এক বছরেরও বেশি সময় পর অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দারা নিউজিল্যান্ডে অবাধ ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছে। সোমবার অকল্যান্ড বিমানবন্দরে হয়ে গেল যেন মহাপুনর্মিলন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড ট্রাভেল বাবল চালু করেছে। দুই দেশের বাসিন্দাদের ভ্রমণ করতে এখন আর কোয়ারেন্টিন পালনের প্রয়োজন নেই। দীর্ঘদিন পর এমন সুযোগ পেয়ে সোমবার হাজারো যাত্রী উড়োজাহাজের টিকিট কেটে রেখেছিল। খবর বিবিসি।
কঠোর বিধিনিষেধের কারণে দুই দেশই করোনা সংক্রমণের হার কম রাখতে পেরেছে। সোমবার ভোর হওয়ার আগেই নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য অস্ট্রেলীয় বাসিন্দারা দেশটির বিমানবন্দরে এসে জমা হতে থাকে। সিডনি বিমানবন্দরের যাত্রী ডন ট্র্যাট বিবিসিকে বলেছেন, ‘বুঝতে পারিনি আজ আমি এতটা আবেগতাড়িত হয়ে যাব।’
বেশির ভাগ যাত্রী প্রিয়জনের সঙ্গে দেখা হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অবশ্য কারো কারো কাছে এটি ছিল স্মরণীয় ঘটনা। সিডনির জন পালাগি বলেন, ‘আমার বড় ভাই গত বৃহস্পতিবার মারা গেছেন। আমরা তখন যেতে পারিনি। কিন্তু এখন কোয়ারেন্টিন ছাড়াই যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। গিয়ে তাকে শেষ বিদায়টা দিতে পারব। সেদিক চিন্তা করে খুবই ভালো লাগছে।’
মহামারীর প্রথম ঢেউয়ের প্রকোপে গত বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয় এবং দুই দেশে ভ্রমণের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা চালু করে। সোমবার দিনের শুরুতে সিডনি বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক টার্মিনালটি খুব ব্যস্ত ছিল। চেক ইন ডেস্কের সামনে ছিল দীর্ঘ সারি। অনেক মা-বাবা তাদের সন্তানদের সান্ত্বনা ও আনন্দ দিয়ে প্রথম ফ্লাইট ধরার জন্য ভোরে ঘুম থেকে ওঠার ক্লান্তি ভুলিয়ে দিয়েছিল।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, কিছু যাত্রী আমাকে বলছিল যে তারা ভোরে এসে বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষা করছিল। অনেকে আনন্দে সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। জেস্টার ফ্লাইটের প্রথম বিমানটি কানায় কানায় পূর্ণ ছিল।
মহামারীর কারণে পর্যটন ও উড়োজাহাজ খাতের জন্য ছিল গত বছরটা বিপর্যয়ের। ফলে এ দিনটা উভয় শিল্পের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। একই সঙ্গে দীর্ঘ এক বছর পর পরিবার-পরিজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার মুহূর্তটি ছিল অসাধারণ।