতা খুব বেশি। বর্তমান পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

টানা চারদিন পর গত মঙ্গলবার দেশে করোনাভাইরাসে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ১০০-এর নিচে নেমে আসে। এর আগে শুক্র শনিবার ১০১ জন করে, রোববার ১০২ জন এবং সোমবার ১১২ জনের মৃত্যু হয়। গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যু হয়। এরপর থেকে দৈনিক মৃত্যু কখনই ৫০-এর নিচে নামেনি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৩৪৯টি পরীক্ষাগারে ২৭ হাজার ৪২৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ৫২ লাখ ৭৭ হাজার ১১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। দেশে মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন লাখ ৩৬ হাজার ৭৪ জন মারা গেছেন ১০ হাজার ৭৮১ জন করোনা পজিটিভি ব্যক্তি। সর্বশেষ বাসা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরো হাজার ২৬৬ জন সুস্থ হওয়ায় মোট সুস্থতার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে লাখ ৪২ হাজার ৪৪৯ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ, পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৭ দশমিক ২৮ শতাংশ মৃত্যুর হার দশমিক ৪৬ শতাংশ।

গতকাল মৃতদের ৪৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ৪৬ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং জন বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বয়স বিবেচনায় তাদের ৫৯ জন ষাটোর্ধ্ব ছিলেন। বাকিদের মধ্যে ২০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং দুজন করে চারজন ৩১ থেকে ৪০ ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং একজন ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিলেন। বিভাগ ভিত্তিক হিসেবে ৫৫ জন ঢাকা বিভাগের, ২০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ছয়জন রাজশাহী বিভাগের, পাঁচজন করে ১০ জন  খুলনা ময়মনসিংহ বিভাগের, চারজন সিলেট বিভাগের এবং তিনজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। গতকাল পর্যন্ত মারা যাওয়া ১০ হাজার ৭৮১ জনের মধ্যে হাজার ৯৪৮ জন পুরুষ এবং হাজার ৮৩৩ জন নারী।

দেশে দ্বিতীয় পর্যায়ে করোনার সংক্রমণ শুরু হলে প্রায় প্রতিদিনই ছয় হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এর মধ্যে গত এপ্রিল সর্বোচ্চ হাজার ৬২৬ জন কভিড-১৯ পজিটিভ হয়েছেন। গত ২৯ মার্চ দেশে রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। মাত্র ১৬ দিনের ব্যবধানে সাত লাখ ছাড়ায় ১৪ এপ্রিল। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। চলতি বছরের ৩১ মার্চ তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর মাত্র ১৫ দিনে আরো এক হাজারের বেশি কভিড-১৯ পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন