অভিমত

করোনার বিপর্যয় রোধে সীমাবদ্ধতার প্রেক্ষাপটে করণীয়

ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন

করোনার মতো অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য বিশ্ব প্রস্তুত ছিল না। গত ১৫ মাসে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে করোনায়। মহামারীর শুরুতে বাংলাদেশেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আস্তে আস্তে আবার তা কেটে যেতে থাকে। কয়েক মাস আগে ধরেই নেয়া হয়েছিল করোনা চলে গেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করে। প্রথম দফায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ লকডাউনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে; লকডাউনের আদেশ ঠিকমতো মান্য করেনি। রমজানের শুরুতে দেয়া হয় সর্বাত্মক লকডাউন, চলাচল একেবারেই সীমিত করা হয়। করোনার সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে, তাতে সামনের দিনগুলোয় বিপর্যয় ঘটতে যাচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে, পরিসংখ্যান অন্তত তাই বলে।  

দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে কিছু চরম বাস্তবতা এবং সীমাবদ্ধতাকে অনুধাবন করা জরুরি।  

করোনাভাইরাস কবে নির্মূল হতে পারে?  

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে করোনা কবে নির্মূল হবে তা বিজ্ঞানীরা অনুমান করতে পারছেন না। তবে এটি যে সহজে নির্মূল করা যাবে না, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। প্রতিনিয়ত ভাইরাসের জিনগত পরিবর্তন হচ্ছে। জীব কোষে ভাইরাসের সংখ্যা বৃদ্ধির সময় জেনেটিক পরিবর্তনের মাধ্যমে দৈবক্রমে নতুন ভার্সন তৈরি হতে পারে, যা আগের চেয়ে শক্তিশালী অথবা দুর্বলও হতে পারে। এরই মধ্যে এর কয়েকটি ভার্সন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে। কয়েক মাস আগে ব্রিটেনে নতুন ভার্সনের করোনার প্রকোপ বেড়ে যায়। এরপর এল সাউথ আফ্রিকান ভার্সন। এখন ব্রাজিল ভার্সনের কথা শোনা যাচ্ছে, এটি নাকি আরো ভয়ংকর। এরই মধ্যে দুটি ভার্সন বাংলাদেশে চলে এসেছে বলে খবর মিলছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিক করোনার প্রকোপ বাড়ার মূলে রয়েছে করোনার সাউথ আফ্রিকান ভার্সন।

করোনাকে নির্মূল করতে হলে একটি দেশের বেশির ভাগ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি থাকতে হবে। এটা প্রাকৃতিকভাবে এবং টিকার মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। অবস্থাকে হার্ড ইমিউনিটি বলা হয়। টিকার মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করতে অল্প সময়ের মধ্যে একটি দেশের প্রায় ৬৫-৭০ শতাংশ মানুষকে এর আওতায় আনতে হবে। রূঢ় বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে এটা অত্যন্ত দুরূহ। উন্নত দেশগুলো শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সচেতনতা এবং লোক সংখ্যা কম হওয়ায় পুরো দেশকে টিকার আওতায় আনতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ায় মাত্র ১৬  মিলিয়নের মতো মানুষকে টিকা দিলে কাঙ্ক্ষিত হার্ড ইমিউনিটি অর্জিত হতে পারে। অন্যদিকে  বাংলাদেশে অবস্থা আনতে প্রায় ১০০+ মিলিয়ন মানুষকে টিকা দিতে হবে। একসঙ্গে এত টিকার সংস্থান করা এবং মাঠ পর্যায়ে টিকা কার্যক্রম সম্পাদন করা সবচেয়ে বড় লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ, যেখানে উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে।

তাছাড়া টিকার কার্যকারিতা কতদিন থাকবে, তাও এখনো জানা যায়নি। সম্প্রতি বিশ্ববিখ্যাত জার্নাল নেচারে প্রকাশিত প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেছেন, যদি করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা বা ইমিউনিটি (টিকা বা প্রাকৃতিকভাবে) এক বছরও স্থায়ী হয়, তাহলে কমপক্ষে ২০২৫ সাল পর্যন্ত মাঝে মাঝে এর প্রকোপ বেড়ে যাবে। এটা ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সিজনাল বা এন্ডেমিক হয়ে যেতে পারে।

সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে হার্ড ইমিউনিটি আসতে যত দেরি হবে করোনার তত নতুন নতুন ভার্সন বেড়ে যাবে। তবে অতীতের বিভিন্ন মহামারী পর্যালোচনা করলে দেখা যায় ভাইরাস সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুর্বল হতে থাকে। ভাইরাস বেশি সংক্রমণ করার যোগ্যতা অর্জন করলে (যেমন সাউথ আফ্রিকান ভার্সন) তার রোগ তৈরির ক্ষমতা ক্রমে কমতে থাকে। মোদ্দাকথা হচ্ছে, করোনাভাইরাস যে সহজে নির্মূল হবে না এবং এর সঙ্গে আমাদের বাস করা শিখতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করতে হবে।    

দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা আসলে কতটা দুর্বল

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক, তা করোনার সময় উন্মোচিত হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে দেশে জনপ্রতি স্বাস্থ্য বরাদ্দ মাত্র ৩১ মার্কিন ডলার, যা যেকোনো উন্নত দেশের তুলনায় নগণ্য। প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রতি বরাদ্দ হাজার মার্কিন ডলার। উন্নত দেশগুলোয় গবেষণার চর্চা প্রতিষ্ঠিত থাকায় তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। অন্যদিকে আমাদের দেশে গবেষণা অনুপস্থিত। কারণে করোনাসংক্রান্ত ডাটার কোয়ালিটি নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। অস্ট্রেলিয়া, ইউকে বা ইউরোপের দেশগুলো লকডাউন, কন্টাক স্টেসিং এবং নাগরিক সাপোর্ট দিয়ে যেভাবে করোনা মোকাবেলা করছে, বাংলাদেশের সেই সামর্থ্য নেই।   

উন্নত দেশের করোনা নিয়ন্ত্রণ মডেল (লকডাউন) বাংলাদেশে কতটা কার্যকর?    

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অর্থনৈতিক অবকাঠামোর প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিশাল জনসংখ্যা, দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, দারিদ্র্য, অশিক্ষা, স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব, সামাজিক বিভাজন ইত্যাদি কারণে করোনা মোকাবেলা করা উন্নত দেশের তুলনায় আমাদের জন্য অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। দৃষ্টান্তস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়া করোনা নিয়ন্ত্রণে পর্যন্ত সফল হয়েছে। কেননা সম্ভাব্য করোনা ঠেকাতে সে দেশে প্রবেশের আগে বাধ্যতামূলকভাবে সবাইকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।  অস্ট্রেলিয়ায় কোথাও সংক্রমণ দেখা দিলে শুধু সেই এলাকা (পুরো অস্ট্রেলিয়া নয়) সাময়িক সময়ের জন্য নিষেধাজ্ঞা বা লকডাউন দিয়ে হাজার হাজার টেস্ট করার মাধ্যমে কন্টাক স্ট্রেসিং করা হয়। অন্যদিকে করোনা চিকিৎসার জন্য তারা পর্যাপ্ত হাসপাতাল প্রস্তুত করেছে। নিষেধাজ্ঞার কারণে যারা পরিবার চালাতে অক্ষম, সরকার তাদের দায়িত্ব নিচ্ছে। এসব বিবেচনা করলে বাংলাদেশের সে সামর্থ্য নেই। তাই উন্নত দেশের করোনা নিয়ন্ত্রণ মডেল আমাদের এখানে ব্যবহার করা কঠিন। আমাদের নীতিনির্ধারণ থেকে শুরু করে আর্থসামাজিক বিষয়াদি এবং -সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্য বিবেচনায় নিতে হবে।   

মনে রাখা দরকার গতবারের ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটির কারণে দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। অর্থাৎ দারিদ্র্যের ২১ দশমিক শতাংশ থেকে এখন ৪২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় প্রায় ৬৮ শতাংশ মানুষ চাকরি হারিয়েছিল সে সময়ে। উন্নত দেশের বেকার চাকুরি হারানোরা সরকারের সহায়তায় পেয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কোনো সুবিধা নেই।

দেশের প্রেক্ষাপট অনুধাবন না করে পুরো দেশে লকডাউন ঘোষণা কতটা যৌক্তিক, তা বিবেচনার দাবি রাখে। জেলা-গ্রামাঞ্চল যেখানে করোনার প্রাদুর্ভাব নেই সেখানে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দেয়া হয়েছে। লকডাউনের কারণে সেসব এলাকায় করোনা ছড়ানোর শঙ্কাই তৈরি হয়েছে। কারণ লকডাউনের কারণে নিম্নবিত্ত দারিদ্র্য মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে গেছে। এতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কাই বেশি। 

তাই অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ না করে শুধু লকডাউন দিয়ে বাংলাদেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। করোনার প্রথম ঢেউয়ে লকডাউনের উদ্দেশ্য সফল হয়নি। সংক্রমণ কমেনি; বরং বেড়েছিল। লকডাউনের উদ্দেশ্য হচ্ছে হাসপাতালের ওপর চাপ কমানো এবং সময়ক্ষেপণ করা, যাতে আরো প্রস্তুতি (যেমন ভ্যাকসিনেশন, ট্রিটমেন্ট সেন্টার নির্মাণ) নেয়া যায়। বাস্তবতা হচ্ছে, গত এক বছর সময় পেয়েও আমরা সেভাবে প্রস্তুত হইনি। মনে রাখতে হবে লকডাউন দিয়ে থিউরিক্যালি সংক্রমণ কিছুদিনের জন্য কমানো গেলেও তা আবারো ফিরে আসবে। 

করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অর্জন কতটুকু?   

বাংলাদেশে কভিড রোগীদের জন্য নির্ধারিত আইসিইউ বেডের সঠিক তথ্য এখনো অজানা। বিভিন্ন পত্রিকায় বিভিন্ন রকমের তথ্য। সরকারের হিসাব অনুয়ায়ী ১৭ কোটি মানুষের দেশে আইসিইউ বেডের সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫০-৪০০। গত এক বছরে তা বাড়েনি, বরং করোনার চিকিৎসা ব্যবস্থা সংকুচিত করা হয়েছিল। জেলা পর্যায়ের সব হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। সবকিছু মূলত ঢাকাকেন্দ্রিক। ঢাকায় একজন রোগীকে আনতে আনতে মাল্টিপল অর্গান ফেইল করে বেশির ভাগ রোগী মারা যায়। প্রাথমিক পর্যায়ে শুধু অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে করোনা আক্রান্ত অনেক রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। জেলা পর্যায়ে শুধু হাই-ফ্লো অক্সিজেন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ বড় আকার ধারণ করত না।    

দেশের প্রেক্ষাপটে করোনা নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বা মডেল কী হওয়া উচিত?   

করোনা সহজে যাবে না এবং আমাদের সীমাবদ্ধতাগুলো মেনে পদ্ধতি গ্রহণ করতে হবে, যাতে রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি প্রতিরোধে টিকা প্রদান কার্যক্রম জোরদার করা সময়ের দাবি। সাধারণ জনগণ যে আস্থার সংকটে ভুগছে, সেদিকে নজর দেয়া।   

. পাবলিক-প্রাইভেট সম্মিলিত উদ্যোগে প্রত্যেক জেলায় কভিড চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা   

বাংলাদেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ প্রাইভেট হাসপাতাল বা ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা নেয়। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে বেসরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থার সক্ষমতা সরকারের চেয়ে বেশি। অন্যদিকে সরকারি ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত দুর্বল এবং দুর্নীতিও একটি বড় সমস্যা। তাই করোনার মতো বিপর্যয় প্রতিরোধে সরকারের পক্ষে এককভাবে সফল হওয়া কঠিন। আবার কথাও সত্য, যেকোনো দেশের সরকার সবচেয়ে ক্ষমতাশালী। আন্তরিকভাবে প্রচেষ্টা গ্রহণ করলে জনগণ সরকারের পাশে দাঁড়ায়। মানুষের জীবন বাঁচাতে প্রত্যেক জেলায় মানসম্পন্ন প্রাইভেট হাসপাতালের সঙ্গে সরকারের কলাবোরেশন মাধ্যমে অল্প সময়ের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা (পর্যাপ্ত হাইফ্লো-অক্সিজেন সিস্টেম, আইসিইউ বেড) গড়ে তুলতে হবে। অব্যবহূত রিসোর্সকে দেশের প্রয়োজনে ব্যবহার করতে হবে। তাছাড়া প্রত্যেক জেলার বড় বড় ব্যবসায়ীকে দেশের প্রয়োজনে জড়িত করতে উদ্বুদ্ধ করা সময়ের দাবি। যে যার এলাকায় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে পারলে বর্তমানের সংকট এড়ানো যাবে। 

. টিকা সংগ্রহ নিশ্চিতকরণ এবং তা গ্রহণে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা   

বাস্তবিকভাবে টিকার মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধ সম্ভব। এটি বর্তমানের কার্যকরী ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্যতম হাতিয়ার। বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে পর্যাপ্ত টিকা পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে। শুধু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ওপর নির্ভর করা যাবে না। সেরাম থেকে টিকার আশানুরূপ সরবরাহ না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কেননা ভারতে করোনা পরিস্থিতি অনেক খারাপ। এক্ষেত্রে নোভাভেক্স, স্পুটনিক- টিকা সংগ্রহে জোর দিতে হবে। এগুলোর দামও কম, আমাদের আবহাওয়া উপযোগী এবং নতুন ভ্যারাইটির করোনার ভাইরাসের বিরুদ্ধে তুলনামূলকভাবে কার্যকরী।

. কোয়ালিটি ডাটাবেজ তৈরির মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক লকডাউন বা নিষেধাজ্ঞার ব্যবস্থা

পুরো দেশে লকডাউন দেয়ার পরিবর্তে এলাকাভিত্তিক স্মার্ট লকডাউন দেয়া যেতে পারে, যদি পরিস্থিতি বেশি শোচনীয় হয়। পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে লকডাউন দেয়া বুমেরাং হবে।

. এলাকাভিত্তিক জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে আলেম-ওলামাদের সক্রিয় করা

জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এবং ব্র্যাকের কলাবরেশন করা গবেষণায় উঠে এসেছে যে কমিউনিটি লেভেলে ধর্মীয় নেতাদের প্রভাব বাংলাদেশে অস্বীকার করার উপায় নেই। সেই প্রতিবেদনে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টে স্থানীয় ধর্মীয় নেতাদের জড়িত করতে সুপারিশ করা হয়েছে। দেশের বিপর্যয়ে সবাই ভুক্তভোগী। তাই আলেম-ওলামাদের প্রাপ্ত সম্মান দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো উচিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শুধু একটি প্রজ্ঞাপন দিলেই তা কমিউনিটি লেভেলে বাস্তবায়ন হবে না। দেশের এনজিও নেতাদের যেভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়, সেভাবে কমিউনিটি নেতাদের সম্পৃক্ত করা জরুরি। 

. করোনা নিয়ন্ত্রণে ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি পুনর্গঠন

স্বনামধন্য বিজ্ঞানী (দেশী-প্রবাসী), আস্থাভাজন পাবলিক ফিগার, ধর্মীয় নেতা, সমাজবিজ্ঞানীদের ন্যাশনাল অ্যাভভাইজরি কমিটিতে যুক্ত করে জনগণের মাঝে আস্থা তৈরির পাশাপাশি করোনা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করতে হবে।  

. রাজনৈতিক সমঝোতা তৈরিতে সরকারের উদ্যোগ নেয়া

করোনা বিশ্বব্যাপী সমস্যা। যেখানে উন্নত দেশগুলো নাজুক অবস্থায় আছে, সেখানে আমাদের অবস্থা তথৈবচ। যেকোনো দুর্যোগ মোকবেলায় জনগণের আস্থা ছাড়া মোকাবেলা করা অসম্ভব। তাই সর্বস্তরে জনগণের মাঝে আস্থা ফেরাতে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি। দেশে মানুষের জীবন-জীবিকা বাঁচাতে সরকারকেই উদ্যোগী ভূমিকা নিতে হবে।

  

. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন: জনস্বাস্থ্য গবেষক

নির্বাহী পরিচালক, বায়োমেডিকেল রিসার্চ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ

সহযোগী অধ্যাপক, ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন