স্বাস্থ্যবিধি মানতে মানুষের অনীহা

মৃতের সংখ্যায় রেকর্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক

কভিড-১৯ রোগের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা করছে বাংলাদেশ। গত মাস থেকে প্রায় প্রতিদিনই ভাঙছে সংক্রমণ শনাক্ত মৃত্যুর রেকর্ড। সবশেষ গতকালও আগের দিনের রেকর্ড ভেঙে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৮-এ। সংক্রমণ রোধে সরকার গত তারিখ থেকে চলাচলে কিছু নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেয়, বন্ধ রাখা হয় দূরপাল্লার যানও। এর মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য শপিং মল খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বিধিনিষেধ মানতে চরম অনাগ্রহ দেখিয়েছে সাধারণ মানুষ। ফলে সংক্রমণ রোধে সরকারকে ১৪ এপ্রিল থেকে নতুন করে লকডাউন ঘোষণাসহ কঠোর কর্মসূচি দিতে হচ্ছে।

গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২৪৮টি পরীক্ষাগারে ২৯ হাজার ৩৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে হাজার ৮১৯ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়। পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫০ লাখ হাজার ৮৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ মোট নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬৯ শতাংশ। পর্যন্ত মৃত্যুর হার দশমিক ৪২ শতাংশ।

উচ্চ সংক্রমণের কারণে রাজধানীতে সংকটাপন্ন রোগীতে পরিপূর্ণ করোনা চিকিৎসায় নির্ধারিত হাসপাতালগুলো। একটি শয্যা বা আইসিইউ সেবার জন্য রোগীদের নিয়ে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ছুটছেন স্বজনরা। গতকাল রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি ২২টি করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে ৯০ শতাংশ সাধারণ ৯৮ শতাংশ আইসিইউ শয্যায় রোগী ভর্তি ছিলেন।

এমন পরিস্থিতিতে আক্রান্ত রোগীদের ঢাকামুখী হওয়া থেকে বিরত রাখতে ব্যাপক প্রচার চালাতে দেশের সব বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের চিঠি পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

উপসচিব . বিলকিস বেগমের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, কভিড-১৯ সংক্রমণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় উপজেলা জেলা পর্যায়ে মানসম্পন্ন চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে কভিড-১৯ মোকাবেলায় ৪৮৩টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনুকূলে লাখ টাকা করে মোট ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সংক্রমিত রোগী যেন স্থানীয় সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সেবা পান, তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, করোনা মহামারী মোকাবেলায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচিত হাসপাতালগুলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি হাসপাতাল চিকিৎসা শুরু করেছে। সরবরাহ করা হচ্ছে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ।

পাশাপাশি, করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের আরো উন্নত সেবা দিতে রাজধানীর মহাখালীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পাইকারি কাঁচা বাজারের ভবনটিতে স্থাপন করা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় বিশেষায়িত হাসপাতাল। আগে থেকেই রোগীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহূত ভবনটিকে হাসপাতালে রূপান্তরের কাজ চলছে দুই সপ্তাহ ধরে। এখানে ১০০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বা আইসিইউ ১২২ শয্যার এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট) থাকবে।

হাসপাতালটির পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কে এম নাসির উদ্দিন বণিক বার্তাকে বলেন, কবে নাগাদ হাসপাতাল চালু করা যাবে তা নিশ্চিত তারিখ বলা কঠিন। তবে আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে ২০০ সাধারণ শয্যা ৫০টি আইসিইউ শয্যা দিয়ে আংশিকভাবে হাসপাতালটি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী মাসের শুরুতে পুরো হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য তৈরি হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।

 

টিকা নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা ফ্লাইটে যেতে পারবেন না সংশ্লিষ্টরা

দেশের বিভিন্ন এয়ারলাইনসে কর্মরত বৈমানিক কেবিন ক্রুদের কভিড-১৯ প্রতিরোধী টিকা নিতে নির্দেশ দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সে সঙ্গে বলা হয়েছে, টিকা নেয়ার পর ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত ফ্লাইটে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না তারা। এছাড়া টিকা নেয়ার পর কেউ যদি কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া টের পান তবে তাকে দায়িত্বপালন থেকে বিরত রাখতে হবে। পাশাপাশি তাকে বেবিচকের মেডিকেল টিমের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শও দেয়া হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন