দিনাজপুরে উচ্চফলনশীল পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ

বণিক বার্তা প্রতিনিধি, দিনাজপুর

দিনাজপুরে কৃষক পর্যায়ে উচ্চফলনশীল বারি পেঁয়াজ--এর উৎপাদন সংরক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে। দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করে প্রান্তিক চাষীদের কাছে সহজলভ্য করতে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মো. জাফর ইকবাল জানান, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধানে ৫৭৭ জন কৃষককে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে এসএমই বিভাগে সাতজনের তিন বিঘা, রাজস্ব বিভাগে ৭০ জনের এক বিঘা প্রণোদনা বিভাগের ৫০০ জন কৃষকের ২৫ শতক জমিতে পেঁয়াজবীজ প্রদর্শনী করা হয়েছে। আর্থিকভাবে লাভজনক হওয়ায় কৃষি অফিসের আওতার বাইরেও জেলায় আরো বহু কৃষক নিজ উদ্যোগে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করছেন।

তিনি আরো জানান, এর আগে উদ্যোক্তা তৈরি রাজস্ব খাতের আওতায় এসব কৃষককে আধুনিক চাষ পদ্ধতি, বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বগুড়া দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে একাধিকবার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এতে করে কৃষকরা বারি পেঁয়াজ- এবং অন্যান্য নতুন জাতের পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার কৃষক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি থেকে তাকে বারি পেঁয়াজ--এর কন্দ দেয়া হয়েছে। এসব কন্দ গত নভেম্বরে লাগানো হয়। বর্তমানে পেঁয়াজের ফুল থেকে বীজ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

একই উপজেলা কৃষক মো. রাজিউল ইসলাম জানান, আমি নিজেই পেঁয়াজ আবাদ করি। কৃষি অফিসের প্রশিক্ষণ নির্দেশনা অনুযায়ী প্রদর্শনীর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে পেঁয়াজের বীজ পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছি। উৎপাদিত বীজ থেকে নিজেই পেঁয়াজ রোপণ করব। উদ্বৃত্ত বীজ বাইরে বিক্রি করে দেব।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. তৌহিদ ইকবাল জানান, পেঁয়াজ বাংলাদেশের একটি অর্থকরী মসলা ফসল। রবি মৌসুমে চাষীরা পেঁয়াজের বীজ চাষ করে অধিক মুনাফা অর্জন করতে পারেন। দিনাজপুর জেলার মাটি আবহাওয়া পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। ২০২০-২১ মৌসুমে জেলায় হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে ২৫ হাজার ৬৩৫ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে। জেলায় যে পরিমাণ পেঁয়াজ উত্পন্ন হয়, সে অনুপাতে বীজ উত্পন্ন হয় না। কৃষি বিভাগ থেকে জেলার পেঁয়াজবীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ বিপণনে চাষীদের নিয়মিত বিভিন্ন পরামর্শ প্রশিক্ষণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। ভালো মানের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করে জেলার কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন