মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে বাণিজ্য অব্যাহত রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের এসঅ্যান্ডপি ইনডেক্স থেকে বাদ পড়ছে ভারতের আদানি পোর্টস ও স্পেশাল ইকোনমিক জোন লিমিটেড। মঙ্গলবার এসঅ্যান্ডপি ডো জোন্স সূচির বরাদ দিয়ে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংস্থাটি সেনা সরকারের ‘মিয়ানমার ইকোনমিক কর্পোরেশনের (এমইসি)’ কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়ে ২৯০ মিলিয়ন ডলার খরচে ইয়াংগুনে একটি বন্দর নির্মাণ করছে। তবে এ বিষয়ে আদানি পোর্টস কর্তৃপক্ষের বক্তব্য নিতে ইমেইল করা হলে ইমেইলের জবাব দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
গত মাসে মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করে আদানি গ্রুপ এমইসিকে কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছে প্রকল্পের ভাড়া বাবদ। সে সময় আদানি পোর্টস এর পক্ষ থেকে বলা হয় তারা অচিরেই এমইসি ও প্রকল্পের অংশিদারদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে।
পহেলা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এর পর সেনাবিরোধী বিক্ষোভ কঠোর হাতে দমন করতে গিয়ে সাতশর উপরে বিক্ষোভকারী নিহত হয় সেনাবাহিনীর হাতে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য দেশটির সেনা নিয়ন্ত্রিত দুটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এমইসি ও মিয়ানমার ইকোনমিক হোলডিং পাবলিক কোম্পানি লিমিডেট (এইএইচএল) এর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেনা অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দাও জানানো হয় দুই দেশের পক্ষ থেকে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, সেনা অভ্যুত্থান এবং তা ধরে রাখতে ভয়াবহ ও ন্যাক্কারজনক সহিংসতার প্রতিবাদস্বরূপ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো।
এসঅ্যান্ডপি ডো জোন্স সূচি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী বৃহস্পতিবার আদানি পোর্টসকে সূচক থেকে বাদ দেওয়া হবে। তাদের এ সিদ্ধান্তকে মিয়ানমারের সেনা সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা স্বাগত জানিয়েছে।
মানবাধিকার সংস্থা ‘জাস্টিস ফর মিয়ানমার’ এর নেতা ইয়াদানার মাউং বলছেন, বিষয়টা এমন দেখায় যে আদানি পোর্টস ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান জান্তা সরকারের সঙ্গে বাণিজ্যের মাধ্যমে গণহত্যায় অর্থ যোগান দিচ্ছে।
আদানি পোর্টসের শেয়ার মিয়ানমার ইস্যুতে প্রভাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের শেয়ার এক শতাংশ দরপন ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা সেনা নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করেছে কিংবা বন্ধের চিন্তা ভাবনা করছে। জাপানের বিখ্যাত পানীয় উত্পাদন প্রতিষ্ঠান এমইএইচএলকে বিয়ার পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার ইস্পাত প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান পিওএসসিও মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার উপায় খুঁজছে।