ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক

আতঙ্কের নাম মিরসরাই অংশের ২৮ কিলোমিটার

রাজু কুমার দে, মিরসরাই

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই অংশের ২৮ কিলোমিটার যেন আতঙ্কের নাম। মিরসরাইয়ের ধুমঘাট ব্রিজ থেকে থেকে বড়দরগারহাট পর্যন্ত সড়কটি ক্রমেই ভয়ানক হয়ে উঠছে। সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। ১৬ মাসে সড়কটিতে ১১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ২৮ জন। সময়ে আহতের সংখ্যা ১০৪।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সড়কের সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা হলো জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বিএসআরএম গেট, মিরসরাই সদর ইউনিয়নের মিঠাছড়া বাজারের প্রবেশমুখ, সুফিয়া রোড, বড়তাকিয়া বাজার, মিরসরাই প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সামনে হাদিফকিরহাট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক, চালকের অসতর্কতা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, অবৈধ যানবাহনের আধিক্য, অদক্ষ চালক, বেপরোয়া গতি, চালকের লাগামহীন প্রতিযোগিতা এসব দুর্ঘটনার জন্য বেশি দায়ী।

মিরসরাই, জোরারগঞ্জ থানা, জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ের ধুমঘাট থেকে বড়দারগারহাট পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার অংশে প্রায়ই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত সড়কে ১১৫টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে ২৮ জন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০৪ জন।

জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট পুলিশ ফাঁড়ির দেয়া তথ্যমতে, দুর্ঘটনাপ্রবণ সড়কের ধুমঘাট ব্রিজ থেকে বড়তাকিয়া বাজার পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটারেই ১৬ মাসে আটজন মারা গেছে।

সর্বশেষ গত ১৬ মার্চ ভোরে মিরসরাই সদরের বাদামতলী এলাকায় কাভার্ডভ্যানে পেছনে আলু বোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় ট্রাকচালক আমিনুর রহমান (৩৮) ঘটনাস্থলে নিহত হন। আমিনুর বগুড়া জেলার নন্দীগ্রামের চাঁদগ্রাম এলাকার আফজাল হোসেনের ছেলে। দুর্ঘটনায় ট্রাকচালকের সহকারী এনামুল হক গুরুতর আহত হন।

এর আগে ১৪ মার্চ দুপুর ১২টায় মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের হিঙ্গুলী ব্রিজ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে যায়। এতে আহত হয় কমপক্ষে ১০ জন। এছাড়া ১২ মার্চ ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সোনাপাহাড় এলাকায় একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীতমুখী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পার্থ গুহ হানিফ আহম্মদ নামে দুজন যন্ত্রশিল্পী নিহত ছয়জন আহত হন।

দুর্ঘটনাকবলিত হিল কিং বাসের যাত্রী জেসিয়া আক্তার জেসি নূর নাহার জানান, চালকের নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানোর কারণে যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনার শিকার হয়। গাড়ি চালানোর সময় চালককে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফিরোজ হোসেন জানান, হাইওয়ে পুলিশ সবসময় ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালায়। এছাড়া দুর্ঘটনা কমাতে চালক যাত্রীদের সচেতন করতে ঝুঁকিপূর্ণ স্পর্টগুলোয় বোর্ড স্থাপন করেছে।

মিরসরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) দীনশ চন্দ্র দাশগুপ্ত জানান, গভীর রাতে চালকরা চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর জন্য অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। এছাড়া কোনো কোনো চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালান। দুর্ঘটনা কমাতে মিরসরাই থানা পুলিশের পক্ষ থেকে লিফলেটসহ বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন