অ্যান্ড্রয়েডের ভালো-মন্দ

বণিক বার্তা ডেস্ক

স্মার্টফোন ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীর সংখ্যাই বেশি। ২০২১ সালের জরিপ অনুযায়ী বিশ্বে প্রায় ৮৪ শতাংশ মানুষ অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করেন। গুগল প্লে-স্টোরে ডাউনলোড এবং ইনস্টলের জন্য ২০০ কোটির বেশি সফটওয়্যার রয়েছে। সর্বপ্রথম অ্যান্ড্রয়েড ইনকরপোরেটেডের নামে অ্যান্ড্রয়েড নামকরণ করা হয়। পরবর্তী সময়ে ২০০৫ সালে গুগল কোটি ডলারের বিনিময়ে এটি কিনে নেয়।

ব্যবহার সুযোগ-সুবিধার দিক থেকে যে কোনো জিনিসেরই ভালো খারাপ দিক থাকে। আর স্মার্টফোন জগতে অপারেটিং সিস্টেমের শীর্ষে থাকা অ্যান্ড্রয়েডেরও ভালো-খারাপ দিক রয়েছে।

অ্যান্ড্রয়েডের ভালো দিক

অ্যাপসের সমাহার: অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য গুগল প্লে-স্টোরে অসংখ্য অ্যাপ রয়েছে এবং এসব অ্যাপের নির্ধারিত ক্যাটাগরি রয়েছে। যে কারণে একই বিষয়ে ব্যবহারকারীরা বিবিধ নির্মাতার অ্যাপ ব্যবহার করতে পারছেন। এছাড়াও ব্যবহারকারীরা থার্ড পার্টি ওয়েবসাইট থেকে পছন্দের অ্যাপের বিভিন্ন ভার্সন ডাউনলোড করতে পারেন। যেমন- যারা ট্রুকলার ব্যবহার করেন, তারা অন্যান্য মাধ্যমে এর প্রিমিয়াম ভার্সনও ব্যবহার করতে পারেন। যদিও সেগুলো ততটা নিরাপদ নয়।

নোটিফিকেশন ডিসপ্লে: ফোন খুলে বার বার নোটিফিকেশন দেখার বদলে অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ইন স্ক্রিন নোটিফিকেশন সুবিধা রয়েছে। তাই লাইট সেন্সরের সহায়তায় ব্যবহারকারীরা সহজেই নোটিফিকেশন দেখতে পারেন। এছাড়াও স্মার্ট ওয়াচ ব্যান্ডে বর্তমানে আরো দ্রুত নোটিফিকেশন দেখা যায়।

বিভিন্ন মডেল: স্মার্টফোন কেনার ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী স্মার্টফোন কিনতে পারেন। ডিসপ্লের আকার, র্যাম-রমের পরিমাণ, স্টোরেজ সুবিধা, ক্যামেরা পারফরম্যান্স, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, আইরিশ স্ক্যানারসহ (আই স্ক্যানার) বিভিন্ন সুবিধার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে হ্যান্ডসেট কেনা যায়। এক্ষেত্রে দামের বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া যায়।

মাল্টিটাস্টিং উইজেট সুবিধা: বর্তমান সময়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনে মাল্টিটাসকিং সুবিধা প্রদান করা হয়। যার ফলে আপনি সহজেই একের অধিক অ্যাপস ব্যবহার করে আপনার নিত্যদিনের কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। এছাড়াও ফোনে বিল্ট ইন উইজেট ব্যবহারের সুবিধা থাকায় আপনি ফোনের স্ক্রিনে ঘড়ি, বুস্টার, ক্যালেন্ডারসহ যেকোনো পছন্দের অ্যাপের শর্টকাট উইজেট ব্যবহার করতে পারবেন।

বিশাল কমিউনিটি: অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী ডেভেলপারদের সমন্বয়ে বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে বিভিন্ন কমিউনিটি গ্রুপ খোলা হচ্ছে। যেখানে নির্ধারিত মডেলের হ্যান্ডসেট-সংক্রান্ত সব সমস্যার সমাধান মতামত দেয়া সম্ভব হয়। এতে করে সেট কেনার আগে ভালো করে যাচাই-বাছাই করা যায়।

অ্যান্ড্রয়েডের মন্দ দিক

সফটওয়্যার ডেভেলপে সমস্যা: অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন স্মার্টফোন নির্মাতাদের ফোন ব্যবহার করে থাকেন। যে কারণে প্রতিটি ফোনের জন্য অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন এবং অন্যান্য অ্যাপ ডেভেলপের ক্ষেত্রে ডেভেলপারদের কঠিন সময় পার করতে হয়। একেক মডেলের জন্য নতুন করে কোড লিখতে হয়, যা খুবই সময়সাপেক্ষ।

কমদামি ফোনের ধীরগতি: অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ফোনগুলো মূলত বাজারে বিভিন্ন দামে পাওয়া যায়। বিশেষ করে স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বস্তরের ব্যবহারকারীদের কথা মাথায় রেখেই বিভিন্ন রেঞ্জের ফোন বাজারজাত করেন। আর যেসব ফোনের ফিচার কম, সেগুলোতে যদি বেশি অ্যাপ ব্যবহার করা হয় কিংবা অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট দেয়া হয়, তাহলে সেগুলো খুবই ধীরগতিসম্পন্ন হয়ে যায়। যার ফলে ফোন তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যাওয়া বা আটকে যাওয়ার মতো সমস্যা বাড়তে থাকে।

বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন: ফ্রি অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীদের বিজ্ঞাপনের মুখোমুখি হতে হয়। যেটা খুবইও বিরক্তিকর। বিজ্ঞাপন থেকে মুক্তি পেতে চাইলে ব্যবহারকারীদের অ্যাপের প্রিমিয়াম ভার্সন কিনতে হয় অথবা বাধ্য হয়ে অ্যাপ আন-ইনস্টল করে দিতে হয়।

গুগল অ্যাকাউন্টের বাধ্যবাধকতা: আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহার করতে চান, তবে অবশ্যই আপনার জিমেইল বা গুগল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। অন্যথায় আপনি ফোনের অধিকাংশ ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন না। স্বাভাবিক ফোন, মেসেজিং চললেও কোনো অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন না।

এই বিভাগের আরও খবর

আরও পড়ুন