এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় ভিয়েতনামের অধিবাসীরা ডিজিটাল ব্যাংকিং সিস্টেম ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। সম্প্রতি এ-সংক্রান্ত দ্বিতীয় বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৈশ্বিক গবেষণায় অন্যতম প্রতিষ্ঠান ফিকো। খবর ভিয়েতনাম টাইমস।
মূলত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মানুষ ও তাদের ব্যবসার উন্নতি করবে এমন সব সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেয় ফিকো। ১৯৫৬ সালে সিলিকন ভ্যালিতে যাত্রা শুরু করে এ প্রতিষ্ঠান। আনুমানিক বিশ্লেষণ ও ডাটা সায়েন্স ব্যবহারের মাধ্যমে প্রায়োগিক সিদ্ধান্তের প্রয়োগে অন্যতম পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
এশিয়া প্যাসিফিকের ১০টি দেশ এবং অঞ্চলে ডিজিটাল ব্যাংকিং সার্ভিস ব্যবহারের অভিজ্ঞতা বিষয়ে পরীক্ষা চালায় ফিকো। দেশগুলো হলো অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিস্তিন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।
ভিয়েতনামে স্মার্টফোনের অধিক ব্যবহার প্রমাণ করে যে দেশটির ৭৭ শতাংশ অধিবাসী গতানুগতিক ধারার ব্যাংকিং কার্যক্রমের পরিবর্তে ফিনটেকসহ অন্যান্য ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহারে আগ্রহী এবং অবগত। থাইল্যান্ডের পাশাপাশি এ জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে ভিয়েতনাম অন্যতম প্রধান অংশগ্রহণকারী দেশ ছিল।
অর্থনৈতিক দিক থেকে, ব্যক্তিগত তথ্য প্রদানের দিক থেকে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভিয়েতনামের অধিবাসীরা বেশি আগ্রহী; যার হার ৪৯ শতাংশ। মূলত ব্যাংকের বিভিন্ন সেবা, সুদের ভালো হার কিংবা অ্যাকাউন্ট খোলার ফি কমানোসহ বিভিন্ন সুবিধা গ্রহণেই তারা তথ্য প্রদানে বেশি আগ্রহী। এদিক থেকে থাইল্যান্ডের (৫১ শতাংশ) পরই ভিয়েতনামের অবস্থান।
এ অবস্থানের কারণে অর্থ পাঠানোর সময় কমানোসহ বেশকিছু সেবা গ্রহণের দিক থেকে ভিয়েতনামের অধিবাসীদের চাহিদাও বেশি থাকে। এছাড়া তারা ওয়েবসাইটের ইন্টারফেস পরিবর্তন, সিকিউরিটি ফিচার নিয়ন্ত্রণসহ বেশকিছু ফিচার আগে থেকে ব্যবহারের ইচ্ছাও পোষণ করেন।
বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন ট্রেন্ডের মধ্যে পার্টনারশিপ ইকোসিস্টেম, ক্লাউড কম্পিউটিং টেকনোলজির জন্য আবেদন এবং ইউজারদের সেন্টারে রাখার চর্চা হয়। ব্যাংকগুলোও পার্টনারশিপ ইকোসিস্টেম ও ক্লাউড কম্পিউটিং অ্যাপ্লিকেশন সুবিধা প্রদানে সম্মত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অদূরভবিষ্যতে ব্যাংকগুলোকে পণ্যভিত্তিক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে এসে গ্রাহকভিত্তিক চিন্তাধারায় শামিল হতে হবে। ব্যবহারকারীরা যেসব সুবিধা চাইবে, ব্যাংকগুলোকে সেসব সুবিধা দিতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাংকগুলোকে তাদের পণ্যের গুণগত মান ও ভালো সেবা প্রদানের জন্য ভালো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের সিস্টেমের হালনাগাদ ও পরিচালনা করাতে হবে। যাতে ডিজিটাল আদান-প্রদান আরো সহজ হয়।