যেভাবে কাটছে ‘তিন কন্যা’র দিনকাল

ফিচার প্রতিবেদক

দেশের চলচ্চিত্রজগতের দুই কিংবদন্তি চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব কবরী ওয়াসিমকে হারিয়ে তিন কন্যাখ্যাত সুচন্দা, ববিতা, চম্পা তিনজনই বেদনার্ত হয়েছেন। কারণ চলচ্চিত্র দুনিয়া একটি পরিবারের মতোই। জীবন চলার পথে নিজের পরিবারের মানুষের চেয়ে হয়তো চলচ্চিত্র পরিবারের মানুষের সঙ্গেই তাদের সময় কেটেছে বেশি। কারণে প্রায় একই সময়ে কাজ শুরু করা সহকর্মীদের অকালে চলে যাওয়াটা তাদের শোকার্ত করেছে। করোনাকালে তারা তিন বোনই নিজেদের বাসায় অবস্থান করছেন। এরই মধ্যে সুচন্দা, ববিতা চম্পা করোনার টিকা নিয়েছেন।

তিন বোনের তথা একসময়কার জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের সময় কাটছে কীভাবে? প্রশ্নের জবাবে সুচন্দা বণিক বার্তাকে বলেন, কিছুদিন আগেও বেশ অসুস্থ ছিলাম। কিন্তু এখন আলহামদুলিল্লাহ বেশ ভালো আছি। করোনার মধ্যেও ব্যস্ত থাকার চেষ্টা করছি। রোজার মাসে নিয়মিত নামাজ পড়ছি, সবার জন্য দোয়া করছি। নিজের পরিবারের এবং চলচ্চিত্র পরিবারের সবারই খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করছি। নিজের গাছগুলোর যত্ন নিচ্ছি, কখনো কখনো আকাশের দিকে তাকিয়ে আকাশ দেখি, পাখি দেখি, দেখি সৃষ্টিকর্তার রহস্যময় এই পৃথিবী। যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদের ভাবনা তো মাথায় চলেই আসে। তাদের জন্যও দোয়া করি। খুব মিস করি এফডিসির সেই আগের ব্যস্ত দিনগুলো, যখন প্রতিটি ফ্লোরে ফ্লোরে শুটিং হতো, আমরা এক সেট থেকে অন্য সেটে যেতাম, খুব মজা করতাম। খুব আফসোসও হচ্ছে, কবরীর সঙ্গে শেষ কথাটা হলো না। আবার খারাপও লাগে যখন দেখি যাদের ভালোবাসি, স্নেহ করি এমন অনেকে খোঁজও নেয় না।

অন্যদিকে বাকি দুই বোন ববিতা চম্পার ব্যাপারে সুচন্দা জানান, ববিতা চম্পা সুস্থ থাকলেও তাদের মন খারাপ। কারণ ১৯৭৩ সালে ওয়াসিমের চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে পথচলা শুরু হয়েছিল ববিতার বিপরীতে রাতের পর দিন সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। সেই ওয়সিম চলে গেছেন। সেই সঙ্গে চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে কবরী, চলচ্চিত্রজন শফিউজ্জামান লোদীর প্রয়াণেও কষ্ট পেয়েছে তিন বোন। সুচন্দা বলেন, কবরী আপা চলে গেলেন, তার ছোট ছেলে শানের কথা খুব ভাবছি আমরা, ছেলেটা হয়তো ক্ষণে ক্ষণে মাকে খুঁজবে, খুব মায়া লাগছে আমাদের। একজন মা হিসেবে আমাদেরও এসব ভাবনাই বারবার চলে আসছে। কারণ আমাদেরও যে সন্তান আছে।

অভিনেত্রী চম্পা ঘরেই নিরাপদে সময় কাটানোর চেষ্টা করছেন। এর মধ্যে তার কাছে অনেক নাটক-সিনেমারও প্রস্তাব গিয়েছে। কিন্তু তিনি করোনার পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই কাজ করার পক্ষপাতী নন। তবে চম্পা তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা চয়নিকা চৌধুরীর বিশ্ব সুন্দরী জন্য বেশ সাড়া পাচ্ছেন। মুক্তির অপেক্ষায় আছে তার অভিনীত শান সিনেমাটি। ১৯৮৫ সালে শিবলী সাদিকের পরিচালনায় তারা তিন বোন প্রথমবার একসঙ্গে তিন কন্যা সিনেমায় অভিনয় করেন। সুচন্দা ববিতা দুজনই চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য আজীবন সম্মাননা ভূষিত হয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন