বন্ধ আবাসিক হোটেল-গেস্টহাউজ

কক্সবাজারে সংকটে ৩০ হাজার কর্মজীবী

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, কক্সবাজার

কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় একটি আবাসিক হোটেলে তিন বছর ধরে চাকরি করছেন কুমিল্লার মোহাম্মদ আলম। স্ত্রী দুই ছেলে নিয়ে থাকেন শহরের কলাতলীতে একটি ভাড়া বাসায়। হঠাৎ চাকরি হারিয়ে সংকটে পড়েছেন তিনি।

মোহাম্মদ আলম বলেন, মার্চের বেতনে এপ্রিল মাসটা কোনোমতে চলছি, কিন্তু দুই মাসের বাসা ভাড়ার টাকা বাকি। চলছে রোজা, এরপর ঈদ। কীভাবে সংসার চালাব, ভেবে পাচ্ছি না। শুধু আলম নয়, চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক।

কক্সবাজারের চার শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ, কটেজ এবং দুই শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ বলেন, সাত শতাধিক আবাসিক হোটেল-গেস্টহাউজ দুই শতাধিক রেস্তোরাঁয় চাকরি করছেন অন্তত ৩০ হাজার লোক। লকডাউন শুরুর পর অন্তত ১৫ হাজার কর্মচারীকে বাধ্যতামূলক ছাঁটাই করা হয়েছে। নানা চেষ্টা তদবির করেও তারা এপ্রিলের বেতন পাচ্ছেন না। অনেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

প্রসঙ্গে হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ১১ মাস চাকরি ১২ মাসের বেতন, নিয়মে চলে আসছে কক্সবাজারের হোটেলে কর্মচারীদের চাকরি। রোজার এক মাস কর্মচারীদের ছুটিতে রাখা হয়। সময় বেতনের সঙ্গে বোনাসও দেয়া হয়। কিন্তু গত বছর মার্চে করোনার প্রভাবে পাঁচ মাস হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ ছিল। ১৭ আগস্টের পর খোলার প্রস্তুতি নিতেই তিন মাস চলে গেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ব্যবসা করেছে হোটেল-মোটেলগুলো। এখন আবার সাতদিনের লকডাউন। চার শতাধিক হোটেল-মোটেল আড়াই শতাধিক রেস্তোরাঁ আবার বন্ধ হয়ে গেল। লোকসান দিতে দিতে মালিকরা ক্লান্ত। তার পরও আমরা কর্মচারীদের বেতন-বোনাস দিতে মালিকপক্ষকে চাপ দিচ্ছি। এখন দরকার বেকার কর্মচারীদের মানবিক সহায়তা মালিকদের সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মোহাম্মদ শাকের বলেন, কোনো লোকজন যাতে সৈকতে নামতে না পারে, সেজন্য একাধিক পয়েন্টে পুলিশি পাহারা বসানো আছে।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকার ঘোষিত লকডাউন চলছে। এটির শতভাগ বাস্তবায়ন জরুরি। লকডাউনে হোটেল-মোটেল ছাড়াও কক্সবাজার শহর সৈকত এলাকার অন্তত ৩০টি শপিংমল, ২৫৫টি রেস্তোরাঁসহ ছোটবড় প্রায় ১২ হাজার দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা যেমন চাকরি হারিয়ে দিশেহারা, তেমনি মালিকপক্ষও তাদের ব্যবসা টিকে থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান। তাই উভয় পক্ষকে সহনশীল হওয়া প্রয়োজন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন