করোনা বাতাসে ছড়ানোর পক্ষে জোরালো দাবি ল্যানসেটের

বণিক বার্তা অনলাইন

নভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর জন্য দায়ী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় না বলে এতদিন দাবি করে আসা হয়েছে। কিন্তু সেই দাবি নস্যাৎ করে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে কোভিড-১৯ বেশিরভাগ বায়ুবাহিত।

 আন্তর্জাতিক জার্নাল ল্যানসেট’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।  খবর দ্যা হিন্দু।

 বার্তা সংস্থা পিটিআইর বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু জানিয়েছে- গবেষকরা দাবি করেছেন, করোনা ভাইরাস এসএআরএস-কোভ-২ প্রধানত বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায় এমন সামঞ্জ্যপূর্ণ এবং দৃঢ় প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে জনস্বাস্থ্যবিষয়ক যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে চিকিৎসার জন্য, তা ব্যর্থ হচ্ছে। এর কারণ প্রধানত বাতাস থেকে এই ভাইরাস ছড়ায়। এতে মানুষ অনিরাপদ হয়ে পড়ে এবং বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটে।

 কোঅপারেটিভ ইনস্টিটিউট ফর রিসার্স ইন এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস (সিআইআরইএস) এবং ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বৌলডারের রসায়নবিদ হোসে লুইস জিমেনেজ বলেছেন, বাতাসের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পক্ষে ব্যাপক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। বড় বড় ড্রপলেট বা হাঁচি-কাশির বড় বড় যেসব বিন্দু আকারে জলীয়বাষ্প বেরিয়ে যায় তার মাধ্যমে এই সংক্রমণ ছড়ানোর পক্ষে প্রমাণ কম।

 তিনি দাবি করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক এজেন্সিকে সংক্রমণ বিষয়ে বিজ্ঞানসম্মত বর্ণনা প্রচার করা খুব জরুরি। যাতে বাতাসের মাধ্যমে সংক্রমণ কমিয়ে আনা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে মাত্র একজন আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ৫৩ জন আক্রান্ত হতে পারে।

 যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার ছয়জন গবেষক যুক্ত ছিলেন গবেষণায়। নিজেদের দাবির পেছনে অন্তত ১০টি কারণ ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের বক্তব্য, সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটি বায়ুবাহিত হওয়ার পক্ষেই প্রমাণ বেশি।

 ছয় বিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা করা পয়েন্টগুলো হলো সুপার-স্প্রেডার (অতিমাত্রায় সংক্রমণ) ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে মানুষের আচরণ, কোন পরিসরে ঘটেছে, ঘরের ভেন্টিলেশন বা বায়ু চলাচল ব্যবস্থা ইত্যাদি খতিয়ে দেখা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট যে, শ্বাস-প্রশ্বাসে নির্গত জলকণা বা ড্রপলেটসের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানো প্রায় অসম্ভব।

পাশাপাশি কক্ষে থাকা ব্যক্তি, আক্রান্তের মুখোমুখি না হয়ে বা সংস্পর্শে না এসেও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা রয়েছে।

আক্রান্তদের ৩৩ থেকে ৫৯ শতাংশ উপসর্গহীন, যেটি বায়ুবাহিত হয়ে সংক্রমণের ভিত্তিকে আরও জোরালো করছে।

বাইরের তুলনায় আবদ্ধ স্থানে সংক্রমণের হার বেশি।

হাসপাতাল কর্মীরা সংক্রমিত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শে না এসেও বা ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী বা পিপিই পরেও আক্রান্ত হচ্ছেন।

কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত ব্যক্তির ঘরের বাতাসে ভাইরাস মিলেছে।

কোভিড হাসপাতালের এয়ার ফিল্টারে ভাইরাস পাওয়া গেছে।

খাঁচাবন্দি প্রাণীরা এয়ার ডাক্ট থেকে সংক্রমিত হয়েছে।

কোনো গবেষণায় এ পর্যন্ত ভাইরাসটি বায়ুবাহিত না হওয়ার পক্ষে প্রমাণ নেই।

ড্রপলেটস বা জলকণার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর তেমন বিশেষ কোনো প্রমাণ নেই।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন