বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহায়তা

সক্ষমতা বাড়ছে টিকা পরীক্ষাগারের

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের টিকা পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনে দেবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অর্থায়নের পাশাপাশি নিজস্ব মানদণ্ড অনুযায়ী এসব যন্ত্রপাতি কিনবে তারা। বিষয়ে আগামী সপ্তাহেই সংস্থাটির সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত বছরের এপ্রিলে শুরু হয় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে কভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস শীর্ষক প্রকল্পটি। এর জন্য বরাদ্দ আছে হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের অধীনেই মূলত টিকা পরীক্ষাগারের সক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে।

প্রকল্পের পরিচালক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বণিক বার্তাকে বলেন, সরকারিভাবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যে টিকা পরীক্ষাগার রয়েছে, তার সক্ষমতা কম। পরীক্ষাগারটির সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি যা লাগবে, তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিনে দেবে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিশ্বব্যাংক, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে চারটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যন্ত্রপাতি কেনার জন্য আগামী সপ্তাহের মধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডব্লিউএইচওর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করবেন।  এসব যন্ত্রপাতি কিনতে প্রায় ২৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলেও উল্লেখ করেন কর্মকর্তা।

চলতি মাসের শুরুতে পরীক্ষাগারের জন্য চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির তালিকা উল্লেখ  করে প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। আগামী সপ্তাহে সমঝোতা স্মারক সই হলে যন্ত্রপাতি আসতে এক থেকে দেড় মাসের মতো সময় লাগবে। এরপর মেশিনগুলো বসানো হলে প্রকল্প থেকেই লোকবল নিয়োগ করা হবে। পরীক্ষাগারটির সক্ষমতা বাড়লে হেপাটাইটিস-বি, র্যাবিস, টাইফয়েড, টিটেনাসসহ বেশ কয়েকটি টিকার পরিপূর্ণ পরীক্ষা করা যাবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বণিক বার্তাকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে আমরা চুক্তি করছি, কারণ প্রকল্পটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর পরিচালনা করছে। যন্ত্রপাতি কেনার পর তা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হবে। এরপর যা লোকবল লাগবে, তা তারাই ব্যবস্থা করবে। কেননা টিকা বা ওষুধের বিষয়টি তারাই ভালো বুঝবে। নতুন লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা সহযোগিতা চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তা করতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

বিশ্বের অনেক দেশেই সমৃদ্ধ টিকা পরীক্ষাগার নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ফার্মাকোলজি সোসাইটির সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বণিক বার্তাকে বলেন, খুব কম দেশেই উন্নত টিকা পরীক্ষাগার রয়েছে। সব প্রতিরোধক টিকা পরীক্ষার জন্যই উচ্চ ক্ষমতার পরীক্ষাগার প্রয়োজন। পরীক্ষাগারের বিভিন্ন মান থাকে। যেহেতু ডব্লিউএইচও পরীক্ষাগারের জন্য যে যন্ত্রপাতি কিনবে, তা নিশ্চয়ই ভালো হবে। তারা তাদের নির্দিষ্ট মান বজায় রাখবে। দেশে সরকারি ব্যবস্থাপনায় উন্নত টিকা পরীক্ষাগার থাকলে অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, পরীক্ষাগারে যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করলেই কেবল সক্ষমতা বাড়ে না, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দক্ষ লোকবল প্রয়োজন। এছাড়া নতুন যন্ত্রপাতি সংযোজনের পর যদি দু-এক বছর বিষয়টি ডব্লিউএইচও পর্যবেক্ষণে রাখে, তাহলে আরো ভালো হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন