আলোচনা

ঐতিহাসিক সম্পদ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন

আমরা জানি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি আর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আধুনিক স্থাপত্যের অন্যতম উদাহরণ। দুটি স্থাপনা শুধু আমাদের দেশেরই ঐতিহ্য নয়, এগুলো বৈশ্বিক আধুনিক স্থাপত্যধারার প্রতীক। গ্রিক স্থপতি পরিকল্পনাবিদ কনস্টানটিনো ডক্সিয়াডিসের খোলামেলা সবুজ উদ্যান আর তাকে ঘিরে স্থাপত্যের বুনন দেখে কে মুগ্ধ হয়নি। টিএসসির নির্মাণশৈলী ষাটের দশকে ছিল বিরল। বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি স্বাধিকার আন্দোলনের শূন্য ভূমি (গ্রাউন্ড জিরো) অন্যদিকে ড্যানিয়েল ডানহাম এবং বুগেইয়ের ডিজাইন করা কমলাপুর স্টেশন আমাদের জাতীয় তোরণ। এক হিসাবে আমাদের জাতিসত্তার প্রবেশপথ। আমাদের প্রত্যেকের স্মৃতি জড়িয়ে আছে স্টেশনকে ঘিরে।

কিন্তু আজকে আমরা এখানে টিএসসি আর কমলাপুর নিয়ে কথা বলব না; বরং আমরা কতগুলো বৃহত্তর সামাজিক, নৃতাত্ত্বিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজব। এত গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও দুটো স্থাপনা ভাঙার সংবাদে যেন তৈরি হয়নি কোনো সুস্থ জাতীয় বিতর্ক। শুধু স্থপতি, পরিকল্পনাবিদরা আর কয়েকজন ইতিহাসবিদ ছাড়া কেউ আলোচনায় নেই। কেন? এটা শুধু আইএবির দায়িত্ব? কেন সব পেশাজীবী, বৃহত্তর নাগরিক সমাজ আলোচনায় সংযুক্ত হচ্ছে না

প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে আজ আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের চিন্তাবিদদের। তারা হলেন  রাষ্ট্রবিজ্ঞানী . রওনক জাহান, অর্থনীতিবিদ গবেষক . হোসেন জিল্লুর রহমান, পরিবেশ আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অর্থনীতিবিদ . সাজ্জাদ জহির।

. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ: একটি উন্নয়নশীল জাতির সামাজিক বিবর্তনে ইতিহাস সংবেদনশীলতার গুরুত্বকে আপনি কীভাবে দেখেন? একটি জাতির মননশীল বিকাশে ইতিহাস সচেতনতা কতটা জরুরি?

. রওনক জাহান: প্রশ্নের উত্তর দেব আমার ব্যক্তিগত একটা অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে। ২০০৬-০৭ সালের দিকে আমেরিকান কিছু ফিলানথ্রপিস্ট আমার কাছে এসেছিলেন। তারা বাংলাদেশের কিছু সংস্থাকে অর্থ দিতে চাইছিলেন এবং তারা কিছু প্রজেক্ট দেখতে চাইছিলেন। এটিকে অনেকটা ডেভেলপমেন্ট ট্যুরিজমই বলা যেতে পারে। ঠিক করলাম, তাদের বগুড়ায় নিয়ে যাব। একটা কারণ ছিল বগুড়ায় অনেক প্রজেক্ট আছে এবং থাকার ভালো ব্যবস্থাও আছে। বগুড়ায় গিয়ে কিছু প্রজেক্ট দেখানোর আগে প্রথম তাদের বললাম, চলো, এখানে মহাস্থানগড় নামে একটা ঐতিহাসিক স্থান আছে, সেখানে নিয়ে যাই। কারণ আমি জানতাম যারা এসেছিলেন তারা ব্যক্তিগতভাবে বেশ ধনী ফিলানথ্রপিস্ট। ভাবলাম, তাদের ইতিহাস তো ২০০-৩০০ বছরের বেশি নয়। তারা আমাদের দেশকে দরিদ্র দেশ হিসেবে ভাবেন। কিন্তু আমাদের যে কয়েকশ শতাব্দীর একটা সভ্যতা আছে, সেটি তাদের একটু জানা দরকার।

মহাস্থানগড়ের প্রথম স্তরটি খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের সময়কার। মহাস্থানগড় যেটি প্রতিফলন ঘটায় তা হলো, আমাদের ইতিহাসের প্রতিটি পর্যায়ের সভ্যতা সংস্কৃতি রয়েছে। একটার সঙ্গে আরেকটি পাশাপাশি রয়েছে কিংবা একটার ওপরে আরেকটা রয়েছে। সেখানে হিন্দু আমলের মন্দির আছে। তার ওপরেই বৌদ্ধ বিহারগুলো রয়েছে। তার পাশেই আবার মোগল আমলের মসজিদ রয়েছে। অর্থাৎ আমাদের এখানে বিভিন্ন ধর্মের এবং ঐতিহাসিক পর্যায়গুলোর এই যে বৈচিত্র্য, তা চোখের সামনেই প্রতীয়মান। কিন্তু মহাস্থানগড়কে অরক্ষণীয়ভাবে রাখা হয়েছে, সেটিকে সংরক্ষণের তেমন প্রচেষ্টা নেই।  তার পাশে একটা জাদুঘর আছে। জাদুঘরের মধ্যেও খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকের মুদ্রা রয়েছে। আবার সেখানে মোগল আমলের ফার্সি আরবিতে লেখা তাম্রলিপিও আছে। কাজেই আপনি বিভিন্ন সময়ের আমাদের ইতিহাসের নিদর্শন দেখতে পাবেন। কথা হলো, আমাদের এখনকার প্রজন্ম আসলে ইতিহাস বলতে কী বোঝে। আমাদের যে এত প্রাচীন ইতিহাস, সেটি সম্পর্কে তারা সংবেদনশীল কিনা, তা জানি না। কারণ আজকাল ছেলেমেয়েরা কী ধরনের পাঠ্যবই পড়ছে, তা দেখার খুব একটা সুযোগ হয় না। তবে দু-একটা বই নেড়েচেড়ে দেখেছি। আমরা যখন ছিলাম তখন প্রাচীন ইতিহাস পড়তাম। আজকে ষষ্ঠ শ্রেণী, নবম শ্রেণী কিংবা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করলে দেখি যে তারা সবাই একই ইতিহাস পড়ে। সেটি মূল ব্রিটিশ আমল থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস। এটি খণ্ডিত ইতিহাস। আমাদের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস আছে। আমাদের এটা নিয়ে নিয়ে গর্ব করা উচিত। কাজেই ইতিহাসকে যেভাবে উপস্থাপন করতে হবে, ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো যেভাবে সংরক্ষণ করতে হবে, তার কোনো লক্ষণ আমি দেখছি না।

আমি যখন বড় হচ্ছি এবং স্বাধিকার আন্দোলন হচ্ছিল, তখন দুটো বিষয় সবসময় বলতাম, আমাদের বৈচিত্র্য এবং সমন্বয়বাদী কৃষ্টি-সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ে আমরা গর্বিত। সেখানে এখনকার প্রজন্ম ইতিহাসকে কীভাবে দেখছে এবং ইতিহাসকে কীভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, তা আমি বলতে পারব না। তবে সাম্প্রতিক ইতিহাস নিয়ে মানুষ খামোখা একটা রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছে। আমাদের দীর্ঘ ঐতিহাসিক ঐতিহ্য নিয়ে আমরা গর্বিত।

. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আজ পর্যন্ত সবচেয়ে বিতর্কিত উচ্চারিত শব্দ হলো খুব সম্ভবত উন্নয়ন। শব্দটির একটি নিজস্ব আঁকাবাঁকা ইতিহাস তৈরি হয়ে গেছে বলা যেতে পারে। উন্নয়নের সুনির্দিষ্ট শাশ্বত কোনো সংজ্ঞা নেই। অমর্ত্য সেন যে অর্থে উন্নয়নকে বলেছেন মুক্তি বা জনগণের সক্ষমতা তৈরি অবাধ অধিকার, সেই ধরনের উন্নয়নে মানুষের ইতিহাস জানার অধিকারকে আপনি কীভাবে দেখেন?

. হোসেন জিল্লুর রহমান: ইতিহাস জানার অধিকার বললে মনে হয় প্রেক্ষিতটা ছোট হয়ে আসে। আমার মনে হয় ইতিহাসটা আমাদের সামাজিক প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে সম্পৃক্ত করারও একটা বিষয় রয়েছে। আপনার প্রশ্নের উত্তর একটু পরোক্ষভাবে দিচ্ছি। আপনি শুরুতেই কমলাপুর রেলস্টেশন টিএসসি ভেঙে ফেলার কথা বলছিলেন। আইকনিক ভবন ভেঙে ফেলার একটা চিন্তা করা হচ্ছে। একটা ধারণা হতে পারে যে উন্নয়ন ইতিহাস বিপরীত অবস্থানে দাঁড়াচ্ছে। আমরা মনে হয় দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকে ঝুঁকে পড়ছি। আসলে দেখা যাচ্ছে যে অনেক জায়গায় উন্নয়ন সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটা বিরোধ হতে পারে। ইতিহাসের সংরক্ষণ এবং বর্তমানের উন্নয়ন চাহিদা একটা বিপরীত অবস্থানে থাকতে পারে। কিন্তু কমলাপুর স্টেশনের সংরক্ষণ বনাম উন্নয়নকে আপনি যেভাবে হাজির করলেন, আমার মনে হয় তা সঠিক হচ্ছে না। এটি হচ্ছে মূলত সামষ্টিক স্বার্থ বনাম ক্ষুদ্র স্বার্থের একটা সংঘাত। আমরা যদি একটু গভীরভাবে পর্যালোচনা করি, তাহলে দেখব যে উন্নয়নও সামষ্টিক স্বার্থের ধারণায় পরিগণিত হতে পারে। কিন্তু সেখানে নিছক এক ধরনের জমির দখল আছে, সেজন্য ক্ষুদ্র স্বার্থে ব্যবহারের প্রয়োজনে নির্বিচারে ইতিহাসকে ধূলিসাৎ করার একটা প্রচেষ্টা সামনে চলে এসেছে। আমি বলব যে আমাদের উন্নয়ন বনাম সংরক্ষণের প্রেক্ষিতটা আসলে আমাদের মতো দেশে যে সবসময় কাজ করে তাও নয়। অনেক সময় আরো নিচু পর্যায়ে কাজ করে, কিছু ক্ষেত্রে সামষ্টিক স্বার্থ, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র স্বার্থের নিরিখে। সেজন্য ইতিহাসের প্রতি আমাদের আগ্রহ কতটুকু আছে, রওনক জাহান যেমনটা বললেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম ইতিহাসে কতটা আগ্রহী, সেটি একটা দেখার বিষয়। তারা হয়তো আগ্রহী কিন্তু ইতিহাস বই তো আর তারা লিখছে না। ইতিহাস বই লিখছেন প্রবীণরা এবং সেই ইতিহাসে অত্যন্ত সীমিত সময়কে দেখানো হচ্ছে। সেজন্য এক ধরনের রাজনৈতিক সমাজবিজ্ঞান বা রাজনৈতিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে আলোচনাটি অত্যন্ত জরুরি। ক্ষুদ্র স্বার্থ বনাম সামষ্টিক স্বার্থএটি আমার মনে হয় আরো কার্যকর একটা ফ্রেমওয়ার্ক, যার ভিত্তিতে আলোচনাটি হতে পারে। আরেকটি বিষয় হলো, শুধু সংরক্ষণ নয়, কার্যকর বা অর্থকরী সংরক্ষণ খুব জরুরি। যেমন মহাস্থানগড়ের কথা রওনক জাহান বললেন। সেখানে নিদর্শনগুলো কেন অযত্নে-অবহেলায় পড়ে আছে, সংরক্ষণের প্রচেষ্টাটা কোথায় আছে। অর্থকরী সংরক্ষণটা জরুরি।

আমি ২০০৮ সালে তুরস্কে গিয়েছিলাম। আমাকে তপকাপি রাজপ্রাসাদ যে অফিশিয়াল গাইড ঘুরে দেখাচ্ছিলেন, তিনি একটা চমকপ্রদ কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জীবিত সুলতান যতটা আমাদের জন্য অর্থকরী সুযোগ তৈরি করেছিলেন, মৃত সুলতান তার চেয়ে বেশি অর্থকরী বিষয় তৈরি করছেন। একে উন্নাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে চলবে না। এক্ষেত্রে ফ্যাসিলিটিজের ইস্যু আছে, এর সঙ্গে একটা শিক্ষাগত ইস্যু আছে। সবকিছু মিলিয়েই আমাদের ঐতিহাসিক সম্পদ সংরক্ষণের বিষয়টি চিন্তা করাটা জরুরি।

. আদনান জিল্লুর মোর্শেদ এবার আমি সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের কাছে যাব। আপনি যদি আমাদের জানাতেন, বাংলাদেশে ঐতিহ্যের কোনো আইনি সংজ্ঞা আছে কিনা। ঐতিহাসিক স্থাপনা সংরক্ষণের কী কী ধরনের লিগ্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট আছে, যা আপনারা প্র্যাকটিস করতে পারেন?

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান: আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪নং ধারায় স্পষ্টভাবে বলা আছে, আমার যেসব ঐতিহাসিক স্থান-নিদর্শন আছে, সেগুলো কেউ ক্ষতিসাধন করতে পারবে না, অপসারণ করতে পারবে না, কোনো ডিসফিগারমেন্ট করতে পারবে না। আবার যদি আপনি আইনের দিকে আসেন তাহলে দেখবেন যে আমাদের ১৯৬৮-এর একটি পুরাকীর্তি আইন আছে। খুবই পুরনো একটা আইন। কিন্তু স্বাধীন দেশ হিসেবে যেসব বিষয় প্রতিফলিত হওয়া দরকার, সেই বিবেচনায় আমি বলব আইনটি অনেকটাই সেকেলে। তবে আইনের স্পিরিট যদি মেনে নেয়া হয় তাহলেও আমাদের ঐতিহাসিক স্থান, ভবন ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে যাওয়ার কথা নয়। আইনের উদ্দেশ্য হলো, যত পুরাকীর্তি আছে তার একটা বড় সংজ্ঞা এখানে দেয়া হয়েছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা হবে, সুরক্ষা করা হবে। প্রিজার্ভ প্রটেকশনের ক্ষেত্রে আগে যে আইনগুলো ছিল, যেমন ১৯০৪ সালের একটা আইন ছিল, সবগুলোকে সন্নিবেশ করা হয়েছিল। আইনের ১০নং ধারায় কিছু প্রটেক্টেড অ্যান্টিকুইটি রিপিয়ার করার সুযোগ আছে। এখানে আবার সরকারের গার্ডিয়ানশিপ নিয়ে নেয়ার সুযোগ আছে বা গার্ডিয়ান হিসেবে সরকারকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেয়ার সুযোগ আছে। আবার যদি ১৯নং ধারা পড়েন তাহলে সেখানে দেখবেন, কোনো না কোনোভাবে সরকারকে গার্ডিয়ান হিসেবে নিযুক্ত করা পুরাকীর্তিগুলোর কোনো ক্ষতি করা যাবে না। কিন্তু পুরাকীর্তি সুরক্ষার দায়িত্ব সরকারের বা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরেরএকথা আইনটির মধ্যে বলা নেই।

আমার জানামতে, ৪৮০টির মতো সাইটকে পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যদিও সংবিধান বলেছে, এগুলো জাতীয় সম্পদ এবং কেউ এর ক্ষতি করতে পারবে না। আইনটি সংবিধানের আগে। এটি ১৯৬৮ সালের। সেখানে সরকারকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এবং অ্যান্টিকুইটির একটা বড় সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এবার ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় আসেন। সেখানে বলা আছে, সুরক্ষিত ঘোষিত কোনো স্থানে কোনো রকম নির্মাণকাজ করতে চাইলে সরকারের অনুমতি নিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে আপনি কাজ করতে পারবেন না। এগুলো জাতীয় আইন। এগুলোর সীমাবদ্ধতা আছে। সেগুলো সেকেলে এবং বিশেষ কমিটি গঠন বাদে অটোনোমাস প্রতিষ্ঠান গড়ার ক্ষেত্রে আইনগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে না। আদালত বলে দিয়েছেন হাজার ২০০ স্থান বা স্থাপনাকে প্রটেক্টেড ঘোষণা করতে হবে। এখনকার প্রস্তাবিত ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যানে রাজউক কিন্তু তা পুরোপুরি বিবেচনায় নেয়নি। তারা কেবল একশর নিচে বিল্ডিংকে চিহ্নিত করেছে। আসলে ঐতিহ্য সেই অর্থে ডিফাইনড নয়, কিন্তু পুরাকীর্তি ডিফাইন্ড। ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণ করার কথা বলা আছে। দেশীয় আইন ছাড়াও ইউনেস্কোর যে কনভেনশন আছে, সেটি আমাদের কালচারাল ন্যাচারাল হেরিটেজ সুরক্ষা করতে বলে। তারও আমরা অনুসমর্থনকারী রাষ্ট্র। সেই কনভেনশনেও মূল দায়িত্বটা জাতীয় সরকারকেই দেয়া হয়েছে। ফলে হ্যাঁ, ঐতিহ্যের হয়তো সংজ্ঞা পাবেন না, কিন্তু ঐতিহ্যের ধারক বাহককে সংরক্ষণের কথা সংবিধানেও বলা আছে, আইনেও আছে। সেই আইনটি দেশেও আছে, একই সঙ্গে আন্তর্জাতিকভাবেও আছে।

[চলবে]

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন