মহামারীতে রফতানি অব্যাহত রাখা বড় অর্জন —সালমান এফ রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান বলেছেন, করোনা মহামারীর সময়ও বাংলাদেশের শিল্প-কারখানাগুলো উৎপাদন এবং রফতানি অব্যাহত রেখেছে, এটা বড় অর্জন। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস (ইসিফোরজে) কর্মসূচির অংশ হিসেবে কভিড-১৯ উদ্যোক্তাবান্ধব তহবিলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কথা বলেন তিনি। ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি-অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অবদান আছে উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান বলেন, এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রজেক্টের জন্য বিশ্বব্যাংককে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী মনোভাবের কারণে বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অনেক দূর এগোতে পেরেছে। বাংলাদেশের অগ্রতির পুরো কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কেবল স্থানীয় বাজারের জন্য নয়, বৈদেশিক বাজারে রফতানির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোক্তারাও কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হবেন। করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কর্মসূচি একটি মাইলফলক। এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী (পিপিই) উৎপাদন, ডায়াগনস্টিক ইকুইপমেন্ট ক্লিনিক্যাল ইকুইপমেন্ট তৈরিতে যুক্ত উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন।

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়ন টিমবন করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এতে বিশ্বব্যাংকও এগিয়ে এসেছে। করোনা প্রতিরোধ সামগ্রীর উৎপাদনে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ জন উদ্যোক্তা সুবিধা পাবেন।

বাণিজ্য সচিব . মো. জাফর উদ্দিন বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের - বিলিয়ন ডলারের রফতানি ক্ষতি হতে পারে। তবে এতে আমরা ভীত নই। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করব। আমাদের মূল কাজ পণ্য বাজার বহুমুখীকরণ। ইসিফোরজে প্রকল্পের মাধ্যমে তা সহজ হবে। নতুন কর্মসূচিতে যোগ্য আবেদনকারীদের মধ্যে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে সহযোগিতা দেয়া হবে।

সময় নতুন কর্মসূচির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন এক্সপোর্ট রেডিনেস ফান্ডের (ইআরএফ) টিম লিডার ডেভ রাঙ্গানাইকালু। তিনি বলেন, কর্মসূচির জন্য বিনিয়োগ সহায়তার পরিমাণ হবে দশমিক মিলিয়ন ডলার। প্রতিটি উদ্যোগে বিনিয়োগ সহায়তার পরিমাণ হবে সর্বোচ্চ লাখ ডলার এবং সর্বনিম্ন ৫০ হাজার ডলার। প্রস্তাবিত কার্যক্রম ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান থাকবে। ১৮ এপ্রিল থেকেই কর্মসূচির যোগ্য আবেদনকারীরা বিনিয়োগ সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারছেন।

যেসব প্রতিষ্ঠান এমপিপিই পণ্য উৎপাদন করে স্থানীয় বাজার রফতানির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের জন্য অনুদান দেয়া হবে। দেশীয় বৈদেশিক প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে কোনো উদ্যোক্তা যদি স্থানীয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিযোগিতায় সক্ষম হয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ এমপিপিই সামগ্রী উৎপাদন করতে সক্ষম হন, তারা বিনিয়োগ সহায়তার জন্য বিবেচিত হবেন।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইসিফোরজে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। মূলত চারটি খাতের উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগী সক্ষম করে গড়ে তুলতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। অনুদান আবেদনকারী ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিভুক্ত হলে প্রকল্প থেকে ৬০ শতাংশ বিনিয়োগ সহায়তা পাবেন। আবেদনকারীর অংশগ্রহণ থাকবে ৪০ শতাংশ। এছাড়া বৃহৎ শিল্পের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সহায়তা হবে ৫০ শতাংশ।

পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই), ডায়াগনস্টিক ইকুইপমেন্ট, ক্লিনিক্যাল কেয়ার ইকুইপমেন্ট। এমপিপিই পণ্যের ডিজাইন কারিগরি মানের উন্নয়ন, প্যাকেজিং বৈচিত্র্য আনা এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন প্রণয়ন, এমপিপিই পণ্যের সহায়তামূলক কর্মকাণ্ড যেমন, গবেষণা, পণ্য উন্নয়ন, টেস্টিং সার্টিফিকেশন এবং নতুন উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রযোজ্য হবে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) এবং এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জবস প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংস্থা প্রধান উইং প্রধানরা এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের বেসরকারি খাত বিশেষজ্ঞ হোসনা ফেরদৌস সুমি প্রমুখ।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন