ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের শেয়ার কিনবে নিবরাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ অবকাশ খাতের কোম্পানি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেডের সাবসিডিয়ারি ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেডের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার কিনবে কাতারের দোহাভিত্তিক কোম্পানি নিবরাস পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিভি। সম্প্রতি শেয়ার বিক্রির বিষয়ে দুই কোম্পানির মধ্যে চুক্তি হয়েছে। চুক্তি অনুসারে প্রিমিয়ামসহ ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের প্রতিটি শেয়ারের বিক্রয়মূল্য দাঁড়াবে লাখ ৪৬ হাজার ৪১০ টাকায়। কোম্পানি সূত্রে তথ্য জানা গেছে।

শেয়ার বিক্রির বিষয়ে প্রকাশিত মূল্যসংবেদনশীল তথ্যানুসারে, নিবরাস পাওয়ার ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিভির কাছে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের ১৪ হাজার ৬৪১টি শেয়ার বিক্রি করা হবে, যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১৪ হাজার ৬৪১টি শেয়ারের দর দাঁড়ায় লাখ ৪৬ হাজার ৪১০ টাকা। এর সঙ্গে প্রিমিয়াম মিলিয়ে নিবরাস পাওয়ারের কাছে মোট কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ ডলারে ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারের শেয়ার বিক্রি করা হবে। প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২০৬ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন সাপেক্ষে চার ধাপে শেয়ার বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছে কোম্পানিটি।

শেয়ার বিক্রির বিষয়ে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের কোম্পানি সচিব মো. শরীফ হাসান বণিক বার্তাকে বলেন, নিবরাস পাওয়ার বৈশ্বিকভাবে বিদ্যুৎ খাতের বড় প্রতিষ্ঠান। তাদের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ফলে আমাদের সক্ষমতা বাড়বে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের কাছে থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ শেয়ার নিবরাসের কাছে বিক্রি করা হবে। বিক্রির পর ইউনিক মেঘনাঘাট পাওয়ারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০ দশমিক ৯১ শতাংশে।

কাতার সরকারের দুই প্রতিষ্ঠান কাতার ইলেকট্রিসিটি অ্যান্ড ওয়াটার কোম্পানি কাতার ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির যৌথ উদ্যোগে ২০১৪ সালে নিবরাস পাওয়ার প্রতিষ্ঠিত হয়। বৈশ্বিকভাবে বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ্বের সাতটি দেশে মোট ১৪টি বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ রয়েছে নিবরাসের, যেগুলোর মোট স্থাপিত সক্ষমতা হাজার ৩৪৫ মেগাওয়াট। মূলত মধ্যপ্রাচ্য, সাবসাহারান আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা, পূর্ব ইউরোপ, মধ্য এশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করাই নিবরাসের লক্ষ্য। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৫ জুলাই নির্মাণ, মালিকানা পরিচালনার (বিওও) শর্তে নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে গ্যাস/আর-এলএনজিভিত্তিক কম্বাইন্ড সাইকেল ৫৮৪ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বিপিডিবির কাছ থেকে এলওআই পায় ইউনিক হোটেলের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম। কনসোর্টিয়ামের অন্য দুই অংশীদার হচ্ছে বিদেশী কারিগরি অংশীদার গুয়াইয়ামা পিআর হোল্ডিংস বিভি (বর্তমানে জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট বিভি, যা জেনারেল ইলেকট্রিকের একটি সাবসিডিয়ারি) এবং স্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্ট্র্যাটেজিক ফাইন্যান্স লিমিটেড। প্রকল্পটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি ২০ লাখ ডলার। মেঘনাঘাট এলাকায় নিজেদের প্লট থেকে বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য ২৫ একর জমি দিয়েছে ইউনিক হোটেল কর্তৃপক্ষ। প্রকল্পের কারিগরি অংশীদার জিই ক্যাপিটাল গ্লোবাল এনার্জি প্লান্টের সব যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছে। এগুলোর মূল্যমানই তাদের ইকুইটিতে রূপান্তর হবে। এলওআই অনুসারে, জ্বালানি খরচের বাইরে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের জন্য সরকারের কাছ থেকে লিভারেজ ট্যারিফ হিসেবে দশমিক ০২৩৬ সেন্ট পাবে প্লান্ট কর্তৃপক্ষ। বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পর থেকে ২২ বছর সরকার কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনবে। পাওয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্ট (পিপিএ) চূড়ান্ত হওয়ার পর ৩৬ মাসের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদনে আসার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

সর্বশেষ ৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরে উদ্যোক্তা-পরিচালক বাদে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস লিমিটেডের পর্ষদ। আলোচ্য হিসাব বছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯৫ পয়সা, যা এর আগের হিসাব বছরে ছিল টাকা পয়সা।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন