প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের ব্যবসা কমেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি ২০২১ হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৩৫ কোটি টাকার ব্যবসা কমেছে টেলিযোগাযোগ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি গ্রামীণফোন লিমিটেডের। ব্যবসা কমে যাওয়ার পাশাপাশি সময়ে কোম্পানিটির আর্থিক কর বাবদ ব্যয়ও বেড়েছে। এতে চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে এর আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭৮ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে কোম্পানিটির।

গতকাল বিকালে অনুষ্ঠিত সভায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন করেছে গ্রামীণফোনের পর্ষদ। অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় হয়েছে হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে রাজস্ব আয় হয়েছিল হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় কমেছে দশমিক ৭৫ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির পরিচালন মুনাফা হয়েছে হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে পরিচালন মুনাফা ছিল হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। আর চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে ৮৯০ কোটি টাকা। যেখানে এর আগের বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল হাজার ৬৮ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির নিট মুনাফা কমেছে ১৬ দশমিক ৬৮ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে টাকা ৬০ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল টাকা ৯২ পয়সা। ৩১ মার্চ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকা ১৯ পয়সা, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩৬ টাকা ৩১ পয়সা। গত বছরের তুলনায় চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে গ্রামীণফোনের নগদ প্রবাহ বেড়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট পরিচালন নগদ প্রবাহ (এনওসিএফএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৯৭ পয়সায়, যা এর আগের বছরের একই সময়ে ছিল টাকা ৮৪ পয়সা।

সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১৪৫ শতাংশ চূড়ান্ত নগদ লভ্যাংশ প্রদানের সুপারিশ করেছে গ্রামীণফোনের পর্ষদ। এর আগে কোম্পানিটি ১৩০ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সব মিলিয়ে আলোচ্য হিসাব বছরে মোট ২৭৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছেন কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ সমাপ্ত হিসাব বছরে গ্রামীণফোনের ইপিএস হয়েছে ২৭ টাকা ৫৪ পয়সা, এর আগের হিসাব বছরে যা ছিল ২৫ টাকা ৫৬ পয়সা। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ শেষে কোম্পানিটির এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ৫৯ পয়সা, যা এর আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ২৮ টাকা ৪০ পয়সা।

এর আগের ২০১৯ হিসাব বছরে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৩০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। এর আগের ২০১৮ ২০১৭ হিসাব বছরে যথাক্রমে ২৮০ ২০৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা।

২০০৯ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত গ্রামীণফোনের অনুমোদিত মূলধন হাজার কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হাজার ৩৫০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভে রয়েছে হাজার ৬৯২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৩৫ কোটি লাখ ২২। এর মধ্যে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৯০ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৫৫ শতাংশ, বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে দশমিক ৩২ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার।

সর্বশেষ নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কোম্পানিটির মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ১৩ দশমিক ৪৫, হালনাগাদ প্রান্তিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে যা ১২ দশমিক ৪৯।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল গ্রামীণফোনের শেয়ার সর্বশেষ ৩৪৩ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। গত এক বছরে শেয়ারটির দর সর্বোচ্চ ৩৯১ টাকা থেকে সর্বনিম্ন ২৩৮ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করেছে। ৪৬ হাজার ৪৩৬ কোটি টাকার বাজার মূলধনের ভিত্তিতে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবার শীর্ষে রয়েছে গ্রামীণফোন।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন