সর্ববৃহৎ ভোক্তা দেশ চীন বৈশ্বিক তামার ব্যবহার সীমিত করায় প্রভাব পড়েছে শিল্প ধাতুটির দামে। সম্প্রতি চীনের মূল্যস্ফীতির তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ হওয়ার পর তামার বাজারে এর প্রভাব নিয়ে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এরই মধ্যে তামার দাম কমে গেছে বিশ্ববাজারে। যদিও এক সপ্তাহ আগে ধাতুপণ্যটির দাম বেড়েছিল। তবে চলতি সপ্তাহে এসে ফের কমেছে তামার দাম। চীনের তামার ব্যবহার কিছুটা কমানোর পরিকল্পনায় সর্বশেষ এ দরপতন ঘটেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর রয়টার্স।
সর্বশেষ লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে (এলএমই) তামার দাম কমেছে ১ শতাংশ। আর টনপ্রতি পণ্যটির দাম কমে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯১৯ ডলারে। যদিও লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জে এক সপ্তাহ আগে চলতি মাসে প্রথম ১ দশমিক ৫ শতাংশ বাড়ে তামার দাম। তবে চীনে তামার ব্যবহার আগের তুলনায় কিছুটা সীমিত করার পরিকল্পনায় শুক্রবার সর্বশেষ কমেছে শিল্প ধাতুটির দাম।
করোনা মহামারীর স্থবিরতার রেশ কাটিয়ে সম্প্রতি চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে শিল্প-কারখানাগুলোতে গতি ফেরানোর চেষ্টা জোর প্রচেষ্টায় ছিল চীন। এ সময় বিশ্বের সর্ববৃহৎ এ ভোক্তা দেশের বিদ্যুৎ ও নির্মাণ খাতে তামার ব্যবহার অনেকটা বেড়ে যায়। ফলে প্রাণ ফেরে বৈশ্বিক তামার বাজারে। এতে টনপ্রতি তামার দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৬১৭ ডলারে। করোনার কারণে বৈশ্বিক স্থবিরতার আগে এটিই ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃদ্ধির হার।
নিউইয়র্কভিত্তিক উইজডম ট্রির বিশ্লেষক নিতেশ শাহর মতে, চীনের তামার ব্যবহার সীমিতকরণের সাম্প্রতিক এ উদ্যোগ খুবই স্বল্প সময়ের। তামানির্ভর অবকাঠামো নির্মাণ ও বিদ্যুতায়নের জন্য চীনের বিশাল পরিমাণ তামার চাহিদার কারণে সামনে দাম আরো বাড়বে। তবে কিছুটা আশঙ্কা করে নিতেশ বলেন, অনবরত তামার দাম বাড়ল শিল্পের জন্য তা চরম দুরবস্থা বয়ে আনবে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিনের যে ইতিহাস সেটা থেকে এ কথা বলা যায়, তামার দরবৃদ্ধির এ ঘটনায় চিন্তার কোনো কারণ নেই। আমি সন্দিহান যে খনির মালিকরা চাহিদার সমপরিমাণ তামা উৎপাদনের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবে কিনা?
এদিকে এলএমইতে তামার পাশাপাশি কমেছে অন্যান্য ধাতুর দামও। এর মধ্যে অ্যালুমিনিয়ামের দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমে টনপ্রতি ২ হাজার ২৫৭ ডলার ৫০ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। দশমিক ৭ শতাংশ কমে দস্তার দাম ২ হাজার ৮৩৪ ডলার ৫০ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া কমেছে নিকেল, সিসা ও টিনের দামও।