কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটি

চেক নিষ্পত্তি শুরু হলেও ইএফটির সংকট কাটেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুদিন বিকল থাকার পর অবশেষে সচল হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউজ (বিএসিএইচ) গতকাল সকাল থেকে দেশের ব্যাংক খাতের আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তির প্রধানতম মাধ্যম সক্রিয় ছিল। ফলে গত মঙ্গল বৃহস্পতিবার ব্যাংকগুলোতে জমা হওয়া বেশির ভাগ চেক গতকাল নিষ্পত্তি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বিএসিএইচের পাশাপাশি আন্তঃব্যাংক রেপো কলমানি লেনদেনের মাধ্যম এমআই মডিউলও সচল হয়েছে। তবে এখনো বিকল অবস্থায় আছে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক (বিইএফটিএন) অনলাইনে আন্তঃব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমের বিকল্প হিসেবে রিয়েল টাইম গ্রস সেটলমেন্ট সিস্টেম বা আরটিজিএসকে সক্রিয় করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের দুটি সার্ভারের সংযোগকারী বিটিসিএলের অপটিক্যাল ফাইবার লাইনের ত্রুটিসহ সমন্বয়হীনতার কারণে ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে বিএসিএইচ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই দিন ব্যাংকগুলোতে জমা হওয়া চেকের নিষ্পত্তি আটকে যায়। পাশাপাশি বন্ধ হয়ে যায় বিইএফটিএন এমআই মডিউলও। ফলে মঙ্গল বৃহস্পতিবার দেশের আন্তঃব্যাংক লেনদেন ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে। তবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের চেষ্টায় পেমেন্ট ব্যবস্থা সারিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন।

বিষয়ে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন বণিক বার্তাকে বলেন, গত মঙ্গল বৃহস্পতিবার জমা হওয়া চেক গতকাল নিষ্পত্তি হয়েছে। পাশাপাশি এমআই মডিউলও সচল হয়েছে। বিইএফটিএনের বিকল্প হিসেবে আমরা আরটিজিএস ব্যবহার করছি। ভবিষ্যতে যেন পেমেন্ট ব্যবস্থায় অচলাবস্থা তৈরি না হয়, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।

দুটি সার্ভারের বাইরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরেকটি সহায়ক সার্ভার তৈরি করা দরকার বলে মনে করেন আবুল কাশেম মো. শিরিন। তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে সার্ভারগুলোকে স্বাধীন কোনো স্থানে রাখলে ভালো হয়।

অনলাইনে আন্তঃব্যাংক চেক নিষ্পত্তি হয় বিএসিএইচের মাধ্যমে। আর গ্রাহকরা বিইএফটিএন ব্যবহার করেও এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে টাকা পাঠান। কিন্তু ১৩ এপ্রিল অর্থ লেনদেনের দুটি প্রধান মাধ্যমই অকার্যকর হয়ে যায়। একই সঙ্গে অকার্যকর হয়ে যায় আন্তঃব্যাংক রেপো কলমানি লেনদেনের এমআই মডিউলও। দেশের পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রধানতম তিনটি মাধ্যম অকার্যকর থাকায় গ্রাহক ব্যাংক কর্মকর্তারা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

বিএসিএইচের মাধ্যমে গ্রাহকদের চেক, পে-অর্ডারসহ ইনস্ট্রুমেন্টভিত্তিক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। প্রতিদিন গড়ে মাধ্যমে লেনদেন হয় ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে বিইএফটিএনের মাধ্যমে প্রতিদিন লেনদেন হয় প্রায় হাজার কোটি টাকা। মঙ্গল বৃহস্পতিবার দুটি মাধ্যমে লেনদেন বন্ধ থাকায় প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন আটকে যায়। বিকল্প মাধ্যম হিসেবে আরটিজিএসকে সক্রিয় করা হয়। সাধারণত লাখ টাকার বেশি অর্থ আরটিজিএসের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু বিইএফটিএন সচল না হওয়া পর্যন্ত সব অংকের অর্থ আরটিজিএসের মাধ্যমে লেনদেন করা যাবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন