বাল্যবিবাহ একজন মেয়ের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অপুষ্ট ও প্রতিবন্ধী শিশুর জন্ম, অধিকারবঞ্চিত করাসহ নানা ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় বাল্যবিবাহের শিকার একজন মেয়েকে। অন্যদিকে একজন শিক্ষিত মা কখনই তার সন্তানকে বাল্যবিবাহ দেবেন না। সেজন্য নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি, বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করার বিকল্প নেই। এছাড়া বাল্যবিবাহ রোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিশেষ করে উপজেলা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা, স্থানীয় প্রশাসনকে কঠোর হওয়া, ভুয়া জন্মনিবন্ধন বন্ধ করা, স্কুলগুলোর ভূমিকা রাখা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটিগুলোকে সক্রিয় করতে হবে।
গতকাল সকালে কোস্ট ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন প্রধান অতিথি ভোলা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন।
কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘শিশু বিয়ে প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ’ শীর্ষক এ ওয়েবিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন লালমোহন উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ গিয়াস উদ্দিন, তজুমুদ্দিন উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, তজুমুদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লব কুমার হাজরা, লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান, লালমোহনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেলুর রহমান, ইউনিসেফ বরিশাল বিভাগের ফিল্ড অফিস-প্রধান এএইচ তৌফিক আহমেদ প্রমুখ।
ভোলা জেলার চারটি উপজেলায় পরিচালিত গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক ইকবাল উদ্দিন। এছাড়া সভায় বক্তব্য রাখেন লর্ড হার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মিয়া, ফরাশগঞ্জের চেয়ারম্যান মো. মুরাদ হোসেন, লালমোহনের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল হাছান রিপন, রমাগঞ্জের চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম মোস্তফা, শম্ভুপুরের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান প্রমুখ।
দেশে বাল্যবিবাহের হার ৫১ দশমিক ৪ শতাংশ হলেও ভোলায় এ হার ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ, যা উদ্বেগজনক। কন্যাশিশুর নিরাপত্তার অভাব, অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতার অভাব, কন্যাসন্তানকে গুরুত্ব না দেয়া, শিশু সুরক্ষা হটলাইনের ব্যবহার না করা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সক্রিয় ভূমিকা না থাকা এ অঞ্চলে বাল্যবিবাহ অব্যাহত থাকার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে মহামারী কভিড-১৯-এর কারণে স্কুল থেকে ঝরে পড়া বাল্যবিবাহ বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়েছে। আর বাল্যবিবাহের কারণে নারী নির্যাতন বেড়েছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।