ইউরোপের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজার ধরতে চায় চীন

বণিক বার্তা ডেস্ক

টেসলা প্রধান ইলোন মাস্ক সাধারণত তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের সহজে প্রশংসা করেন না। কিন্তু গত সপ্তাহে যখন চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নিও তাদের এক লাখতম বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করল, তখন তাদের অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি মাস্ক। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের সব রং দেখা এক সিইওর পক্ষ থেকে অন্য সিইওর প্রতি সম্মান প্রদর্শন বলা যেতে পারে। আবার এটিকে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধির লক্ষণও বলা যেতে পারে। কারণ চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন নতুন শিল্পক্ষেত্রে হেভিওয়েট কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি অবস্থান তৈরি করতে চায়। পাশাপাশি টেসলার সামনেও একটি নতুন চ্যালেঞ্জ দিতে চায়।

টেসলার সবচেয়ে কাছের চীনা প্রতিদ্বন্দ্বী হলো নিও, জাপেং লি অটো। প্রতিযোগিতার অংশ হতে শেয়ারবাজারে তাদের মানও দ্রুত বেড়েছে। তহবিল সংগ্রহে বেশ সফলতা দেখিয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো। কারণে তারা চীনে টেসলার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যথেষ্ট অর্থ বিনিয়োগ করতে পারছে। এখন তারা ইউরোপের বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারের দিকে নজর দিয়েছে। যেটি বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড়।

এর ফলে ফক্সওয়াগনের মতো পুরনো নির্মাতার বাজার সংকুচিত হয়ে যাবে। যারা নিজেরাও বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির মাধ্যমে ব্যবসার প্রসার ঘটাতে চায়। বিলাসবহুল গাড়ি নির্মাতা যেমন যুক্তরাজ্যের জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার বা জার্মানির বিএমডব্লিউর মতো প্রতিষ্ঠানও কিছু চীনা প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের নিয়মিত ধনী গ্রাহক হারাতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে জাগুয়ার বলছে, ২০২৫ সাল নাগাদ তারা সব গাড়ি বৈদ্যুতিক করে ফেলবে এবং গত মাসে বিএমডব্লিউ জানিয়েছে, ২০৩০-এর মধ্যে ইউরোপে তারা অর্ধেকের বেশি বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি করবে।

চীন সরকার এখন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণ খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দিচ্ছে। লি অটো, নিও এবং জাপেং এখন টেসলার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। টেসলার কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী আবার তুলনামূলক বা কাছাকাছি প্রযুক্তি নিয়ে মাঠে নামছে। নিওর এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হুই ঝ্যাং বলেন, তারা টেসলা অ্যাপলের প্রযুক্তির সংমিশ্রণ ঘটাতে চান।

আগামী বছর থেকেই ইউরোপের বাজারে প্রবেশ করতে চায় নিও। এর কারখানায় এখন বছরে লাখ ২০ হাজার গাড়ি তৈরি করা যায়। যদিও টেসলার তুলনায় তা খুবই কম। কারণ টেসলা বছরে পাঁচ লাখ গাড়ি নির্মাণ সক্ষমতা অর্জন করেছে। টেসলার একটি সুবিধা হলো সম্প্রতি তারা জার্মানির বার্লিনে নতুন কারখানা খুলেছে। যেটি ইউরোপে ব্যবসা করতে সাহায্য করবে। তবে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছেও পরিমাণ অর্থ আছে যে তারা ইউরোপে কারখানা স্থাপন গাড়ি নির্মাণ শুরু করতে পারে। যেহেতু ইউরোপের গাড়ি নির্মাতারা তাদের পেট্রল বা ডিজেলচালিত মডেল হাইব্রিড গাড়ি নিয়ে ব্যবসা করত ব্যস্ত। তাই এটি চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের জন্য একটি সুবিধাজনক অবস্থা হতে পারে।           গার্ডিয়ান অবলম্বনে

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন