এখন মানসিকভাবে শক্ত থাকাটা জরুরি

নৃত্যের সঙ্গে তার যোগাযোগ বেশ পুরনো। চার বছর বয়সে নাচ শেখা শুরু করেন মেহবুবা মাহনূর চাঁদনী, যিনি মিডিয়ায় চাঁদনী নামেই বেশি পরিচিত। তিনি হিরুর অধীনে ভারতনাট্যম, আধুনিক বাংলাদেশী নৃত্য শেখেন। বিটিভিতে প্রচারিত নতুন কুঁড়িতে দলগত নাচে তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। তারপর শুরু একে একে নাটক চলচ্চিত্রে অভিনয়। তবে খুব বেশি নয়। তবু নিপুণ অভিনয় গুণে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। কিছুদিন নিয়মিত অভিনয়ের সঙ্গে থাকলেও পরে মাঝপথে থেমে যান তিনি। সম্প্রতি আবারো ফিরেছেন অভিনয়ে। তার সমসাময়িক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন বণিক বার্তার সঙ্গে। আলাপ করেছেন কুদরত উল্লাহ

প্রায় পাঁচ বছর পর ফিরলেন অভিনয়ে, কেমন লাগছে?

হুম, দীর্ঘ একটা বিরতি। লাইফে অনেক কিছু সময়ের ওপর ছেড়ে দিতে হয়। তাই ফিরলাম একটু দেরিতে। এটা ভালো লাগার মতোই বিষয়। কারণ আমার ভালোবাসার জায়গা অভিনয় নাচ। তাই বলতেই হচ্ছে, রকম চরিত্র পেলে অবশ্যই নিয়মিত অভিনয় করব।

দীর্ঘ বিরতি দিয়ে ফেরার কোনো বিশেষ কারণ আছে?

(একটু হেসে) আমি আগেও যে খুব বেশি একটা অভিনয়ে নিয়মিত ছিলাম এটা কিন্তু নয়। ভালো গল্প কিংবা চরিত্র মনের মতো হলেই অভিনয় করেছি। একবারে ঝাঁপ দিয়ে সব চরিত্রে অভিনয় করার মতো মানুষ আমি নই। একটু বুঝে স্ক্রিপ্ট পড়ে তারপর অভিনয় করতে চাই। এখন যেহেতু ফিরেছি তার নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে।

চরিত্রের কথা বলছিলেন...সম্প্রতি আপনার অভিনীত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অসমাপ্ত চা নিয়ে শুনতে চাই

মাহমুদ নিয়াজের পরিচালনায় একক চরিত্রের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের কাহিনী, চিত্রনাট্য সংলাপ লিখেছেন মৌসুমী আচার্য্য। নিউয়েরা ফিকশনের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটি নির্মিত হয়েছে। এতে একজন নারীর কন্যা থেকে স্ত্রী জননী হয়ে ওঠার গল্প তুলে ধরা হয়েছে। এই গল্পের মধ্যে সবচেয়ে ভালো লেগেছে যে অসমাপ্ত চা মানে মানুষের জীবনে আসলে কোনো কিছুই পরিপূর্ণতা পায় না। এটা চায়ের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে। জীবনের সবকিছুর মোড় ঘুরে যায় যেকোনো সময়, অসমাপ্তই থেকে যায় সবকিছু। সময়ের পরিবর্তনে বাস্তবতার নিরিখে কীভাবে একটি মেয়ের ছোট ছোট স্বপ্ন, সাধ ইচ্ছাগুলো হারিয়ে যায়, নারীর কাঁধে যখন একে একে দায়িত্ব কর্তব্যের ভার এসে পড়তে থাকে, তখন তার নিচে চাপা পড়ে যায় তার ছোট ছোট স্বপ্নগুলো। এটা আমাদের বর্তমান সমাজেরই চিত্র। আর সেগুলো তুলে ধরেই এই আয়োজন।

লকডাউনে শুটিং হয়েছে?

শুরুতে লকডাউনের যে সময়ে শুটিংয়ে কোনো বিধিনিষেধ ছিল না তখন এর শুটিং হয়েছে। পুরো টিম মিলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তারপর শুটিংয়ের দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। কোনো ধরনের ভোগান্তিতে যেন কেউ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রেখেছে পুরো টিম।

বর্তমান সময়ে তো সবকিছু বন্ধ। লকডাউনে বাসায় কী করছেন?

তেমন কিছুই করছি না। আবার অনেক কিছুই করছি। মানে গত বছর লকডাউনে ঘরে বসে ইউটিউব চ্যানেল ওপেন করেছিলাম। সেখানে আমি নিজেই স্ক্রিপ্ট লিখে, নিদের্শনা দিয়ে, সম্পাদনা করে ছোট ছোট ভিডিও আপলোড করেছি। বেশ সাড়া মিলেছে আমার ভক্তদের কাছ থেকে। এখন অন্যান্য কাজের পাশাপাশি নিজের চ্যানেলটির জন্য কাজ করছি। ঘরে বসে এখন যতটা করা যায় করছি। আর মুভমেন্ট পাস নিয়েছি। যদি খুব বেশি প্রয়োজন পড়ে তাহলে শুটিং করতে বাইরে যাব। যদি অনুমতি পাই তাহলে ইচ্ছা আছে কিছু নির্মাণের।

তাহলে আপনি কি কমার্শিয়াল নির্মাণ, মানে নাটক কিংবা চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন?

আরে না না, কি যে বলেন! এত বড় ইচ্ছা নেই আমার। আমি তো জাস্ট নিজের ইউটিউব চ্যানেলের জন্য এগুলো করছি। একদিকে সময়টা কাজে লাগাচ্ছি অন্যদিকে শিল্পের সঙ্গেই আছি, যাতে মানসিকভাবে শক্ত থাকতে পারি। চারদিকে যা অবস্থা তাতে নিজের মানসিক অবস্থা শক্ত থাকাটা খুব জরুরি। সচেতন থাকাটাও খুব জরুরি।

হ্যাঁ, অনেক গুণীজনই তো কভিডে প্রাণ হারালেন...

কি আর বলব, ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না কী করলে মহামারী চলে যাবে আর গুণীজনেরা আমাদের মাঝে আরো কিছুদিন থাকবেন। জানেন খুব মন খারাপ হয়, কিন্তু কোনো উপায় নেই। মেনে নিয়েই চলতে হচ্ছে। মানসিকভাবে ঠিক থাকার একটা চেষ্টা করছি।

নাচের সঙ্গে যোগাযোগ আছে?

নাচ দিয়েই তো আমার শুরু। থাকবে না কেন বলুন। নাচই তো আমার প্রাণ। সঙ্গে অভিনয়টা ভালোবাসি। এখনো নাচি। নাচতে আমার ভালো লাগে। লকডাউন চলে গেলে হয়তো নাচে আবারো নিয়মিত দেখতে পাবেন। সেই সঙ্গে পাবেন অভিনয়েও দেখতে। কিন্তু ওই যে আমার শর্ত একটাই, স্ক্রিপ্ট পড়ে যদি মনে হয় চরিত্রটা আমার সঙ্গে মানাবে, তাহলে আমার অভিনয় করতে কোনো আপত্তি নেই। কিছু পরিকল্পনা তো আছেই। তবে এখনই জানাচ্ছি না। আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক পৃথিবীর। তারপর জানাতে পারব সবাইকে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন