উন্নয়নকে বেগবান করতে ‘ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি’ নামে বিশেষ প্যাকেজ চালু করেছি

. কে আব্দুল মোমেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ফ্রেমিংহাম স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি ব্যবসায় বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী অধ্যাপক মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। বিশ্বব্যাংক, ইউএনডিপিসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে পরামর্শক হিসেবে কাজ করা ছাড়াও তিনি জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালন করেন। মুজিব জন্মশতবর্ষ, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, সরকারের দুই বছর পূর্তি, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ নানা বিষয়ে বণিক বার্তার সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন এম এম মুসা

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপিত হলো। অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রনেতারা এসেছেন। আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ কী অর্জন করেছে?

আমরা খুব ভাগ্যবান যে ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ দুটো ইভেন্ট একসঙ্গে করতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। এতে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। প্রথমত, বিশ্বের সব দেশকেই আমাদের এই বড় দুটি ইভেন্ট সম্পর্কে জানিয়েছিলাম এবং এতে ১৪৭টি দেশের সরকারপ্রধান, রাষ্ট্রপ্রধান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও জাতিসংঘের মহাসচিবসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানরা বাণী পাঠিয়েছেন। ইভেন্টটা উদযাপিত হয় ১০ দিনব্যাপী। তাছাড়া ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ, প্রিন্স ফিলিপ, পোপসহ অনেকে ভিডিও বাণীতে দেশের অর্থনৈতিক সাফল্য রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক আচরণের প্রশংসা করেছেন। আয়োজনে আমাদের প্রতিবেশী পাঁচটি দেশের সরকার রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। তারা নানা কারণে আমাদের এখানে এসেছেন। এক. বাংলাদেশের প্রতি তাদের এক বিশেষ আস্থা রয়েছে। আমাদের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি তাদের গভীর আস্থা আছে। তারা আমাদের নেতৃত্বকে পছন্দ করেছে। তাই আমাদের নেতৃত্বের অনুরোধে কভিডের সময়েও তারা এসেছেন। দ্বিতীয়ত, তারা এসেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতি তাদের আলাদা ভালোবাসা শ্রদ্ধাবোধ থেকে। কারণ বঙ্গবন্ধুর জীবনচরিত যে- একবার শুনেছে, সেই দেখেছে এই মানুষটি সারা জীবন মানুষের কল্যাণের জন্য, মঙ্গলের জন্য কাজ করেছেন। ধরনের চরিত্র খুব কম; কদাচিৎই পাওয়া যায়। তারা মূলত এসেছেন দুটো অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য। কিন্তু আমরা সুযোগে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি এবং প্রায় ক্ষেত্রে তারা আমাদের পক্ষে রায় দিয়েছে। জাতিসংঘে মিয়ানমারের রেজল্যুশনের ক্ষেত্রে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কেউই আমাদের পক্ষে ভোট দেয়নি। তবে ১৩২ রাষ্ট্র আমাদের পক্ষে ভোট দিয়েছে। কিন্তু বিশেষ করে শ্রীলংকা ভোট দেয়নি। আমরা বিষয়টি উত্থাপন করেছিলাম। তিনি বলেন, ব্যাপারে তারা একমত যে রোহিঙ্গা তাদের স্বদেশে ফিরে গেলে ভালো সমাধান হবে। প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, বিষয়টা নিয়ে তারা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলাপ করবেন। আমার মনে হয় এটা আমাদের অর্জন। কারণ তাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের যথেষ্ট ভালো সম্পর্ক রয়েছে। একই অবস্থা ভুটান নেপালের। বলেছে তারাও উদ্যোগ নেবে। বিশেষ করে সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রীও এসেছেন। দেশটি আবার নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য। তিনিও বলেছেন, তারা মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলবেন। বলেছেন, সম্প্রতি যে সরকার এসেছে সেটি এখনো খুব একটা স্থিতিশীল নয়। সুতরাং মুহূর্তে কিছু একটা বলা মুশকিল। তবে তারা একমত, রোহিঙ্গা সমস্যার জরুরি সমাধান প্রয়োজন। আগে থেকে অবস্থা এখন তুলনামূলক ভালো। আমরা তাদের বলেছি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে এবার আমরা নির্বাচন করব। পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচটি দেশই অঙ্গীকার করেছে নির্বাচনে আমাদের সাপোর্ট দেবে এবং আমাদের বিপক্ষে কোনো ক্যান্ডিডেট দেবে না। এগুলো আমাদের বড় অর্জন বলে আমরা মনে করি। ভুটান বলুন, নেপাল বলুন প্রত্যেকেই তাকে অনুরোধ করেছেন, আপনি যে কানেক্টিভিটির কথা বলছেন সেটি যেন ভারতকে বলা হয়। তারা বলেছেন, আমরা চাই রেলপথ, আমরা চাই পানিপথে পণ্য পরিবহনের সুবিধা। তারা বলেছেন, আমরা মোংলা, চট্টগ্রাম, পায়রা বন্দর ব্যবহার করতে চাই। তার জন্য ভারত যেন সুযোগ করে দেয়, সেটি আপনি বলুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেগুলো উত্থাপন করেছেন। ভারত তাতে মোটামুটিভাবে রাজি হয়েছে। তাদেরও কিন্তু অ্যাপ্রোচ করতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরেকটি বিষয় করেছেন, কোনো একক দেশ উন্নত হলে চলবে না। আশপাশের সব দেশের মানুষের উন্নয়ন হতে হবে। তাহলেই উন্নয়ন সার্থক হবে। এটা নিয়ে সবাই তার সঙ্গে একমত। সেখানে তিনি বলেছেন, ২০৪১ সালে আমরা একটা উন্নত দেশ হতে চাই। জানি যে আমরা একা পারব না। আপনাদের সহযোগিতা অংশীদারিত্ব লাগবে। তারা তাতে রাজি হয়েছে। বিশেষ করে ভারত বলছে, অর্থনৈতিকভাবে আমরা আপনাদের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে এক আছি। আপনাদের যেকোনো কাজে আমরা সহায়তা করব। প্রকৃতপক্ষে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী একটা বিশেষ প্রস্তাবও দিয়েছেন। বলেছেন, অঞ্চলের দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে একটা ইকোনমিক সামিট হোক। এর ফলে আমাদের কাজকর্ম আরো বেড়ে গেছে। চ্যালেঞ্জও বেড়ে গেছে। আমি ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ৫০ বছর মাথায় রেখে ৫৪টি অভিন্ন নদী সচল রাখার জন্য টেকসই ব্যবস্থাপনার কথা বলেছি। তিনি এটাতে সায় দিয়েছেন। আরেকটি কথা বলেছি, অরুণাচলে জলবিদ্যুতের বিশাল সম্ভাবনা আছে। সেটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং এমনকি মুম্বাইয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারবেন। তবে এটি যদি শিলিগুড়ি দিয়ে নিয়ে যান, তাহলে অনেক ব্যয় হবে। তবে আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সস্তায় তা নিতে পারবেন। এর জন্য আমাদের শুল্কস্বরূপ ১৫-২০% বিদ্যুৎ দিতে পারেন। এতে আপনাদেরও লাভ এবং আমাদেরও লাভ। বলেছেন, তিনি এটা পরীক্ষা করে দেখবেন। তিনি বলেছেন, ৫০ বছর নয়, আগামী ২৫ বছরের কথা চিন্তা করুন কীভাবে অত্র অঞ্চলের সব মানুষের কল্যাণ করতে পারি।

এত বড় আয়োজনের ধারণাটা কীভাবে এল এবং কীভাবে পরিকল্পনা করলেন?

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের গাইড। প্রতি মুহূর্তে কী করা যায়, সেই ব্যাপারে তিনি নিরন্তর নির্দেশনা প্রদান করেন। আমরা মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠান গত বছর ঘটা করে করতে চেয়েছিলাম। কভিডের কারণে সেটি স্থগিত করা হয়েছিল। ২৫ বছর পূর্তিতে মাত্র চারটি দেশের নেতা এসেছিলেন। আমরা যখন মুজিব শতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের চিন্তা করি তখন কাকে কাকে আনব তা নিয়ে একটা পরিকল্পনা করি। সেই অনুযায়ী দাওয়াত দিই। প্রথমে মুজিব বর্ষের জন্য দাওয়াত দিই, সমস্যা হলো কভিড মহামারী। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বললেন, অনেক লোকের সমাগম হলে সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। সেজন্য এটি বাদ দেন। বঙ্গবন্ধু সব সময় মানুষের মঙ্গল চেয়েছেন। তার কন্যাদ্বয় বলেন যে মানুষের অমঙ্গল হয় এমন কিছু করা ঠিক হবে না।। আমরা বাদ দিলাম। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ঠিক করলাম, পুরো উদযাপনটি ভার্চুয়াল এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে করব। এজন্য আমাদের বিরাট প্যান্ডেলে মাত্র ৭০০ জনের আয়োজন করেছি। দশ হাজার লোক সমবেত না করে আমরা অল্প লোকের সমাগম করেছি। আর মানুষকে টেলিভিশন ইউটিউবের মাধ্যমে সব প্রোগ্রাম দেখিয়েছি। আমরা সেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের অনুরোধ করলাম এবং সীমিত সংখ্যক রাষ্ট্রনায়ককে শারীরিকভাবে উপস্থিত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানালাম। কাকে কাকে শারীরিকভাবে আসতে বলব, সেটি নির্বাচন করলাম। তালিকায় আমরা কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোকে রেখেছিলাম, তাকে আসতে বলেছিলাম এবং এক পর্যায়ে তিনি রাজিও হয়েছিলেন। তার আসতে হলে পার্লামেন্টের অনুমতি লাগে। পার্লামেন্ট তাকে অনুমতি দেয়নি। ফলে তিনি আসতে পারেননি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী আসবেন, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী আসবেন, এটা শুনে অনেকেই আসার উৎসাহ দেখালেন। সেদিক থেকে আমরা সৌভাগ্যবান যে তাদের পেয়েছি এবং আমাদের দিবাস্বপ্ন ছিল যে এত বড় আয়োজন কীভাবে সামলাব। আমি খুবই খুশি যে আমাদের ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো হয়েছে।

অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো, আমাদের মধ্যকার সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক অনন্য গভীরতায় পৌঁছেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণ এশিয়ার একজন বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। আস্থার জায়গাটি আরো বেড়েছে। এটিই তো আমাদের সবচেয়ে বড় পাওয়া।

এছাড়া দুটি ইভেন্টের পরিপ্রেক্ষিতে আরো ১৪৭টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধান প্রধানমন্ত্রীকে বার্তা পাঠিয়েছেন। বার্তাতে তারা তিনটি বিষয় তুলে ধরেছেন। এক. আপনার দেশের উন্নয়ন দেখে আমরা খুব আনন্দিত। এর সঙ্গে আগামীতে আমাদের সমর্থন থাকবে। দুই. আপনি উদারতা দেখিয়েছেন, পৃথিবীতে একটা আদর্শ তৈরি করেছেন যে এগারো লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছেন। এজন্য পৃথিবী আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ। আর আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়, তার জন্য সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করব। তিন. আপনি ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের প্রেসিডেন্ট। জলবায়ু আগামীর একটা বড় চ্যালেঞ্জ। চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনি আমাদের অংশীদার হিসেবে গ্রহণ করুন। চার. করোনা মহামারী এত সুন্দরভাবে সামলানোয় সবাই বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে। তার মানে আমাদের দেশের অবস্থা সারা বিশ্বের বড় বড় নেতা গ্রহণ করেছেন। সবচেয়ে মজার বিষয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীও বার্তা পাঠিয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। অধিকাংশ দেশই আমাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে আমাদের জনগণের উচ্ছ্বাস ছিল যে তিস্তাসহ অন্য ইস্যুগুলোর নিষ্পত্তি হবে। এবার এক্ষেত্রে অগ্রগতি কতদূর?

এক্ষেত্রে হাতে তুলে দেয়ার মতো অগ্রগতি হয়নি। একটি সাধারণ বোঝাপড়া হয়েছে যে এসব সমস্যার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া জরুরি। বিশেষ করে সীমান্ত হত্যা কমাতে সীমান্ত হাট বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। তিনটি নতুন সীমান্ত হাট উন্মুক্ত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, বৈধ বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে অবৈধ বাণিজ্য কমে আসবে এবং এতে সীমান্ত হত্যাও কমে আসবে। আমরা বলেছি, যৌথ মনিটরিংয়ের কথা। এপারে বিজিবি থাকবে আর ওপারে বিএসএফ থাকবে। যে এলাকায় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানে উভয় বাহিনীই একসঙ্গে তদারক করবে। তাহলে হয়তো মৃত্যুর সংখ্যা আমরা কমাতে পারব। একটি ইস্যুতে আমরা অন প্রিন্সিপল রাজি এবং সেটা হচ্ছে, একটা লোকও মরবে না।

আরেকটি ইস্যু পানি। ভারত সরকার বলেছে যে ২০১১ সালে তিস্তার ব্যাপারে যেভাবে খসড়া হয়েছে, উভয় দেশ রাজি হয়েছিল তাতে কোনো নড়চড় নেই। তারা ডেলিভারি দিতে পারেনি তাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যার কারণে। তারা সেটি নিষ্পত্তি করতে পারেনি। কখন সেটি নিষ্পত্তি হবে জানে না, শুধু বলেছেন যে আমরা সেটি করব এবং দ্রুত তা নিষ্পত্তি হবে। আমরা তাদের ওপর বিশ্বাস রাখতে চাই। কারণ তারা খসড়া থেকে একচুলও নড়েনি।

আরেকটি বড় অর্জন, কিছুদিন আগে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছি আমরা। ২০২৬ সালে আমরা পদার্পণ করব। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরিত হলে কিছু সুযোগ-সুবিধা হারাব। আপনাদের প্রস্তুতি কেমন?

স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের ফলে কিছু সুযোগ-সুবিধা আমরা হারাব। আমাদের পাঁচ বছরের মতো একটা সময় আছে। আমরা আরো তিন বছর নিয়েছি। ফার্মাসিউটিক্যালের ক্ষেত্রে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত নিয়েছি। সুযোগ-সুবিধা যাতে না হারায়, তার জন্য দ্বিপক্ষীয় চুক্তির জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। দ্বিতীয়ত, কিছু সুযোগ হারাব তবে নতুন নতুন সুযোগও সৃষ্টি হবে। দরিদ্র দেশে কেউ বিনিয়োগ করে না। এখন উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণ করলে অনেক ধরনের বিনিয়োগ আমাদের দেশে আসবে। সেজন্য আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইকোনমিক ডিপ্লোম্যাসি নামে একটি বিশেষ প্যাকেজের ঘোষণা দিয়েছি। প্যাকেজে পাঁচটি বিষয় আছে। এক. বিনিয়োগের পরিমাণ পরিধি যেন বাড়ে, সেজন্য প্রচেষ্টা নেয়া। আমার সব মিশনপ্রধান এভাবে কাজ করছে। দুই. রফতানির পরিমাণ রফতানি পণ্যের তালিকার বৈচিত্র্য বাড়ানো। একই সঙ্গে নতুন নতুন রফতানি গন্তব্যের সন্ধানে কাজ চলছে। তিন. জনশক্তি রফতানি বাড়ানো। বিদেশে তাদের আমরা অর্থকরী চাকরি নিশ্চিত করতে চাই। আমরা এখনো মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ। এরই মধ্যে রোমানিয়ায় আমাদের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হয়েছে। আমরা আফ্রিকায় ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছি। এর জন্য কনট্যাক্ট ফার্মিংয়ের ওপর বিশেষ জোর দিয়েছি। আমরা এক রাষ্ট্রদূতকে রেকি করার জন্য পাঠিয়েছিলাম। তিনি কয়েকটি দেশ ঘুরে এসেছেন। তিনি দেখেছেন যে ৪০-৫০ লাখ লোক ওইসব দেশে কর্মনিয়োজন করতে পারব। তবে সেখানে পাঠালেই হবে না। কিছু বিনিয়োগও করতে হবে। সেটা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে দেনদরবার চলছে। চার. প্রযুক্তি। উন্নয়নের বড় হাতিয়ার প্রযুক্তি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এলে আমাদের কাজ করতে কী অসুবিধা হবে, সেটি বিবেচনায় রেখে কাজ করছি। একই সঙ্গে প্রবাসীদের উন্নয়নের মহাসড়কে কীভাবে সম্পৃক্ত করতে পারি, তার জন্য আমরা উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। আমরা এগুলোর ব্যাপারে বেশ সজাগ।

আরেকটি বিষয়, বাংলাদেশে রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট বেশি। আমাদের ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল হয়েছে, তোমরা নাও। ২৮টি হাইটেক পার্ক হয়েছে, তোমরা নাও। আমাদের সরকারি প্রচারণায় অনেকেই আগ্রহী হবে না। সেজন্য আমরা দেশে-বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করার প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছি। বাংলাদেশ এখন কোনো বটমলেস বাস্কেট নয়; এটি একটি ভাইব্র্যান্ট ইকোনমি, ল্যান্ড অব অপরচুনিটিজ, সেই মডেলটিই আমরা সব জায়গায় পৌঁছে দিচ্ছি। এই যে দশদিনের একটা বড় ইভেন্ট হয়েছে, সেটি আমাদের খুব সাহায্য করেছে। আরো কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা শুনেছি, জাপান, কানাডাসহ বেশকিছু দেশের কোম্পানির কারখানা চীন থেকে অন্যত্র রিলোকেট হবে। আমরা সেসব কোম্পানির ঠিকানা জোগাড় করেছি এবং তাদের কাছে আমাদের পোর্টফোলিও পাঠিয়েছি। আর আমাদের ব্যবসায়ীদের তালিকা দিয়েছি যাতে তারা সরাসরি যোগাযোগ করে বিনিয়োগ আনতে পারে। আমরা চাই বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব। তাতে অনেক অনেক চাকরির সংস্থান হবে।

করোনা সংক্রমণ আবারো বাড়ছে। এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি জনশক্তির ওপর কেমন প্রভাব পড়তে পারে?

অবশ্যই সাংঘাতিক মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরা। আমরা একটা বিশ্বায়িত দুনিয়ায় বাস করি। যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের বাজার যদি ভালো থাকে, তাহলে আমাদের পোশাক রফতানি চাঙ্গা থাকবে, শিল্পটি ভালো থাকবে। কিন্তু সেখানে অবস্থা খারাপ থাকলে আমাদের পোশাক তারা কিনবে না।  মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থা ভালো থাকলে, অর্থনীতি সচল থাকলে সেখানে আমাদের দেশের লোক কাজে যাবে আর তাদের অর্থনীতি খারাপ হলে অনেকেই চাকরি হারাবে। কাজেই পুরো বিশ্বই পারস্পরিকভাবে আন্তঃসংযুক্ত, আন্তনির্ভরশীল। বিশেষ করে বাংলাদেশের অর্থনীতি বাকি বিশ্বের সঙ্গে বেশি মাত্রায় আন্তঃসংযুক্ত। অন্য জায়গায় অসুবিধা হলে আমার অসুবিধা হবে। আমরা সারা বিশ্বে স্থিতিশীল সরকার চাই এবং সারা বিশ্বের উন্নয়ন চাই। বিশ্বের উন্নয়ন হলে আমাদেরও উন্নয়ন হবে। মহামারী দীর্ঘস্থায়ী হলে এর একটা নেতিবাচক প্রভাব বিভিন্ন দেশে পড়তে পারে। আমাদের ওপরও পড়বে।

অনেক দেশ কভিডের টিকা না পেলেও সরকারি প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ টিকা পেয়েছে। কিন্তু চালান ঠিকভাবে না আসায় দ্বিতীয় ডোজ প্রদানসহ টিকা দান কার্যক্রম নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এটাকে কীভাবে দেখেন?

প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই তত্পর সজাগ ছিলেন। তিনি টিকা আসার আগে থেকেই বিদেশে অর্থ দিয়ে রেখেছেন। যাতে আমরা সময়মতো টিকা পাই। ভারতকেও আমরা অর্থ দিয়ে রেখেছি। তিন কোটি ডোজ টিকার অর্থ দিয়ে রেখেছি। তারা বলেছে প্রতি মাসে তারা ৫০ লাখ ডোজ করে পাঠাবে। তারা পাঠিয়েছেও এবং ক্রমাগত পাঠাচ্ছে। আমরা অন্য উেসর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছি। তারাও আমাদের টিকা দেবে। কাজেই মনে হয় না, টিকার সংকট হবে। তাছাড়া আমরা চাই টিকা যেন সবদেশ ধনী-দরিদ্র সবাই গ্রহণযোগ্য মূল্যে পায়।

করোনার মধ্যে সরকার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করেছে। এটিকে একটা বড় অর্জন বলা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও একসময় এর বিরোধিতা করেছিল। এই সাহসটা কীভাবে করলেন?

কুতুপালংয়ে ৩২টি শরণার্থী শিবির আছে। সেখানে প্রতি বর্গমাইলে ৮৪ হাজার লোক বাস করে। এটি মাথায় রাখতে হবে। সেখানে যদি অতিবৃষ্টি হয়, তাহলে ভূমিধস হবে। কারণ পাহাড়ি এলাকায় তাদের আমরা জায়গা দিয়েছি। ফলে সব সময় ভয় হয়, কোনো একটা কিছু হলে লোক মারা যাবে। মারা গেলে লোকে নিন্দা-মন্দ করবে। আমাদের দেশে বেশি জায়গাও নেই। আমরা পৃথিবীর অন্যতম জনবহুল দেশ। প্রতি বর্গমাইলে তিন হাজারের মতো লোক বাস করে। তিন বছর আগে ভূমিধসে একদল লোক মারা গিয়েছিল। তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে ২২ হাজার পরিবার মানে এক লাখ রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে। সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ভাসানচরে ঘরবাড়ি বানানো হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সংস্থা এনজিওগুলো সেখানে যেতে নারাজ। এখন তারা যাচ্ছে। কিছু এনজিও গেছে। মজার বিষয় হলো, সিঙ্গাপুর একটি আইল্যান্ড। দেশটির প্রেসিডেন্টের ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সাহায্য পাঠিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা আইল্যান্ডের বাসিন্দা। সেখানে কীভাবে থাকা যায়, সেটি আমরা জানি। যারা আইল্যান্ডে জীবনে থাকেনি, তাদের ধারণা ভাসানচর ভেসে যাবে। কিন্তু ভেসে যায়নি। এটিই হলো প্রধানমন্ত্রীর সাফল্য।

মিয়ানমারে সেনাশাসন আসায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনেও সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে কী?

সেনাশাসন আসার পর আমাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলাপ এখনো শুরু হয়নি। আমরা এখনো পর্যবেক্ষণের মধ্যেই আছি। তবে ইতিহাস বলে, ১৯৭৮ সালে মিয়ানমারে সেনাশাসন ছিল, ১৯৯২ সালে সেনাশাসন ছিল। ১৯৭৮ সালে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা ফেরত যায় মিয়ানমারে। ১৯৯২ সালে লাখ ৫৩ হাজারের মধ্যে লাখ ৩০ হাজারই ফেরত যায়। সেনাশাসন থাকলেই রোহিঙ্গারা যাবে না, এটা ঠিক নয়।

বিগত বছরগুলোতে আগে চীনের উদ্যোগে ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি হয়। সর্বশেষ বৈঠক হয় ২০ জানুয়ারি ২০২১। ওটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ছিল। সেখানে আলোচনা হয় কতজন লোক যাবে, কোথা থেকে যাবে এবং কীভাবে যাবে। ফেব্রুয়ারি প্রায় ২৭ হাজার রোহিঙ্গা কীভাবে যাবে তা নিয়ে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই ফেব্রুয়ারি সেনাশাসন জারি হলো। ফলে সব যোগাযোগ উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা আশাবাদী। টেলিভিশনের ভাষণে শুনেছি, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে অন্য দেশের যেসব অ্যারেঞ্জমেন্ট বা চুক্তি আছে, তারা তা অনার করবে। তার মানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে যাওয়ার যে চুক্তিগুলো ছিল সেগুলো তারা অনার করবে। শুনেছি, তারা নেবে। কখন নেবে, তারা কিছু বলেনি।

পররাষ্ট্রনীতিতে অর্থনৈতিক কূটনীতি, বিনিয়োগ আকর্ষণে জোর দেয়া হচ্ছে। এত কিছু করার পরও কেন আশানুরূপ বিনিয়োগ আসছে না?

কভিডের কারণে সারা বিশ্বেই এখন বিনিয়োগের খরা চলছে। পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখলে দেখা যাবে, সব দেশেই বিনিয়োগ নিম্নমুখী। স্বাভাবিকভাবে আমাদের দেশেও নিম্নমুখী হয়েছে। এখন সবাই নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত। করোনার কারণে যে অভিঘাত চলছে তার প্রভাব খুব ভয়াবহ। আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো অবস্থানে আছি। অনেক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। দেশে ডুয়িং বিজনেস সূচকে কিছু অসুবিধা আছে। সেই অসুবিধাগুলো দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিনিয়োগের অনেক প্রস্তাব আমাদের হাতে আছে। মুহূর্তে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের প্রস্তাব নিয়ে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছে। এতে একটি পোর্ট নির্মাণেরও প্রস্তাব আছে। তাছাড়া সৌদি সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের এখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। এখানে বিভিন্ন রকম অংশীজন যুক্ত। আমাদের দায়িত্ব হলো বিনিয়োগটা আনা। আনার পর তা বাস্তবায়নে রয়েছে বিডা, বেজা, শিল্প জ্বালানি ইত্যাদি মন্ত্রণালয়। এখানে এসেই আটকে যায়। সুতরাং কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পড়ে আছে। শুধু সৌদি আরবের সঙ্গে ২৭টির মতো এমওইউ করা হয়েছে। কিন্তু সেগুলো এখনো বাস্তবায়ন হচ্ছে না আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতার কারণে।

সরকারের দুই বছর মেয়াদও পূর্ণ হলো। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ঘিরে কিছু পরিকল্পনা ছিল, তার অগ্রগতি কতটুকু?

ওই সব পরিকল্পনার প্রতিফলন এখন দেখতে পাচ্ছেন। আমাদের ভাবমূর্তির অনেক উন্নয়ন হয়েছে, যার ফলে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ আমাদের দুটো জয়ন্তীতে সাধুবাদ জানিয়েছে। আমরা অনেকটাই খুশি। আমরা চাই জনগোষ্ঠীর কাছে সেবা পৌঁছে দিতে। এখনো কিছু দুর্বলতা আছে। আমরা নতুন নতুন ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করেছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দূতাবাস নামে একটা অ্যাপস চালু হয়েছে। অ্যাপসের মাধ্যমে প্রায় ৩৪ ধরনের সেবা প্রদান করা সম্ভব। অ্যাপস সব জায়গায় ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে না। আমি বলব, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্ভিসগুলো স্ট্রিমলাইনিং করেছি। নতুন নতুন বৈদেশিক শ্রমবাজারের দুয়ার উন্মোচনের চেষ্টা করেছি যেমন রোমানিয়া ক্রোয়েশিয়া। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও অনেক কাজ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর ডিপ্লোম্যাসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি স্থাপিত হয়েছে এবং কার্যকর হয়েছে। একটা তৈরি করেছি। সেখানে আমরা বিভিন্ন গবেষণা শুরু করেছি। আরেকটি উদ্যোগ হচ্ছে বঙ্গবন্ধু লেকচারস সিরিজ। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বখ্যাত বিভিন্ন দেশের নামিদামি স্বনামখ্যাত ব্যক্তিরা এসে বা ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা দিচ্ছেন। এরই মধ্যে অনেকে এসেছেন, আরো আসবেন। প্রায় ৭০টি মিশনে আমরা বঙ্গবন্ধু কর্নার স্থাপন করেছি। কর্নারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশকে নিয়ে নানা ওয়ার্কশপ, সেমিনার হচ্ছে তাছাড়া সেবার মান বাড়ানোর জন্য প্রতিটি মিশনে হটলাইন চালু করেছি। আমাদের মন্ত্রণালয়ে কভিড উইং চালু করেছি, রোহিঙ্গা উইং চালু করেছি। পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি উইং চালু করেছি। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে নানা কাজ এগিয়ে চলছে। আবার দেশে গৃহস্থালির কাজে নারী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন কমানোর জন্যে সেফ হোম চালু করেছি এবং যারাই নির্যাতন করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি গৃহ মালিক একজন গৃহকর্মীকে মেরে ফেলায় তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে। ফলে ধরনের নির্যাতন কমবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

 

শ্রুতলিখন: হুমায়ুন কবির

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন