করোনার দ্বিতীয় ঢেউ

ধাক্কা সামলে দ্বিতীয়ার্ধে রেকর্ড স্মার্টফোন বিক্রির সম্ভাবনা ভারতের

বণিক বার্তা ডেস্ক

গত বছর বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অনলাইননির্ভরতা বেড়েছে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বহুগুণ। সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার লক্ষ্যে ঘরে থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার, অনলাইন ক্লাস, ভিডিও কনফারেন্সে হোম অফিস এমনকি চিকিৎসা, সবই হচ্ছে অনলাইনে। সময় কাটাতে অনেকে দীর্ঘসময় পার করছেন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজন স্মার্টফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার। ফলে করোনার সময়ে অনেক পণ্যের চাহিদা কমে গেলেও বেড়েছে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ট্যাবের চাহিদা। তবে স্মার্টফোন বিক্রি বেড়েছে সর্বাধিক। ফোন নির্মাতা সব কোম্পানিই নতুন নতুন ফোন নিয়ে হাজির হচ্ছে। স্মার্টফোনের অন্যতম বৃহৎ বাজার ভারতেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্মার্টফোন বিক্রি বেশ চাঙ্গা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হানা দিলেও আগামী কয়েক সপ্তাহ ভারতে স্মার্টফোন বিক্রি চাঙ্গা থাকবে বলে আশা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। 

ভারতের মোট স্মার্টফোন বাজারের ২০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করছে দিল্লি মুম্বাই। অনলাইননির্ভরতা বৃদ্ধিতে গত কয়েক সপ্তাহের মতো আগামী কয়েক সপ্তাহ স্মার্টফোন বিক্রি চাঙ্গা থাকলেও প্রলম্বিত লকডাউনে নয়ডা বাণিজ্য অঞ্চলের স্মার্টফোন নির্মাণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ ভারতের মোট স্মার্টফোনের ৬০ শতাংশই নির্মাণ হচ্ছে নৈডাতে।

আপাতত মুম্বাই দিল্লিতে ঘোষিত লকডাউনে প্রিমিয়াম স্মার্টফোন সেগমেন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এটা সবচেয়ে দ্রুত সম্প্রসারমাণ খাত হিসেবে দাঁড়িয়েছে। গত তিন প্রান্তিকেই সেগমেন্ট ৭০ থেকে ১০০ শতাংশ সম্প্রসারিত হয়েছে। দক্ষিণ দিল্লির এক অ্যাপল স্টোরের ব্যবস্থাপক জানান, এপ্রিলে আমাদের বিক্রির লক্ষমাত্রার ৫০ শতাংশ অর্জন করব কিনা সন্দেহ। কোনো উৎসব মৌসুম না থাকলেও অন্য সময় আমরা প্রতিদিন চার-পাঁচটি আইফোন বিক্রি করতাম এবং ছুটির দিনগুলোতে বিক্রি হতো ১০-১১টি।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে নেয়া লকডাউনের অর্থনৈতিক অভিঘাত কেমন হবে তা চিহ্নিত করতে হিমশিম খাচ্ছে বাজার বিশ্লেষকরা। কয়েক সপ্তাহ চাঙ্গা বিক্রির রেশ থাকলেও পরবর্তী তিন-চার মাস বিক্রি স্বাভাবিক হবে না, এমন আশঙ্কা তাদের। হয়তো পরবর্তী কোনো উৎসব মৌসুমে তা ফের চাঙ্গা হতে পারে।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের পূর্বাভাস, ভারতব্যাপী চলমান লকডাউন বিধিনিষেধের কারণে চলতি এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে স্মার্টফোনের চালান ৫০ লাখ ইউনিট কমে কোটি ২০ লাখ থেকে কোটি ৪০ লাখ ইউনিটে দাঁড়াতে পারে।

কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের গবেষণা পরিচালক তরুণ পাঠক জানান, কভিড হটস্পটগুলোতে আমরা এরই মধ্যে চালান কমে যেতে দেখছি। তবে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হবে নয়ডার লকডাউন। কারণ এখানে ভারতের মোট স্মার্টফোনের ৬০ শতাংশ তৈরি হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সাপ্লাই চেইনে চলমান বৈশ্বিক সংকটের বিষয়টি আমলে নিলে নয়ডাতে কারখানা কার্যক্রম বন্ধ হলে অপো, ভিভো, রিয়েলমি, ওয়ানপ্লাস, স্যামসাং লাভার মতো স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানির ডেলিভারি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তবে আইডিসি ইন্ডিয়ার গবেষণা পরিচালক নভকেন্দর সিং বেশ আশাবাদী। তিনি বলেন, ২০২০ সালের শিক্ষা আমলে নিলে দেখতে পাব, কয়েক মাস বিক্রিতে শ্লথগতি থাকলেও পরবর্তী সময়ে বেশ চাঙ্গা ভাব দেখা দিতে পারে। চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ভারতে স্মার্টফোন বিক্রিতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে মনে করেন তিনি। ইটি টেলিকম

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন