বাংলার
আটটি
বৃহৎ
নদীবন্দরের
অন্যতম
ছিল
চিলমারী
বন্দর।
এ
চিলমারী
বন্দরসংলগ্ন
ব্রহ্মপুত্র
নদ
দিয়ে
ব্রিটিশ
আমলে
বড়
বড়
জাহাজ
চলাচল
করত,
পণ্যবোঝাই
জাহাজ
নোঙর
করত।
ভারতের
কোচবিহার,
আসাম,
মেঘালয়
এবং
চীন
ও
মিয়ানমার
থেকে
আসত
এসব
পণ্যবাহী
জাহাজ।
আসাম
ও
কলকাতা
রুটের
মাঝে
দাঁড়িয়ে
এ
চিলমারী
বন্দর।
একসময়
পাটের
জন্য
বিখ্যাত
ছিল
চিলমারী
বন্দর।
পাট
কেনাবেচা,
প্রসেসিং,
দেশী-বিদেশী
জাহাজের
আসা-যাওয়া,
দেশের
নানা
অঞ্চল
থেকে
আসা
ব্যবসায়ী
ও
পাইকারদের
আনাগোনায়
মুখরিত
ছিল
এ
বন্দর
রাতদিন।
চিলমারী
বন্দরে
পাটের
কারবার
শুরু
হয়
তিরিশের
দশকে।
ব্রহ্মপুত্রের
কোলঘেঁষে
কয়েক
কিলোমিটারব্যাপী
ছিল
বন্দরের
অবস্থান।
প্রশাসনিক
ভবন,
কাস্টমস
অফিস,
পাটের
গোডাউন।
জুট
ট্রেডিং
কোম্পানিসহ
প্রায়
৩০টি
পাটকল
ও
কোম্পানি
এখানে
কারবার
জুড়ে
বসে।
স্থাপন
করে
বিশাল
বিশাল
পাট
গুদাম।
পাট
প্রসেসিং
ও
বেল
তৈরির
মেশিন
স্থাপিত
হয়।
পাট
ক্রয়,
বাছাই
ও
বেল
তৈরির
কাজে
অনেক
শ্রমিক
এখানে
কাজ
করতেন
প্রতিদিন।
এর
বাইরে
শত
শত
বেপারি,
কৃষক,
ফরিয়াদের
আগমন
হতো
এখানে।
বিভিন্ন
এলাকা
থেকে
হাজার
হাজার
গরুর
গাড়ির
মাধ্যমে
দূরদূরান্ত
থেকে
পাট
এনে
নারায়ণগঞ্জ,
দৌলতপুর,
খুলনা,
চট্টগ্রামসহ
নানা
এলাকায়
সরবরাহ
করা
হতো।
বিদেশেও
রফতানি
করা
হতো
উন্নত
মানের
পাট।
সে
সময়ে
আসামের
সঙ্গে
ফেরি
সার্ভিস
চালু
ছিল।
বলা
চলে,
বিভিন্ন
এলাকার
সঙ্গে
নৌ
যোগাযোগ
ও
পরিবহনের
দিক
থেকে
গুরুত্বপূর্ণ
ছিল
চিলমারী।
বাংলাদেশের
স্বাধীনতা
যুদ্ধে
কুড়িগ্রাম
বা
চিলমারীর
উল্লেখযোগ্য
ভূমিকা
রয়েছে। ১৯৭১
সালের
২০
মে
পাকিস্তানি
সেনারা
এ
অঞ্চলের
৩০
জনকে
ব্রহ্মপুত্র
নদের
তীরে
হত্যা
করে।
ইতিহাস
বলে,
১১
অক্টোবর
১৯৭১
সালে
মুক্তিযোদ্ধারা
চিলমারী
বন্দরে
বীরত্বপূর্ণ
লড়াই
করেছিলেন
পাকিস্তানি
আর্মির
সঙ্গে।
৬০টি
ইঞ্জিনবিহীন
কাঠের
নৌকা
নিয়ে
ব্রহ্মপুত্র
পাড়ি
দিয়েছিলেন
মুক্তিযোদ্ধারা
১১
নং
সেক্টরের
অধিনায়ক
মেজর
আবু
তাহেরের
(পরবর্তী সময়ে
কর্নেল
ও
বীর
উত্তম)
নেতৃত্বে।
হয়েছিল
বিখ্যাত
‘চিলমারী রেইড’,
যা
দ্বিতীয়
বিশ্বযুদ্ধের
‘নরম্যান্ডি ল্যান্ডিং’-এর
কথা
মনে
করিয়ে
দেয়।
তারও
আগে
জেলেরা
পাকিস্তানি
আর্মির
নৌকা
ডুবিয়ে
দিয়েছেন।
চরে
আটকে
দিয়েছিলেন
মুক্তাঞ্চল
রৌমারীগামী
জাহাজ।
চিলমারী
আলোচিত
হয়ে
উঠেছিল
৩১
জুলাই
১৯৭৪
সালে
দৈনিক
ইত্তেফাকে
ছাপা
হওয়া
চিলমারীর
‘বাসন্তী- দুর্গাতির’
ছেঁড়া
শাড়ির
ওপর
মাছ
ধরার
জাল,
যা
রোদে
শুকানোর
জন্য
দেয়া
হয়েছিল,
তা
পরিয়ে
সাজানো
ছবির
জন্য
(চিলমারীর একযুগ’—মোনাজাত
উদ্দিন)।
সে
বাসন্তীর
ছবি
সাজানো
হলেও
দারিদ্র্য
সাজানো
ছিল
না।
চিলমারীর
বাসন্তীদের
আর্থসামাজিক
চিত্রের
আজও
খুব
বেশি
পরিবর্তন
হয়নি।
বাংলাদেশের
সব
জেলার
মধ্যে
কুড়িগ্রামে
দারিদ্র্যের
হার
সবচেয়ে
বেশি। বাংলাদেশ
পরিসংখ্যান
ব্যুরোর
খানা
আয়-ব্যয়
জরিপ-২০১৬
অনুযায়ী,
কুড়িগ্রাম
জেলার
৭০
দশমিক
৮
শতাংশ
লোক
দারিদ্র্যসীমার
নিচে
বাস
করে।
আর
চিলমারী
উপজেলায়
বাস
করে
৭৭
শতাংশ
দরিদ্র
মানুষ।
দেশে
দারিদ্র্যের
পরিমাণ
সবচেয়ে
কম
ঢাকার
পার্শ্ববর্তী
নারায়ণগঞ্জে—২
দশমিক
৬
শতাংশ।
সমীকরণটা
খুব
পরিষ্কার।
যেখানে
শিল্পায়ন
হয়েছে,
সেখানে
দারিদ্র্যের
হার
কম।
উত্তরবঙ্গের
জেলা,
উপজেলাগুলো
মঙ্গার
হাত
থেকে
রেহাই
পেলেও
দারিদ্র্যের
করাল
গ্রাস
থেকে
এখনো
রেহাই
পায়নি।
সারা
পৃথিবীতে
যেমন
মানুষের
আয়
ও
সম্পদের
বৈষম্য
বেড়েছে,
তেমনি
আঞ্চলিক
বৈষম্যও
বেড়েছে।
এ
দারিদ্র্যের
অন্যতম
একটি
কারণ
চিলমারী
উপজেলা
দেশের
অন্যতম
বন্যাপ্রবণ
এলাকা।
বাংলাদেশের
মধ্যে
সবচেয়ে
বেশি
বন্যাপ্রবণ
জেলা
কুড়িগ্রাম।
আবার
কুড়িগ্রাম
জেলার
মধ্যে
চর
এলাকা
ও
প্রচুর
পরিমাণে
গভীর
পলিমাটির
কারণে
বন্যায়
সবচেয়ে
বেশি
ক্ষতিগ্রস্ত
হয়
চিলমারী
উপজেলা।
১৯৬৭
সালের
দিকে
চিলমারী
বন্দর
এলাকায়
ব্রহ্মপুত্রের
ভাঙন
তীব্র
হয়ে
ওঠে।
১৯৭১-এর
মুক্তিযুদ্ধের
সময়ে
বিলীন
হয়ে
যায়
বন্দরটি।
বাংলাদেশ
স্বাধীন
হওয়ার
পর
বিলীন
হওয়া
বন্দরের
তিন
কিলোমিটার
দূরে
রমনা
বাজারে
সীমিত
আকারে
নতুন
বন্দরের
কাজ
চলে,
তবে
নদীর
নাব্যতা
কমে
যাওয়ায়,
অব্যবস্থাপনা
এবং
নৌপথের
উন্নয়ন
না
হওয়ার
কারণে
আগের
মতো
বড়
বড়
জাহাজ
এ
রুটে
আসতে
পারে
না।
তবে
এখানে
কুড়িগ্রাম
সীমান্ত
থেকে
ব্রহ্মপুত্র
নৌরুটে
ভারতের
পণ্যবাহী
জাহাজ
সীমিত
আকারে
আসাম
থেকে
কলকাতায়
যাতায়াত
করে।
কিন্তু
নাব্যতা
হ্রাস
পাওয়ায়
এ
রুটে
জাহাজ
আসার
সংখ্যা
কমে
গেছে।
ভারতের
জাহাজগুলো
মূলত
এ
পথে
আসামের
শীলঘাট
থেকে
চাঁদপুর-বরিশাল
হয়ে
কলকাতা
যায়।
এছাড়া
ভারত
বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ
থেকে
সিমেন্ট
আমদানি
করে
এ
রুট
দিয়ে।
তাদের
এ
পথ
প্রায়
এক
হাজার
কিলোমিটার।
চিলমারীতে
রাজস্ব
আদায়ের
জন্য
জাতীয়
রাজস্ব
বোর্ডের
একটি
শুল্ক
স্টেশন
রয়েছে।
বর্তমানে
মাসে
একটির
বেশি
জাহাজ
আসে
না।
জাহাজের
সংখ্যা
একেবারে
কমে
যাওয়ায
বন্দরের
কোনো
কর্মমুখরতা
নেই।
চিলমারীর
রমনা,
ফকিরের
হাট
ও
জোড়াগাছ
ঘাট
থেকে
প্রতিদিন
বাহাদুরবাদ,
নারায়ণগঞ্জ,
চট্টগ্রাম,
বাঘাবাড়ী,
ফুলছড়ি,
রৌমারী
ও
রাজিবপুরে
নৌকা
চলাচল
করে।
বর্তমানে
চিলমারী
নদীবন্দরের
রমনা
ঘাট
এলাকায়
কংক্রিট
বাঁধ
দেয়া
হয়েছে।
২০০৯
সালে
চিলমারী
বন্দরের
উজান
ও
ভাটিতে
৮০
কিলোমিটার
নৌরুটে
নাব্যতা
বৃদ্ধির
লক্ষ্যে
বিআইডব্লিউটিএ
সমীক্ষা
চালালেও
পরবর্তী
সময়ে
এ
বিষয়ে
কোনো
অগ্রগতি
হয়নি।
চিলমারীর
অতীত
বিবেচনা
করে
২০১৬
সালের
৭
সেপ্টেম্বর
প্রধানমন্ত্রী
শেখ
হাসিনা
চিলমারী
উপজেলার
অর্থনৈতিক
উন্নয়নে
চিলমারী
নৌবন্দরের
হারানো
ঐতিহ্য
ফিরিয়ে
আনার
প্রতিশ্রুতি
দেন।
পায়রা
সমুদ্রবন্দর
থেকে
চিলমারী
নৌবন্দরের
নৌ-যোগাযোগেরও
কথা
বলেন।
এর
পরে
২০১৬
সালের
২৩
সেপ্টেম্বর
চিলমারীর
রমনা
ঘাট
নামক
স্থানে
একটি
পল্টুন
স্থাপন
করে
চিলমারী
নদীবন্দরের
উদ্বোধন
করেন
তত্কালীন
নৌমন্ত্রী
শাজাহান
খান।
কিন্তু
গত
পাঁচ
বছরেও
নৌবন্দরের
কাজের
খুব
বেশি
অগ্রগতি
নেই।
বন্দরটি
চালু
রাখার
একটি
বড়
চ্যালেঞ্জ
হলো
প্রয়োজনীয়
ড্রেজিংয়ের
ব্যবস্থা
করা।
বর্তমানে
বড়
ভ্যাসেলগুলো
চলাচলের
জন্য
বিআইডব্লিউটিএ
অল্প
পরিমাণ
ড্রেজিং
করছে।
কিন্তু
পণ্যবাহী
বড়
জাহাজ
চলাচলের
জন্য
গভীর
ও
প্রশস্ত
করে
ড্রেজিং
করা
প্রয়োজন। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা
নদীর
অববাহিকায়
বন্যা
হলে
বাংলাদেশের
এক-তৃতীয়াংশ
এবং
নেপাল
ও
ভারতের
অনেক
এলাকা
ও
প্রায়
৪১
মিলিয়ন
মানুষ
ক্ষতিগ্রস্ত
হয়।
চিলমারীও
এতে
আক্রান্ত
হয়।
এ
বন্যা
ও
নদীভাঙন
রোধের
ব্যবস্থা
নেই।
১৯৭২
সালে
বাংলাদেশ
ও
ভারতের
মধ্যে
অভ্যন্তরীণ
নৌ-পরিবহন
ও
বাণিজ্য
প্রটোকল
(পিআইডব্লিউটিটি) স্বাক্ষরিত
হয়
এবং
এ
পর্যন্ত এতে
দুটি
সংযোজন
ঘটেছে।
প্রথম
সংযোজন
২০১৫
সালের
৬
জুন বাংলাদেশ
ও
ভারত
পিআইডব্লিউটিটি
নবায়ন
করেছে,
যেখানে
আটটি
চিহ্নিত
রুটের
মধ্যে
চিলমারীকে
বাংলাদেশের
পোর্ট
অব
এক্সিট
(রুটস ১
ও
৭)
ও
এন্ট্রি
(রুটস ২
ও
৪)
এবং
কার্গো
জাহাজের
বাঙ্কারিং
পয়েন্ট
হিসেবে
ঘোষণা
করা
হয়েছে।
২০২০
সালের
২০
মে
পিআইডব্লিউটিটির
দ্বিতীয়
সংযোজনে
বাংলাদেশের
আগের
ছয়টি
পোর্ট
অব
কলের
সঙ্গে
নতুন
করে
পাঁচটি
পোর্ট
অব
কল
সংযোজন
করা
হয়েছে।
এগুলো
হলো
রাজশাহী,
সুলতানগঞ্জ,
চিলমারী,
দাউদকান্দি
ও
বাহাদুরবাদ।
নতুন
পোর্ট
অব
কলে
ভারতের
যোগীগাপা
ও
বাংলাদেশের
বাহাদুরবাদের
সংযোজন
মেঘালয়,
আসাম
ও
ভুটানের
মধ্যে
সংযোগ
সাধন
করবে।
নতুন
পোর্ট
অব
কলগুলোয়
ইন্দো-বাংলাদেশ
প্রটোকল
রুটে
পরিবাহিত
কার্গো
লোডিং-আনলোডিং
সম্ভব
হবে
এবং
নতুন
গন্তব্য
ও
প্রত্যন্ত
অঞ্চলের
অর্থনৈতিক
উন্নয়নে
গতিবেগ
সঞ্চার
করবে।
চিলমারী
নদীবন্দর
ঐতিহ্যের
ধারক,
উন্নয়নের
আকাঙ্ক্ষা,
আন্তঃসীমানা
সহযোগিতার
অংশ।
যদি
চিলমারী
বন্দরের
উন্নয়নে স্থানীয়ভাবে
নির্মাণকাজ
হলে
অনেক
লোকের
কর্মসংস্থান
হবে।
চিলমারী
বন্দরের
উন্নয়ন
হলে
প্রত্যাশা
করা
যায়,
এটি
একটি
বাণিজ্যিক
কেন্দ্র
হবে।
এতে
স্থানীয়
জনগণের
ব্যবসার
সুযোগ
সৃষ্টি
হবে।
এছাড়া
রাস্তাঘাট,
পরিবহন,
গৃহায়ণ
ও
নানা
রকম
সুযোগ-সুবিধার
সৃষ্টি
হবে।
সরকার
এ
বন্দর
থেকে
নানা
ধরনের
রাজস্ব
অর্জন
করতে
পারবে।
এতে
স্থানীয়
পণ্য
পাট,
সিমেন্ট
ও
সার,
যার
চাহিদা
ভারতে
রয়েছে,
সেসব
পণ্য
রফতানি
করতে
সাহায্য
করবে।
এটি
পটুয়াখালীর
পায়রা
সমুদ্রবন্দরের
সঙ্গে
সংযোগে
সহায়তা
করবে।
ব্রহ্মপুত্র
আন্তঃমহাদেশীয়
নদী
হওয়ায়
চিলমারী
নদীবন্দরকে
কেন্দ্রে
রেখে ভারত,
ভুটান,
নেপাল
ও
চীনের
মধ্যে
একটি
সংযোগ
বন্ধন
ও
সুলভ
বাণিজ্য
সম্পর্ক
সৃষ্টি
করবে।
এটি
দেশের
নিজস্ব
উন্নয়ন
আকাঙ্ক্ষার
সঙ্গে
দ্বিপাক্ষিক
ও
আঞ্চলিক
সহযোগিতার
সম্পর্ক
সৃষ্টি
করবে।
চিলমারী
বন্দর
উন্নয়নে
বিনিয়োগ
যেমন
বাংলাদেশের
উন্নয়ন
আকাঙ্ক্ষা
প্রকাশ
করে,
তেমনি
এর
আন্তঃসীমান্ত
সহযোগিতা
বৃদ্ধির
আকাঙ্ক্ষার
কথাও
প্রকাশ
করে।
চিলমারী
নদীবন্দরের
সম্ভাবনার
মধ্যে
এখানকার
নদী
ড্রেজিংসহ
বাঁধ
নির্মাণ
প্রকল্প
চলমান
রয়েছে।
নদীভাঙন
এলাকায়
১
হাজার
৩৭৬
কোটি
টাকার
তিনটি
প্রকল্প
চলমান
এবং
৭১৪
ও
৩৮৩
কোটি
টাকার
আরো
দুটি
প্রকল্প
রয়েছে।
নদী
ড্রেজিং
প্রকল্প
বাস্তবায়ন
হলে
বন্যার
প্রকোপ
ও
নদীভাঙন
কিছুটা
কমবে।
চিলমারী-রৌমারী
রুটে
ফেরি
চলাচল
করবে।
তিস্তা
নদীতে
চীনের
প্রস্তাবিত
প্রকল্প
বাস্তবায়ন
হলে
বদলে
যাবে
এ
অঞ্চলের
অর্থনীতি।
এছাড়া
কুড়িগ্রাম,
গাইবান্ধা,
জামালপুর
ও
লালমনিরহাট
জেলায়
নিরবচ্ছিন্ন
তেল
সরবরাহ
নিশ্চিত
করতে
১৯৮৯
সালে
চিলমারীতে
পদ্মা,
মেঘনা
ও
যমুনার
তিনটি
ভাসমান
তেল
ডিপো
স্থাপন
করা
হয়।
তেল
ডিপো
স্থাপনের
পর
এ
অঞ্চলে
কৃষি
চাষাবাদসহ
ডিজেল
প্রাপ্তিতে
অভাবনীয়
সাফল্য
অর্জিত
হয়।
প্রতি
বছর
হিমালয়
থেকে
৭৫০
মিলিয়ন
টন
বালি
বাংলাদেশে
প্রবাহিত
হয়
ব্রহ্মপুত্র
নদ
দিয়ে।
এ
অঞ্চলে
রয়ে
যায়
২৫০
মিলিয়ন
টন।
ভূতত্ত্ব
জরিপ
অধিদপ্তর
ও
বাংলাদেশ
বিজ্ঞান-শিল্প
গবেষণা
পরিষদের
তথ্যমতে,
এ
বালির
প্রতি
টনে
রয়েছে
কাচ
তৈরির
উপাদান
কোয়ার্টজ
সিলিকা
ও
অন্যান্য
খনিজ
থাকে
৫৪
কেজি।
যদি
এ
খনিজ
সংগ্রহ
করা
যায়
তাহলে
সারা
দেশের
চাহিদা
মিটিয়ে
বিদেশে
রফতানি
করা
সম্ভব।
চিলমারী
নদীবন্দরকে
ঘিরে
হতে
পারে
শিল্পায়ন।
বর্তমান
সরকার
কুড়িগ্রামে
একটি
অর্থনৈতিক
অঞ্চল
নির্মাণের
কথা
বলেছে।
কুড়িগ্রামে
যদি
একটি
অর্থনৈতিক
অঞ্চল
নির্মাণ
করা
হয়,
তাহলে
স্থানীয়
অর্থনীতিতে
গতিসঞ্চার
হবে।
আর
এ
অর্থনৈতিক
অঞ্চলে
যদি
আসাম,
মেঘালয়সহ
ভারতের
উত্তর-
পূর্বাঞ্চলীয়
‘সেভেন সিস্টারস’খ্যাত
অঞ্চলে
রফতানির
জন্য
পণ্য
উৎপাদন
করা
যায়,
তাহলে
কুড়িগ্রামের
অর্থনীতির
আমূল
পরিবর্তন
আসবে।
শুধু
পণ্য
পরিবহন
নয়,
চিলমারী
বন্দর
যাত্রী,
পর্যটক,
মাইগ্রেন্ট
শ্রমিকের
যাতায়াতের
সম্ভাব্য
নৌরুট
হতে
পারে।
চিলমারী
বন্দর
হয়ে
ভারত,
ভুটান,
নেপাল
ও
চীনের
সঙ্গে
যুক্ত
হলে
এ
অঞ্চলের
ভৌগোলিক
ও
বাণিজ্যিক
গুরুত্ব
বৃদ্ধি
পাবে।
কানেক্টিভিটি
বা
যোগাযোগের
মাধ্যমে
উন্নয়ন
সম্ভব,
তা
বিশ্বে
এরই
মধ্যে
প্রমাণিত
হয়েছে।
সেজন্য
চিলমারী
বন্দরের
জন্য
সঠিক
পরিকল্পনা
এখনই
প্রয়োজন।
বিপুলসংখ্যক
নদ-নদী
থাকায়
এ
অঞ্চলে
পর্যটনের
সুযোগ
রয়েছে।
বিশেষ
করে
চিলমারীর
কথা
বলা
যায়,
সেখান
থেকে
ব্রহ্মপুত্রের
ওপারে
আসাম
অঞ্চলের
পাহাড়
দেখা
যায়,
তাই
এ
জায়গা
পর্যটকদের
জন্য
আকর্ষণীয়
হতে
পারে।
এখানে
নৌকা
ভ্রমণ
যেমন
আনন্দদায়ক,
তেমনি
নদীতীরে
দাঁড়িয়ে
চরাঞ্চল
দেখা,
মেঘালয়ের
পর্বতরাশি
এবং
ব্রহ্মপুত্র
নদের
জলরাশি
পর্যটকদের
আকৃষ্ট
করবে।
শীতকালে
এখানকার
অষ্টমীর
চর,
নয়ারহাট
ও
চিলমারী
ইউনিয়নে
ব্রহ্মপুত্রের
শাখা
নদগুলোর
এবং
তার
তীরজুড়ে
বিভিন্ন
প্রজাতির
পাখির
আগমন
এলাকাটিকে
আকর্ষণীয়
করে
তোলে।
ব্রহ্মপুত্র
ও
তিস্তার
সঙ্গমস্থল
চিলমারী,
হিন্দু
ধর্মাবলম্বীদের
জন্য
হাজার
হাজার
বছর
ধরে
পুণ্যস্থান
হিসেবে
বিবেচিত।
প্রতি
বছর
অষ্টমীর
পুণ্যস্নানে
দেশ-বিদেশের
লাখ
লাখ
পুণ্যার্থীর
সমাগম
হয়।
অষ্টম
পঞ্চবার্ষিক
পরিকল্পনায়
(জুলাই ২০২০
থেকে
জুন
২০২৫)
নদীবন্দর
উন্নয়ন
প্রসঙ্গে
বলা
হয়েছে,
‘Establish priority
routing based on potential passenger and freight traffic flows and develop
thosenavigability improvements and river port infrastructures.’
প্রেক্ষিত
পরিকল্পনা
(২০২১-২০৪১)-এ
অভ্যন্তরীণ
নৌ-পরিবহনের
উন্নয়ন
কৌশলে
বলা
হয়েছে,
‘বড় ও
ছোট
ছোট
নদীর
এক
আন্তঃসংযুক্ত
ব্যবস্থা
দ্বারা
বাংলাদেশের
৬৪টি
জেলার
প্রায়
সব
কয়টিই
একে
অন্যের
সঙ্গে
জড়িয়ে
রয়েছে।
বড়
বড়
নদী
দিয়ে
অনায়াসেই
সমুদ্রের
সঙ্গে
সংযোগ
স্থাপন
করা
যায়।
নৌপথে
সংযোগের
এই
ব্যাপক
বিস্তৃতি
যদি
সঠিকভাবে
ব্যবহার
ও
লালন
করা
যায়,
তবে
এটি
বাংলাদেশের
জন্য
ব্যাপক
উন্নয়ন
সম্ভাবনা
নিয়ে
আসবে।
নদী রক্ষার
জন্যই
স্বাধীনতার
পর
বঙ্গবন্ধু
নৌ-মন্ত্রণালয়
গঠন
করেছিলেন।
নদীমাতৃক
বাংলাদেশকে
বাঁচাতে
হলে
নদী
রক্ষা
করতে
হবে,
বঙ্গবন্ধু
সেটা
গভীরভাবে
উপলব্ধি
করেছিলেন।
বর্তমান
সরকার
নদী
নিয়ে
নানা
পরিকল্পনা
ও
পদক্ষেপ
নিয়েছে।
নদীদূষণ
ও
দখলমুক্ত
করতে
নদী
রক্ষা
কমিশন
গঠন
করা
হয়েছে,
টাস্কফোর্স
গঠন
করা
হয়েছে,
মাস্টার
প্ল্যান
প্রণয়ন
করা
হচ্ছে।
এ
সরকারের
‘নির্বাচনী ইশতেহার-২০১৮’-এ
নদী,
নদীবন্দর
ও
নদীপথকে
বিশেষ
গুরুত্ব
দেয়া
হয়েছে।
এতে
বলা
হয়েছে,
‘ব্যাপক খননের
পরিকল্পনা
হিসেবে
আগামী
মেয়াদে
প্রায়
১০
হাজার
কিলোমিটার
নৌপথ
খনন
করা
হবে।
আন্তর্জাতিক
সমুদ্রবন্দরের
সঙ্গে
অভ্যন্তরীণ
নৌপথগুলোর
সংযোগ
স্থাপন
করার
মাধ্যমে
আমদানি-রফতানি
সুগম
করা
হবে।
আন্তর্জাতিক
পর্যায়ে
বাণিজ্যকে
সহজতর
করার
লক্ষ্যে
ভারতের
সঙ্গে
নৌপথ
বাণিজ্য
আরো
বাড়িয়ে
একে
নেপাল-ভুটান
পর্যন্ত
সম্প্রসারিত
করা
হবে।’
একটি
নৌবন্দরের
ভালো
সক্ষমতার
জন্য
ইনল্যান্ড
কনটেইনার
নৌবন্দর,
নদী-তীরবর্তী
খুঁটি
স্থাপন,
নদীতীর
রক্ষা
বাঁধ,
প্রয়োজনীয়
অবকাঠামো,
যেমন
ডকইয়ার্ড,
জেটি,
আন্তর্জাতিক
যাত্রী
টার্মিনাল,
আধুনিক
ওয়্যারহাউজ,
ট্রান্সশিপমেন্ট
শেড,
ওয়েটব্রিজ
স্কেল
ইত্যাদি
প্রয়োজন।
চিলমারী
বন্দর
আন্তর্জাতিক
পোর্টে
রূপান্তর
করতে
গেলে
আন্তর্জাতিক
মানের
অবকাঠামো
প্রয়োজন।
প্রয়োজনীয়
পরিকল্পনা
ও
তার
সঠিক
বাস্তবায়নের
মাধ্যমে
চিলমারী
বন্দরকে
আন্তর্জাতিক
মানের
নদীবন্দর
করা
যেতে
পারে।
ভারতের
সঙ্গে
বাংলাদেশের
প্রটোকল
চুক্তি
আছে।
ভুটান,
নেপাল
ও
চীনের
সঙ্গে
এ
ধরনের
প্রটোকল
চুক্তি
করা
প্রয়োজন।
চিলমারী
বন্দরের
কার্যক্রম
শুরু
হওয়ার
খবরে
এ
এলাকার
মানুষ
আনন্দে
উদ্বেলিত
হয়েছিল।
প্রত্যাশা
করেছিল
এর
মধ্য
দিয়ে
বদলে
যাবে
এ
জনপদের
মানুষের
অর্থনৈতিক
অবস্থা।
বাড়বে
রাজস্ব
আয়।
সৃষ্টি
হবে
নতুন
নতুন
কর্মসংস্থানের।
থাকবে
না
দারিদ্র্য,
থাকবে
না
কষ্টের
দিন।
চিলমারী
নদীবন্দরটি
পায়রা
সমুদ্রবন্দর
থেকে
নৌপথে
ভারত,
ভুটান
ও
নেপালের
মধ্যে
আঞ্চলিক
যোগাযোগের
একমাত্র
নৌরুট।
ফলে
চিলমারী
নদীবন্দরের
উন্নয়ন
করা
সম্ভব
হলে
অভ্যন্তরীণ
ও
আন্তর্জাতিক
ব্যবসা-বাণিজ্যের
মাধ্যমে
এ
অঞ্চলের
উন্নয়নের
পাশাপাশি
জাতীয়
অর্থনীতি
সমৃদ্ধ
হবে।
চিলমারী
বন্দর
হোক
আন্তর্জাতিক
মানের
বন্দর,
এটা
সবার
প্রত্যাশা।
বর্তমানে আন্তঃসীমান্ত
সহযোগিতা
বৃদ্ধির
বিভিন্ন
আলোচনা
দেশের
নীতিনির্ধারক,
সুশীল
সমাজ
ও
একাডেমিক
গবেষকরা
করছেন।
কাজেই
এ
সময়ে
আন্তঃসীমান্ত
নদী
সহযোগিতার
বিষয়
হিসেবে
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা
নদীর
অববাহিকার
চিলমারী
বন্দরের
সংযোগের
বিষয়টি
নিয়ে
উচ্চকণ্ঠ
ও
পদক্ষেপ
নেয়া
প্রয়োজন।
ড. মো.
মোরশেদ হোসেন: অধ্যাপক,
অর্থনীতি
বিভাগ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর