বঙ্গোপসাগর নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিরোধিতা ভারতের

বণিক বার্তা অনলাইন

বঙ্গোপসাগরের মহিসোপান নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের দাবির বিরোধিতা করেছে ভারত। শুক্রবার জাতিসংঘ কমিশনের কাছে মহিসোপানের সীমানা নিয়ে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের দাবির বিরোধিতার কথা জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। তবে মিয়ানমার এই দাবির বিরোধীতা না করলেও তারা পর্যবেক্ষণের সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।

বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের গভীরে অবস্থিত মহিসোপানের সীমানা নির্ধারণের জন্য জতিসংঘের কাছে আবেদন জানায় ১৩ বছর আগে। ভারত জাতিসংঘ কমিশনে বাংলাদেশের দাবির ভিত্তি হিসেবে স্থানাঙ্ক সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে আপত্তি জানিয়েছে। মিয়ানমার আপন্তি না জানালেও পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে।

বাংলাদেশের ঐ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মনে করেনভারত বাংলাদেশকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে এই আপত্তি জানিয়েছে। কেননা বঙ্গোপসাগরের গ্রে এরিয়া’ তথা ধুসর অঞ্চল নিযে ভারতের একটি দাবির বিরোধিতা করে আসছে বাংলাদেশ। মহিসোপান নিয়ে ভারতের দাবির উপর বাংলাদেশের আপত্তি প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হলে বাংলাদেশ তা সেই আপত্তি প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানায়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র বিষয়ক সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ভারতের দেওয়া বিবৃতি যাচাই বাছাই করে সিএলসিএেসে জবাব দেবে।

তিনি আরো বলেনমহিসোপান নিয়ে মিয়ানমারের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে উপযুক্ত উত্তর জমা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশের কুটনীতিকরা জানিয়েছেন২০১৯ সালে নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর সমুদ্র নিয়ে বাংলাদেশের দাবি ও ভারতের বিরোধিতার বিষয়ে কথা বলেন।

তিনি মহাসোপানের একটি অংশে বাংলাদেশের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য বঙ্গোপসাগরের মানচিত্র নরেন্দ্র মোদীকে হস্তান্তর করেন।

২০১২ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমুদ্রসীমা নির্ধারণ মামলার রায়ের ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে গ্রে এরিয়া সৃষ্টি হয়।  

২০০৯ সালে ভারত গ্রে অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার ফলে এই বিরোধগুলি সামনে চলে আসে। একই বছর ভারতের তৈরিকৃত মানচিত্রে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের ২ দশমিক ৩ মাইল এলাকা অন্তর্ভূক্তি নিয়ে আরেকটি বিতর্ক সৃষ্টি হয়। এই বিরোধ স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তি না হওয়ায় বাংলাদেশ তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তির জন্য জাতিসংঘে যায়।

২০১৪ সালে ভারতের সাথে এই নিষ্পত্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। যাতে জাতিসংঘ দুই দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ করে দেয়। এরপর জাতিসংঘের নির্ধারিত সীমানার একটি মানচিত্র নির্মাণ করে বাংলাদেশ। এর দুই বছর পর ভারত সেই মানচিত্র নিয়ে জাতিসংঘে আপত্রি জানায়।  

বাংলাদেশমিয়ানমার ও ভারতের আপত্তির বিষয়টি এখনো জাতিসংঘে বিচারাধীন আছে। 

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন